Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Omicron

Omicron: ওমিক্রনকে চিনে কাবু করতে পারে, এমন চার ধরনের অ্যান্টিবডির প্রথম হদিশ মিলল

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে নেচার-এ। এই অ্যান্টিবডিগুলি ওমিক্রনকেও কোষে বসতে দেয় না। স্পাইক প্রোটিনের অংশগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

গবেষকরা হদিশ পেলেন চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডির যারা ওমিক্রনকে দ্রুত চিনে ফেলে তাদের শায়েস্তা করতে পারে। -ফাইল ছবি।

গবেষকরা হদিশ পেলেন চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডির যারা ওমিক্রনকে দ্রুত চিনে ফেলে তাদের শায়েস্তা করতে পারে। -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:৪৩
Share: Save:

ওমিক্রনকে জব্দ করার অ্যান্টিবডিগুলির এই প্রথম হদিশ মিলল মানবদেহে।

এও বোঝা গেল, শুধু ওমিক্রনই নয়; এর পরেও যদি নতুন নতুন রূপ বেরিয়ে আসে করোনাভাইরাসের বা ওই ভাইরাসের জ্ঞাতি-গোষ্ঠীগুলির, তবে তাদেরও জব্দ করা যাবে নতুন টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার করে। হাতে তেমন কোনও জুতসই অস্ত্র নেই বলে সংক্রমণে আরও শক্তিশালী ভাইরাসের নতুন রূপগুলি নিয়ে আর দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনতে হবে না মানুষকে।

গবেষকরা এই প্রথম হদিশ পেলেন মানবদেহে গড়ে ওঠা কম করে চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডির, যারা ওমিক্রনকে দ্রুত চিনে ফেলে তাদের শায়েস্তা করতে পারে। মানবদেহে ঢুকে কোনও কোষের বাইরের স্তরে ভাইরাসের নোঙর ফেলা রুখে দিতে পারে এই চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডি। যাঁরা আগে করোনাভাইরাসের অন্যান্য রূপে সংক্রমিত হয়েছেন, সংক্রমিত হওয়ার পর টিকা নিয়ে ফের সংক্রমিত হয়েছেন বা সংক্রমিত না হয়েও সব ক’টি পর্বের কোভিড টিকাই নিয়েছেন, তাঁদের সকলের দেহেই এই চারটি শ্রেণির অ্যান্টিব়ডির হদিশ পেলেন বিজ্ঞানীরা।

নজরকাড়া গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’-এ। গবেষণাটি যৌথ ভাবে চালিয়েছে আমেরিকার সিয়াট্‌লের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিন, ওষুধ সংস্থা ‘হিউম্যাব্‌স বায়োমেড’ ও সুইৎজারল্যান্ডের ‘ভির বায়োটেকনোলজি’।

করোনাভাইরাস শরীরে ঢোকার পর মানব দেহকোষের একেবারে বাইরের স্তরে নোঙর ফেলে তাদের দেহের একেবারে বাইরে থাকা শুঁড়ের মতো স্পাইক প্রোটিন দিয়ে। তাদের নোঙর ফেলতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় মানবকোষের বাইরের স্তরে থাকা বিশেষ এক ধরনের প্রোটিন। ‘এসিই-২ রিসেপ্টর প্রোটিন’।

গবেষকরা এই প্রথম দেখলেন, সেই স্পাইক প্রোটিনের বিশেষ কয়েকটি জায়গা রয়েছে যেগুলি একেবারেই বদলায় না, তা সে ভাইরাসের যতই মিউটেশন হোক না কেন। মানবদেহে প্রথম হদিশ মেলা চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডি ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের সেই বিশেষ জায়গাগুলিকে অতিমারির পর গত দু’বছরে ভাল ভাবে চিনে ফেলেছে। তাই স্পাইক প্রোটিনের সেই বিশেষ জায়গাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে খুব দক্ষতার সঙ্গে। এই বিশেষ জায়গাগুলির মিউটেশন হলে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। তখন মানব বা অন্যান্য প্রাণীর দেহকোষে নোঙর ফেলার শক্তিও হারিয়ে ফেলবে বলে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের ওই বিশেষ অংশগুলির কোনও মিউটেশন হয় না।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এতেই সুবিধা হয়ে যায় মানবদেহে প্রথম হদিশ মেলা ওই চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডির। তারা স্পাইক প্রোটিনের ওই বিশেষ জায়গাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে ভাইরাসকে মানব দেহকোষের বাইরের স্তরে নোঙর ফেলতেই দেয় না।

ফলে, মানব দেহকোষে ঢুকে খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে কোষপ্রাচীর ফাটিয়ে অন্য কোষে ঢুকে সংক্রমণেরও আর সুযোগ থাকে না ভাইরাসের।

গবেষকদের লক্ষ্য, এই অ্যান্টিবডিগুলির সংখ্যা দ্রুত আরও বাড়িয়ে তাদের আরও সক্রিয় আরও শক্তিশালী করে তোলা। সেই লক্ষ্য পূরণেই এ বার আবিষ্কার হতে পারে নতুন টিকা বা ওষুধের। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE