পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহৃত হবে যে মহাকাশযানে, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে নাসার গবেষণাগারে। ছবি- নাসা
আর বিষ ঢালা হবে না মহাকাশে! এ বার পরিবেশবান্ধব জ্বালানি (গ্রিন ফুয়েল) ব্যবহার করা হবে রকেটে। বিভিন্ন উপগ্রহকে পৃথিবীর কক্ষপথে আর মহাকাশযানকে যে কোনও গন্তব্যে পাঠানোর জন্য। নাসা সেই জ্বালানি আবিষ্কার করেছে। যা একেবারেই নির্বিষ। রং গোলাপি। সেই জ্বালানিতে চলার জন্য রকেটের প্রোপালসান ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজা হয়েছে।
নতুন জ্বালানি আর রকেটের আধুনিক প্রোপালসান ব্যবস্থা ঠিক ভাবে কাজ করছে কি না, তা পরখ করতে স্পেসএক্সের ফ্যালকন হেভি রকেটের পিঠে চাপিয়ে এই জুনেই একটি মহাকাশযানকে পাঠানো হবে মহাকাশে। নাসার সেই অভিযানের নাম- ‘গ্রিন প্রোপেল্যান্ট ইনফিউশন মিশন (জিপিআইএম)’।
পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরি (জেপিএল)-র তরফে জানানো হয়েছে, নতুন ওই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি বানানো হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায় এডওয়ার্ডস এয়ারফোর্স বেসে এয়ারফোর্স রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে (এএফআরএল)। ওই পরিবেশবান্ধব জ্বালানিটি আদতে বিশেষ একটি রাসায়নিক যৌগ। যার নাম- হাইড্রক্সিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। কিন্তু মহাকাশে তো আর অক্সিজেন নেই। আমরা জানি, কোনও পদার্থকে পুড়তে সাহায্য করে কোনও অক্সিডাইজার বা জারক পদার্থ। তাই ওই পরিবেশবান্ধব জ্বালানিকে পুড়তে সাহায্য করবে একটি অক্সিডাইজার বা জারক পদার্থ। যা অক্সিজেন জুগিয়ে কোনও পদার্থকে পুড়তে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন- ৪০ বছর ধরে মহাকাশে হাঁটছে এই দুই পথিক
আরও পড়ুন- মহাকাশে সূর্যমুখী ফুল ছড়াবে নাসা, ঢাকা হবে তারাদের মুখ
এখন মহাকাশযান, উপগ্রহ কক্ষপথ ও মহাকাশে পাঠানোর জন্য রকেটে ব্যবহার করা হয় যে বিশেষ রাসায়নিক যৌগ, তার নাম- হাইড্রাজিন। তরল জ্বালানি। কিন্তু হাইড্রাজিন পোড়ার ফলে মহাকাশে বিষ জমা হয় প্রচুর পরিমাণে। তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়লে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনটাই। শুধু তাই নয়, ওই জ্বালানি তৈরি করা, সংরক্ষণ করা ও তা রকেটে ভরার সময়েও খুব সতর্ক থাকতে হয়। বিশেষ ধরনের পোশাক পরতে হয়। খুব পুরু রবারের গ্লাভস পরতে হয়। কাছাকাছি অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক রাখতে হয়। কিন্তু নাসার সদ্য আবিষ্কৃত পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে সেই সবের দরকার হবে না। কলোরাডোর বল অ্যারোস্পেস অব বোল্ডারের জিপিআইএম মিশনের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ক্রিস্টোপার ম্যাকলিন বলেছেন, ‘‘নতুন পরিবেশবান্ধব জ্বালানি তৈরি, তার সংরক্ষণ ও রকেটে তা ভরার খরচও হবে তুলনায় অনেকটাই কম।’’
শুধু তাই নয়, নতুন জ্বালানি হাইড্রাজিনের চেয়ে বেশি ঘন। তার কার্যক্ষমতা হাইড্রাজিনের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। যার অর্থ, এক গ্যালন হাইড্রাজিনে যত মাইল ছোটে রকেট, নতুন জ্বালানিতে সেই দূরত্বটা হবে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy