কেন কলকাতার গা গরম হচ্ছে?
মূল গবেষক, খড়্গপুর আইআইটি-র ‘সেন্টার ফর ওশন্স, রিভার্স, অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ল্যান্ড সায়েন্সেস (কোরাল)’-এর অধ্যাপক অরুণ চক্রবর্তী ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে বলছেন, ‘‘দ্রুত, পরিকল্পনাবিহীন যথেচ্ছ নগরায়নের জন্যই নয়ের দশকের পর থেকে কলকাতার দিন ও রাতের গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। আশপাশের গ্রামীণ বা মফস্সল এলাকগুলির চেয়ে কলকাতার গা বেশি পুড়ছে তাপে। কারণ, নগরায়নের জন্য কলকাতার মতো শহরগুলিতেই গাছ কাটা হচ্ছে বেশি। বহুতল বা কমপ্লেক্স অথবা মেগাসিটি প্রজেক্টের জন্য দেদার জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নির্গমনের পরিমাণ বাড়ছে।’’
নগরায়ন তো স্বাভাবিক, সমস্যা কোথায়?
যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে আর রুটি-রুজির কেন্দ্রগুলি উত্তরোত্তর বিকেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে মূল শহর বা নিত্যনতুন গজিয়ে ওঠা ‘মেগাসিটি’গুলির অভিমুখী হয়ে পড়ছে, তাতে সারা দেশে আরও আরও বেশি পরিমাণে যে নগরায়ন হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হচ্ছেও।
আরও পড়ুন- লাগবে না বডি স্ক্যানার, চালের দানার মতো রাডার বানালেন বঙ্গসন্তান
আরও পড়ুন- সকালে গাছের ঘুম ভাঙে কখন কী ভাবে, এই প্রথম দেখল নাসার ‘ইকোস্ট্রেস’
‘‘কিন্তু সেটা যথেচ্ছ ভাবে হচ্ছে, কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই হচ্ছে বলে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে’’, বললেন অরুণ।
জানালেন, অল্প একটু জায়গার উপর যেখানে তিন কি চার তলা বাড়ি হলেই যথেষ্ট, সেখানে গড়ে উঠছে ৮ বা ১০ তলার একের পর এক কমপ্লেক্স। বাড়তি মুনাফার লোভে। মেগাসিটি বা উপনগরীগুলিতে মাথার উপর ঠাঁই জোগাড় করতে হাঁফিয়ে ওঠা মানুষ সেই ফাঁদেই পা দিচ্ছেন।
দিন, রাতের তাপমাত্রার ফারাক বাড়ছে কেন?
গবেষকরা জানাচ্ছেন, তার কারণ, ইট, কাঠ, কংক্রিটের ‘জঙ্গল’ বেড়ে চলছে অসম্ভব দ্রুত হারে। সাধারণত, দিনের তাপ শুষে নেয় বাড়ির ইট, কংক্রিটের দেওয়াল। তার পর রাতে সেই শুষে নেওয়া তাপই দেওয়ালগুলি ছেড়ে দেয় পরিবেশে। তার ফলে, দিনে ইট, কংক্রিটের বাড়ি যেমন তেতে ওঠে, তেমনই রাতে তা ঠান্ডা হয়ে আসে ধীরে ধীরে।