Advertisement
E-Paper

একটা চালেরও অর্ধেক! মস্তিষ্কের সেই অংশেই রয়েছে আস্ত এক ‘ব্রহ্মাণ্ড’, বিস্মিত বিজ্ঞানীরা

এক কিউবিক মিলিমিটার মানে একটি চালের অর্ধেক প্রায়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের ওইটুকু অংশেই রয়েছে গোটা এক ‘ব্রহ্মাণ্ড’। ১০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১১:৪২
Science found what in 1 cubic mm of brain tissue

মস্তিষ্কের ক্ষুদ্র অংশের গঠন দেখে বিস্মিত গবেষকেরাও। ছবি: সংগৃহীত।

মস্তিষ্কের কোষে আসলে কী চলে? মানুষের মস্তিষ্কের ১ কিউবিক মিটার একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম। ১০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে এই তথ্য তাঁরা পেয়েছেন, আর তা জেনে বিস্মিত হয়েছেন।

মনে রাখতে হবে, এক কিউবিক মিলিমিটার মানে একটি চালের অর্ধেক প্রায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লিচম্যান ল্যাবের গবেষকেরা মৃগী রয়েছেন এমন এক ব্যক্তির মস্তিষ্কের টেম্পোরাল কর্টেক্সের অংশ সংগ্রহ করে। সেরিব্রাল কর্টেক্সের অংশ হল টেম্পোরাল কর্টেক্স। গবেষকেরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের ওইটুকু অংশেই রয়েছে গোটা এক ‘ব্রহ্মাণ্ড’। টেম্পোরাল কর্টেক্সের ওই এক কিউবিক মিলিমিটার অংশে রয়েছে কয়েক লক্ষ স্নায়ুসন্ধি (সাইন্যাপস), রক্তবাহ। গবেষকরা বলছেন, তাঁরা যতটা ভেবেছিলেন, তার থেকেও জটিল এবং সংগঠিত মস্তিষ্কের গঠন।

লিচম্যান ল্যাবের প্রধান গবেষক জেফ লিচম্যানও বিস্মিত হয়েছেন মস্তিষ্কের ওই ক্ষুদ্র অংশের গঠন দেখে। গত ২০ বছর ধরে এই নিয়েই কাজ করে চলেছেন তিনি। স্নায়ুকোষের যোগ নিয়েও নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন তিনি। দু’টি স্নায়ুকোষের মধ্যে যোগসূত্র একটি নয়, একাধিক হতে পারে। আগে এই বিষয়টি অজানা ছিল গবেষকদের। বিষয়টিকে সহজ করে বোঝানোর জন্য জেফ জানিয়েছেন, স্নায়ুকোষকে বাড়ি ধরলে, দু’টি বাড়ির মধ্যে সংযোগের জন্য একটি ফোনলাইন থাকা উচিত। কিন্তু মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, দু’টি বাড়ির মধ্যে হয়তো ৫০টি ফোন লাইন রয়েছে। অর্থাৎ দু’টি স্নায়ুকোষের মধ্যে সংযোগের জন্য ৫০টি স্নায়ুসন্ধি রয়েছে।

কেন এমন হয়? গবেষকদের একাংশ মনে করেন, এই অতি শক্তিশালী সংযোগ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার সঙ্কেত (এনকোড) পাঠানোর জন্য বা অতি দ্রুত সাড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। অর্থাৎ যখন অতি দ্রুত সাড়া দেওয়ার বিষয় থাকে, তখনই এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে ৫০টি স্নায়ুসন্ধির মাধ্যমে সঙ্কেত পাঠানো হয়ে থাকে।

বিজ্ঞানীরা টেম্পোরাল কর্টেক্সের অংশ পরীক্ষা করে এ-ও দেখেছেন যে, প্রত্যেক নিউরোন বা স্নায়ুকোষের দু’টি করে গ্লিয়া বা ‘সাপোর্ট কোষ’ থাকে। তারা দ্রুত মূলত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। ক্ষতিগ্রস্ত কলা, কোষের ভগ্নাংশ, প্যাথোজেন দ্রুত অপসারণ করে, যাতে স্নায়ুকোষ ভাল ভাবে কাজ করতে পারে।

মানুষের মস্তিষ্কের একটা মানচিত্র তৈরির চেষ্টা বহু বছর ধরে করে চলেছেন গবেষকেরা। মনে করা হয় দু’হাজার বছর ধরে এই প্রচেষ্টা চলছে। খ্রিস্ট জন্মের প্রায় ৩০০ বছর আগে আলেকজান্দ্রিয়ায় মস্তিষ্কের ভিতরে থাকা সেরিব্রাম এবং সেরিবেলামের ফারাক করেছিলেন হেরোফিলাস এবং এরাসিসট্রটাস। মনে করা হয় তাঁরা প্রথম মানুষের মস্তিষ্কের ভিতরে কী রয়েছে, তার ধারণা দিয়েছিলেন।

science study Human Brain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy