আর কয়েক ঘণ্টা। রবিবার রাতেই দেখা যাবে সেই বহু প্রতীক্ষিত দৃশ্য। পূর্ণগ্রাস গ্রহণ লাগবে চাঁদে। আর তা দেখা যাবে ভারত থেকেও। এত দীর্ঘ সময় ধরে গ্রহণের প্রক্রিয়া বহু বছর ধরে দেখা যায়নি। পূর্ণগ্রাসের সময় সূর্য অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেলেও চাঁদ কিন্তু হয় গাঢ় লালচে। তাকে বলে ‘রক্ত চাঁদ’। কেন এই নাম, তা নিয়ে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। তার উপর সূর্যের আলো পড়ে। তা-ই পৃথিবীতে প্রতিফলিত হয়। চাঁদ এবং সূর্যের মাঝে পৃথিবী চলে এলে সূর্যের আলো আর চাঁদে পড়ে না। বদলে পৃথিবীর ছায়া পড়ে চাঁদের উপরে। তখনই হয় চন্দ্রগ্রহণ।
কেন পূর্ণগ্রাসের সময় চাঁদের রং লাল হয়?
চাঁদ এবং সূর্যের ঠিক মাঝখানে পৃথিবী চলে এলে, তখন তার ছায়া পড়ে চাঁদে। সেই সময় হয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ পুরোপুরি কালো কিন্তু হয় না। বদলে লাল হয়ে ওঠে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল যখন সূর্যের আলো গ্রহণ করে (তার মধ্যে দিয়ে যখন সেই রশ্মি প্রতিসরিত হয়), তখন সূর্যরশ্মির লাল অংশ কম পরিমাণে প্রতিসরিত হয় এবং তা চাঁদের উপরে গিয়ে পড়ে। অন্য দিকে, সূর্যরশ্মির নীল অংশটি চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। তাই চাঁদকে গ্রহণের সময়ে গাঢ় কালচে লাল দেখা যায়। কিন্তু কখনও কালো দেখায় না। রবিবার রাতে ৮২ মিনিট ধরে চলবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। ওই সময় লালচে দেখাবে চাঁদকে। ভারতে সেই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে।
খালি চোখেই দেখা যাবে ‘রক্তচাঁদ’?
চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয় না। খালি চোখেই দেখা যায় গ্রহণ। গ্রহণের সময়ে চাঁদ থাকে ফ্যাকাশে। সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের সমস্যা হয়। কিন্তু চাঁদের গ্রহণের ক্ষেত্রে তা হয় না। রবিবার রাতে কোনও অন্ধকার জায়গায় দাঁড়িয়ে খালি চোখে আকাশে তাকালেই দেখা যাবে চন্দ্রগ্রহণ।
আরও পড়ুন:
কখন দেখা যাবে গ্রহণ?
গ্রিনিচ মান মন্দির (জিএমটি) অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টে ২৫ মিনিটে শুরু হবে চন্দ্রগ্রহণ। ভারতে তখন রাত ৮টা ৫৮ মিনিট। তা অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে শেষ হবে সেই গ্রহণ। ভারতে তখন ৮ সেপ্টেম্বর রাত ২টো ২৫ মিনিট। এর মাঝে চাঁদের রং হয়ে উঠবে লাল। ভারতে সেই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে।
কোথা থেকে দেখা যাবে?
এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা থেকে দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। ভারতের প্রায় সব শহর থেকেই দেখা যাবে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, পুণে, লখনউ, হায়দরাবাদ, চণ্ডীগড় থেকে স্পষ্ট এই গ্রহণ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়া অবশ্যই অনুকূল থাকতে হবে।