প্রতীকী ছবি।
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনার, যখনই যা কিছু খাচ্ছি আমরা, সঙ্গে কিছু না কিছু প্লাস্টিকও খাচ্ছি! খাচ্ছি, কিন্তু জানতে পারছি না! প্রত্যেক বার খাওয়ার সময় অন্তত ১০০টি করে প্লাস্টিক ঢুকে পড়ছে আমাদের শরীরে, রক্তনালীতে। খাওয়ার সময় প্রতি বার, প্রতি মুহূর্তে শরীরে ঢুকছে বিষ!
যতই ধুয়ে-মুছে সাফ করি না কেন, যেখান থেকে তুলে খাবার খাচ্ছি, সেই প্লেট, ডিশ বা থালা, বাটিতে যৎকিঞ্চিত হলেও থেকে যায় ধুলোবালি। বায়ুমণ্ডলকে তো আর এড়ানো যায় না পৃথিবীতে। তা সে পর্বতশৃঙ্গেই হোক বা সমুদ্রে। বায়ু থাকলেই ধুলোবালি থাকবে।
আর সেই প্লেট, ডিশ বা থালা, বাটিতে থাকা ধুলোবালিতে সব সময়েই মিশে থাকে প্লাস্টিক। আমরা দেখতেও পাই না, সেগুলি প্লাস্টিকের তন্তু বা ফাইবার বলে। আমাদের মাথার চুলের চেয়েও অনেক বেশি সরু ও সূক্ষ্ণ। তাই তা চোখে ধরাই দেয় না।
না দিলে কি হবে, যেহেতু প্লাস্টিকের সেই তন্তুগুলি সব সময়েই লেপ্টে থাকে খাবারদাবারের গায়ে, প্লেটে, ডিশে, থালা, বাটিতে, তাই খাওয়ার সময় আমাদের অজান্তে, অজ্ঞাতে সেগুলি প্রতি মুহূর্তেই চলে যাচ্ছে শরীরে। ঢুকে পড়ছে রক্তনালীতে। আর রক্তপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়ছে যকৃৎ, পাকস্থলী, অগ্নাশয় ও অন্ত্রের অন্তরে-অন্দরে, নানা প্রান্তে।
ব্রিটেনের হ্যারিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের হালের গবেষণা এই চমকে দেওয়া খবরটি দিয়েছে। গবেষকদলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল টক্সিকোলজির অধ্যাপক টেড হেনরি।
আরও পড়ুন- প্লাস্টিক বন্ধে পেশ হবে নতুন বিল
আরও পড়ুন- প্রচার সার, পিকনিক শেষে ছড়িয়ে প্লাস্টিক
গবেষকরা দেখেছেন, যে খাওয়ার মোটামুটি ২০ মিনিটের মধ্যে খেয়ে ফেলা যায়, সেই খাবারের ডিশে থাকা ধুলোবালিতে সর্বাধিক ১৪টি করে প্লাস্টিকের তন্তু থাকে। একটা ডিনারের প্লেটে থাকে গড়ে ১১৪টি প্লাস্টিক তন্তু।
গবেষকরা হিসাব কষে দেখেছেন, সারা বছরে এক জন মানুষ খাওয়ার সময় গড়ে সর্বাধিক ৬৮ হাজার ৪১৫টি প্লাস্টিক তন্তু খেয়ে ফেলে। সেটা খুব কম হলেও ১৩ হাজার ৭৩১টি প্লাস্টিক তন্তুর চেয়ে কম হয় না।
শরীরে ঢোকার পর সেই প্লাস্টিক তন্তুগুলিকে আমাদের মাংসপেশিতেও ভিড় জমাতে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রত্যেকটি মাংসপেশিতে গড়ে দু’টির চেয়ে কিছু কম প্লাস্টিক তন্তুর হদিশ পেয়েছেন গবেষকরা।
এই গবেষণা আমাদের আরও একটা ভুল ধারণা ভেঙে দিয়েছে।
এত দিন জানা ছিল, সমুদ্র ও তার লাগোয়া এলাকার বায়ুমণ্ডলেই প্লাস্টিক তন্তু বেশি পরিমাণে থাকে। অন্তত আমাদের ঘর-গেরস্থালীর পরিবেশের চেয়ে তো বেশি পরিমাণে বটেই। কিন্তু মূল গবেষক টেড হেনরি বলেছেন, ‘‘আমরা উল্টোটা দেখেছি। দেখেছি, ঘরের খাবারদাবারের সঙ্গে মিশে থাকা ধুলোবালিতেই ওই প্লাস্টিক তন্তুগুলি থাকে বেশি পরিমাণে। তবে কেন ঘরে ওই তন্তুগুলি পরিমাণে বেশি মেলে, তার কারণ জানতে পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy