ফের দলছুট দাঁতালকে নিয়ে দিনভর হিমশিম খেল বন দফতর।
সোমবার বন দফতরের ইলামবাজার বিট এলাকার ঘটনা। ওই দাঁতাল কখনও ধান খেতে নেমেছে। কখনও আবার আখ খেতে। অজয় নদের উপর ইলামবাজার সেতু দিয়ে জাতীয় সড়কের উপর ইলামবাজার থানা এবং বাসস্টপ হয়ে পৌঁছে গিয়েছে ঘুড়িষা গ্রামের কাছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ঠিকানো ছিল গ্রাম লাগোয়া ধান খেত। সেই অর্থে দলছুট দাঁতাল কোনও ক্ষয়ক্ষতি না করলেও তার আসা-যাওয়ার পথে কয়েকটি ধান খেতে এবং একটি আখ খেত অল্প বিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।
এ দিকে, বিট অফিসার মলয় ঘোষের নেতৃত্বে এলাকায় সকাল থেকে বনকর্মী, হুলাপার্টি ও স্থানীয় পুলিশ ওই দাঁতালের উপর নজরে রাখেন। মলয়বাবু বলেন, ‘‘সন্ধ্যা নামলেই দাঁতালকে বর্ধমানের বসুধা জঙ্গলের দিকে ফেরানোর চেষ্টা হবে। আপাতত জয়দেব রাস্তা ধরে অজয় নদ পেরিয়ে বর্ধমানের বসুধা জঙ্গলে কিংবা ইলামবাজারের চৌপাহাড়ি জঙ্গল ধরে অজয় নদের ওপর দিয়ে বসুধাতে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।’’ পরে মলয়বাবুদের সঙ্গে যোগ দেন বোলপুরের বিট অফিসার দেবাশিস চক্রবর্তী। পৌঁছে যান এফপিসি-র লোকজনও। ওই এলাকায় স্থানীয়রা যাতে ওই দাঁতালকে কোনও ভাবে বিরক্ত না করেন, তার জন্য স্থানীয় পুলিশ, বনকর্মী এবং হুলাপার্টি মোতায়েন রয়েছে এলাকায়।
বন দফতর ও পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ বর্ধমানের বসুধা জঙ্গল থেকে অজয় নদের উপর ইলামবাজার সেতু পেরিয়ে দলছুট একটি দাঁতাল এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেতু পেরিয়ে ইলামবাজার টোল গেটের সামনে জাতীয় সড়কে ওঠে ওই দাঁতাল। আচমকা রাস্তার উপর দাঁতাল দেখে সকাল সকাল বাজারহাট করতে আসা মানুষজন যে যে দিকে পারেন ছুট লাগান। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ ইদ্রিস আলি, শঙ্কর দাস, শর্বাণী দাস, সুফিয়া খাতুনরা বলেন, ‘‘আচমকা সকাল বেলা এত কাছে রাস্তার উপর দাঁতাল দেখে অচৈতন্য হওয়ার জোগাড় হয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ এবং বনকর্মীদের উপস্থিতিতে দাঁতালটি কারও কোনও ক্ষতি না করে রাস্তার উপর দিয়ে ঘুড়িষার দিকে চলে যায়।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দাঁতালের পিছনে সুনির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে পুলিশ ও বন কর্মীদের তাড়া খেয়ে মুখ্য রাস্তার ধারে দাঁতালটি কখনও ধানের খেতে, আবার কখনও আখ খেতে নেমে পড়ে। সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত ঘুড়িষা গ্রামের কাছেই আপাতত ওই দাঁতাল রয়েছে। এলাকার বনকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় একই বয়সের এবং সমান স্বভাব চরিত্রের দাঁতাল বার কয়েক এসেছে ইলামবাজার এলাকায়। ফলে এটি সে-ই দাঁতালটিই কি না, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না বন দফতর।
পরে বীরভূম বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা বর্ধমানের ডিএফও অজয় দাস বলেন, “আমরা সতর্ক আছি। ওই দাঁতালের উপর নজর রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা নামলে বর্ধমানের বসুধা জঙ্গলের দিকে ফেরানোর চেষ্টা হবে।”