রানিগঞ্জে তোলা নিজস্ব চিত্র।
একদিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির, অন্য দিকে হাতি তাড়াতে গিয়ে মৃত্যু হল এক বনকর্মীর।
রানিগঞ্জের বক্তারনগর ও কুমারবাজারের মাঝে বারোদুয়ারি পুলের কাছে বৃহস্পতিবার হাতি আছড়ে মারে নারায়ণ চন্দ্র খান (৪৮)। নামে ওই বনকর্মীকে। তাঁর বাড়ি জামুড়িয়ার ধসল গ্রামে। রাত পর্যন্ত মৃতের দেহ আটকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে বনকর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। বুধবার বাঁকুড়া থেকে দামোদর নদ পেরিয়ে প্রায় ২৫টি হাতির দল রানিগঞ্জের নুপুর গ্রাম দিয়ে বক্তারনগরে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার চার জন অস্থায়ী বন কর্মীকে নিয়ে বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার পবিত্র মণ্ডল ঘটনাস্থলে আসেন। হন বফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা যখন হাতিগুলিকে রেললাইন পার করাচ্ছিলেন তখন ওই লাইনে একটি মালগাড়ি চলে আসে। মালগাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনে হাতির দল পিছোতে শুরু করে। সেই সময় নারায়ণবাবু একটি হাতির সামনে পড়ে গেলে হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে জড়িয়ে আছাড় মারে। ওই বনকর্মীকে উদ্ধার করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অন্য দিকে, বুধবার রাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির জঙ্গল থেকে ১০ টি হাতি বেরিয়ে মেজিয়ার তেলেন্ডা গ্রামে ঢোকে। সেখানে মাটির কাছাকাছি ঝুলছিল বিদ্যুতের হাইটেনশন তার। সেই তার গায়ে লাগায় মৃত্যু হয় একটি হাতির। রাতেই বনকর্মীরা হাতিটির দেহ উদ্ধার করেন। গ্রামবাসী দেবদুলাল দাসের অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে হাইটেনশন তারটি মাটির কাছাকাছি ঝুলে রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েও কাজের কাজ হয়নি।” বস্তুত, কয়েক মাস আগেই বড়জোড়ায় একটি ইলেকট্রিক খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার পর ডিএফও (উত্তর) সুধীরচন্দ্র দাস বিদ্যুৎ দফতরকে হাতিদের যাতায়াত রয়েছে, এমন এলাকাগুলিতে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন। ডিএফও বলেন, “বার বার বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতে হাতির মৃত্যু ঘটছে। আমি ওই দফতরের বিরুদ্ধে এফআইআর করব।” জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ বলেন, “তারগুলো ঝুলে থাকলেও কেন ঠিক করা হয়নি, বিদ্যুৎ দফতরের কাছে জানতে চাইব।” বিদ্যুৎ দফতরের বাঁকুড়ার রিজিওনাল ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সেনগুপ্ত বলেন, “হাতিটির মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখব। গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy