Advertisement
E-Paper

সমস্যা মিটিয়ে নববর্ষে চালু বর্জ্য প্রক্রিয়ার কেন্দ্র

অবশেষে নববর্ষের সকাল থেকে ফের চালু হচ্ছে দুর্গাপুরের কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। প্রায় দশ মাস বন্ধ থাকার পরে কেন্দ্রটি চালু করতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে পুরসভাও। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহু কাঠখড় পুড়িয়ে আপাতত সমস্যা মেটানো গিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটি মঙ্গলবার থেকে বর্জ্য গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে তাদের।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৫
শঙ্করপুরে সেই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র।—ফাইল চিত্র।

শঙ্করপুরে সেই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র।—ফাইল চিত্র।

অবশেষে নববর্ষের সকাল থেকে ফের চালু হচ্ছে দুর্গাপুরের কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। প্রায় দশ মাস বন্ধ থাকার পরে কেন্দ্রটি চালু করতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে পুরসভাও। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহু কাঠখড় পুড়িয়ে আপাতত সমস্যা মেটানো গিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটি মঙ্গলবার থেকে বর্জ্য গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে তাদের।”

কেন্দ্রীয় জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দে ও একটি বেসরকারি সংস্থার লগ্নিতে ২০১০ সালে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে। তার পর থেকে শহরের সব ময়লা-আবর্জনা জড়ো করা হত সেখানে। তা প্রক্রিয়াকরণ করে সার, বিশেষ ধরনের ইট ইত্যাদি তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে কেন্দ্রটিতে। পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু মাঝে-মাঝেই সেখানে সমস্যা দেখা দিত। কখনও ঠিকাকর্মীরা অভিযোগ তুলতেন, নিয়মিত বেতন মেলে না। নিয়মিত প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা কাটা হলেও তা জমা করা হত না। ৮ ঘণ্টার জায়গায় বেশি পরিশ্রম করানো হত। ওই বেসরকারি সংস্থার তরফেও অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রটিতে যে পরিমাণ বর্জ্য প্রয়োজন, পুর এলাকা থেকে তা আসে না। কেন্দ্রটি চালানো লাভজনক নয়। এ সবের জেরে মাঝে-মাঝেই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যেত। এ দিকে বিদ্যুতের বিল বাকি পড়তে থাকে। লক্ষ লক্ষ টাকা বিল বাকি পড়ে যাওয়ায় শেষে গত বছর ৬ জুলাই থেকে ওই কেন্দ্রের বিদ্যুত্‌ সংযোগ ছিন্ন করে দেয় দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)। তখন থেকে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি।

এর পরেই পুর এলাকার জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। শহরের ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পুরসভার গাড়ি ময়লা ঢালতে শুরু করে। তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিবাদ বাধে পুরকর্মীদের। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে শহরের আনাচে-কানাচে বর্জ্যের স্তুপ জমতে শুরু করে। শেষে পুরসভার গাড়ি বর্জ্য ঢালার জন্য বেছে নেয় ভগত্‌ সিংহ স্টেডিয়ামের সম্প্রসারিত অংশটি।

কিন্তু যে মাঠে মোহনবাগান দল শিবির করতে এসে অনুশীলন করে, যেখানে ইস্টবেঙ্গলের প্রদর্শনী ম্যাচ হয়, সেই মাঠই শেষে পুরসভার ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ হয়ে যাওয়ায় শহরের নানা মহল প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। স্টেডিয়ামের নিচু ও আপাতত অব্যবহৃত ওই অংশে বর্জ্য ঢালার কাজ চলতেই থাকে। দীর্ঘদিন এমন চলতে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে আশপাশে। জনবসতি না থাকলেও শহরের সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড থেকে স্টেডিয়ামের ঠিক গা ঘেঁষে প্রধান রাস্তা দিয়ে যাওয়া বাসের যাত্রীরা থেকে অন্য নানা গাড়ির আরোহী, নাকে রুমাল না চেপে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রবও বেড়ে গিয়েছে আগের থেকে বহুগুণ।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সমাধানে ধারাবাহিক ভাবে চেষ্টা চালানো হয়েছে। বারবার বৈঠকের পরে ওই বেসরকারি সংস্থা কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করতে রাজি হয়। মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সংস্থার তরফে ঠিকাকর্মীদের বকেয়া ১৮ দিনের বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে। ডিপিএল বিদ্যুত্‌ সংযোগ দিয়ে দেবে।” বেসরকারি সংস্থাটির এক আধিকারিক জানান, আপাতত মঙ্গলবার থেকে বর্জ্য নেওয়া হবে। সংস্থার আধিকারিক রূপম সরকার বলেন, “প্রকল্পটি অলাভজনক। সে জন্য বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। লাভজনক করে তোলার জন্য কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, পরিস্থিতি বদলে যাবে।”

durgapur waste management centre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy