গত ২৩ অগস্ট, বুধবার চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। —ফাইল চিত্র।
দায়িত্ব শেষ। এ বার কি তা হলে চাঁদেই ঘুমনোর পালা! ১১ দিনে চাঁদে নতুন ‘মাইলফলক’ ছুঁয়ে ফেলেছে ইসরোর রোভার প্রজ্ঞান। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চলছিল সে। পার করে ফেলেছিল ১০০ মিটার দূরত্ব। তবে, কাজ শেষে ‘ঘরে’ ফেরা হবে না তার এ কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ইসরো।
চাঁদে ১৪ দিনের জীবনকাল দিয়েই ইসরো পাঠিয়েছিল বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে। তাদের মধ্যে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি আছে, যেগুলির সাহায্যে চাঁদের মাটিতে তারা এ ক’দিন পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছে, সংগ্রহ করেছে বহু তথ্য। সেই সব যন্ত্র চলে সৌরশক্তিতে। ফলে চাঁদে যত ক্ষণ সূর্যের আলো থাকবে তত ক্ষণই প্রাণ থাকবে তাদের। ১৪ দিন পর চাঁদে সূর্যাস্ত হলে (চাঁদে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত হতে সময় লাগে পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন) ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়বে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান। নিস্তেজ হয়ে পড়বে তাদের ভিতরে থাকা সমস্ত যন্ত্রপাতিও।
গত ২৩ অগস্ট, বুধবার ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। তার এক দিন পরে ২৪ অগস্ট, বৃহস্পতিবার সকালে রোভারের অবতরণের কথা টুইটে জানায় ইসরো।
১১ দিন ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠে ১০০ মিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করেছে ছ’চাকা বিশিষ্ট এই যান। চাঁদে সূর্যাস্তের সঙ্গে প্রজ্ঞানও নিস্তেজ হয়ে পড়বে। এরই মাঝে তার থেকে সমস্ত তথ্য বিক্রম ল্যান্ডারের মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে ইসরো। ইসরোর তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে সৌর প্যানেলটি ২২ সেপ্টেম্বর প্রত্যাশিত চাঁদের পরবর্তী সূর্যোদয়ের সময় আলো পাবে। যদিও বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে একটি চান্দ্রদিনের জীবনকালের মতোই তৈরি করা হয়েছিল তবে তারা পরবর্তী সূর্যোদয়ের সময় জেগে উঠতে পারে বলে আশাবাদী ইসরো। অন্যথা, এটি চিরকাল ভারতের চন্দ্র দূত হিসাবে সেখানে থেকে যাবে।
শনিবার দুপুরে ইসরো টুইটে জানিয়েছে, চাঁদে ১০০ মিটারের বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। রোভারের বর্তমান অবস্থাও দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শিবশক্তি পয়েন্ট থেকে কিছুটা সোজা এগিয়ে ডান দিকে বেঁকে যায় প্রজ্ঞান। তার পর বেশ কিছুটা পথ অতিক্রম করে আবার রোভারটিকে ডান দিকে ঘোরানো হয়। এর পর কিছুটা এঁকেবেঁকে সোজা এগিয়ে যায় ছ’চাকার যন্ত্রটি। তিরচিহ্নের মাধ্যমে রোভারের গতিবিধি বুঝিয়েছে ইসরো।
শনিবার ইসরো তার সূর্য মিশন চালু করার পরে,ইসরো প্রধান এস সোমনাথ বলেন, “বিক্রম এবং প্রজ্ঞান উভয়কে ঘুমতে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি শীঘ্রই শুরু হবে। তারা সূর্য ছাড়া রাতে কার্যকর থাকবে না। চাঁদে রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২০০ ডিগ্রীর নীচে নেমে আসে। প্রজ্ঞান এবং বিক্রমের জন্য সেখানে টিকে থাকা কঠিন হয় উঠবে।”
ইসরো এর আগেও উল্লেখ করেছে, সৌরশক্তি চালিত বিক্রম এবং প্রজ্ঞান পরবর্তী সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যথায়, তারা চাঁদে থেকে যাবে আজীবন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy