Advertisement
E-Paper

গব্বরের হামলায় জখম পাঁচ

এক দশক আগে কেউ এক জন গ্রামে ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিল ষাঁড়টিকে। তারপর থেকে মাঠের কচি ঘাস, ভালবেসে দেওয়া কলাটা-মুলোটা খেয়েই বড় হচ্ছিল সে। কেউ ডাকতেন শম্ভু, কেউ আবার বিশাল চেহারার জন্য নাম দিয়েছিলেন গব্বর। তবে আচমকা গব্বর যে এমন খতরনাক হয়ে উঠবে, তা ভাবেননি কেউ। ষাঁড়টির হামলায় জখম হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন অনেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৪

এক দশক আগে কেউ এক জন গ্রামে ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিল ষাঁড়টিকে। তারপর থেকে মাঠের কচি ঘাস, ভালবেসে দেওয়া কলাটা-মুলোটা খেয়েই বড় হচ্ছিল সে। কেউ ডাকতেন শম্ভু, কেউ আবার বিশাল চেহারার জন্য নাম দিয়েছিলেন গব্বর। তবে আচমকা গব্বর যে এমন খতরনাক হয়ে উঠবে, তা ভাবেননি কেউ। ষাঁড়টির হামলায় জখম হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি ৭৭ জন গ্রামবাসী ষাঁড়টিকে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠিও দিয়েছেন মহকুমাশাসককে।

কালনা ২ ব্লকের শাসপুর এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বছর চারেক ঘরেই যেখানে-সেখানে ঢুকে পড়ে গুঁতিয়ে দেওয়া শুরু করে শম্ভু। শাসপুর দিঘিরপাড়, মোল্লাপাড়া, স্কুলপাড়া এবং পশ্চিমপাড়া হয়ে ওঠে তার রাজত্ব। হামলাতে থাকে গোয়ালঘরেও। গরুর খাবার খেয়ে নেওয়া তো বটেই, শম্ভুর আক্রমণে কয়েকটি বাছুর মারা যায় বলেও গ্রামবাসীদের দাবি। তার সঙ্গে শিং ও পা দিয়ে সে ভাঙতে থাকে গোয়ালঘরের নাদা, মাটির যে কোনও পাত্র। এলাকার মানুষজনের দাবি, শম্ভুর ত্রাসে বাড়িতে গোয়ালঘরের পাটই তুলে দেন অনেকে। পিন্টু নাগ, নিরঞ্জন সরকার, খোকন নন্দী, ধীরেন মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘শম্ভু যতদিন আছে, ততদিন বাড়িতে গরু পোষা মানেই বিপদ ডেকে আনা।’’ তবে মাস পাঁচেক ধরে অত্যাচার আরও বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কিছুদিনের মধ্যেই পাঁচ জন শম্ভুর শিংয়ের গুঁতো খেয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছেন। অনেকে আবার শম্ভুর তাড়া খেয়ে সাইকেল থেকে উল্টে পড়েছেন, কিংবা প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ দিয়েছেন কাছাকাছি পুকুরে। মহকুমাশাসককে দেওয়া চিঠিকে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে এলাকার সুরেন পাল এবং তাঁর বৃদ্ধ মাকে পিছন থেকে আক্রমণ করে শম্ভু। সুরেনবাবু কোনও রকমে কাছাকাছি একটি জলাশয়ে ঝাঁপিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেও গুঁতো খেয়ে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙে তাঁর মায়ের। ক্ষত হয় আরও কিছু জায়গায়। এলাকায় গিয়েও দেখা গিয়েছে, মাঠ, আমবাগান, অলিগলি সর্বত্র ভারী শরীর নিয়ে ঘোরাফেরা করছে শম্ভু। চলাফেরার ফাঁকে মাঝেমধ্যেই পাড়া কাঁপিয়ে ডাক পাড়ছে। সামনের পা দিয়ে মাটিও খুঁড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যাম হালদার, গৌতম বিশ্বাসরা জানান, ওর রাগ মারাত্মক। শিং দিয়ে এলাকার মোরাম রাস্তার অনেকটাও নষ্ট করে দিয়েছে। দ্রুত শম্ভুকে সরিয়ে না নিয়ে গেলে দুর্ঘটনা বাড়বে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। তাঁরাই জানান, গব্বর ডাক পাড়লে এলাকার বাচ্চা ছেলেরাও দুষ্টুমি বন্ধ করে দেয়। অনেকে মায়েরাও তাদের ছেলেমেয়েদের রীতিমতো শোলে সিনেমার মতো ঘুম পাড়ান গব্বর আসছে বলে।

ষাঁড়ের হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছে পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েত। এলাকার বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারক সরকার বলেন, ‘‘গব্বরের জ্বালায় গ্রামের ২০০টি গরু কমতে কমতে ৩০-এ দাঁড়িয়েছে। গ্রামবাসীরা চান ওকে বন দফতরের হাতে তুলে দিতে।’’ কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ জানান, ষাঁড়টিকে যাতে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy