মালদহে রতুয়ার একবর্ণা এলাকায় হনুমান ধরার দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ শুরু করেছিলেন বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের বিক্ষোভের পরে বিকেলে সেই হনুমান ধরতে নামে বন দফতর। তবে তারপরেও তাদের খালি হাতে ফিরতে হল। বিকাল চারটে থেকে তিন ঘন্টা ধরে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খেয়েও না ঘুমিয়ে দাপিয়েও বেড়াল সেই হনুমান। উল্টে সন্ধের পর হনুমানের তাড়া খেয়ে আর ঝুঁকি না নিয়েই ফিরতে হল বন দফতরের কর্মীদের।
এ দিন হনুমানটিকে ধরতে কয়েক ডজন কলা নিয়ে গিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। সেই কলার মধ্যেই দেওয়া ছিল কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধও। সেই কলা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়া দূরের কথা, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে থাকে হনুমানটি। শেষে কাগাচিরা এলাকায় হনুমানের হদিশ মিললেও তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।
মালদহের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘হনুমানটিকে ধরার চেষ্টা হলেও ধরা যায়নি। কলার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়েও তাকে বাগে আনা যায়নি। ফের মঙ্গলবার হনুমানটিকে ধরতে অভিযান চালানো হবে।’’ চারটি ঘুমের ওষুধ ছিল কলার মধ্যে। তারপরেও কী করে হনুমানটি অবশ হল না, তাতে বিস্মিত বন দফতরও।
রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের একবর্ণা এলাকায় গত দু’সপ্তাহ ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে হনুমানটি। তার কামড়ে পাঁচ স্কুল পড়ুয়া সহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন ছাত্রকে চিকিত্সার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিন্টু কর্মকার নামে এক ছাত্রকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর এদিন ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে মালদহে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রাস্তা, স্কুলে এমনকী বাড়িতে ঢুকে শরীরের মাংস খুবলে নিয়ে পালাত ওই হনুমান। হনুমানের তাণ্ডবে আতঙ্কে ছেলেমেয়েদের না পাঠানোয় এ দিন একবর্ণা গদাধর বিদ্যাপীঠে পঠন-পাঠন পর্যন্ত হয়নি। তবে শিক্ষকরা স্কুলে এসেছিলেন।
পরিস্থিতি এমনটাই হওয়ার পরে এদিন সকাল ১০টা থেকে মালদহ-মাদিয়াঘাট রাজ্য সড়কের একবর্ণায় হাই স্কুলের সামনে পথ অবরোধ শুরু করেন বাসিন্দারা। অবরোধের জেরে চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। পরে হনুমান ধরতে অভিযান চালানো হবে বলে আশ্বাস পেয়ে দুপুর তিনটায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
তারপর বিকেলে হনুমান ধরতে অভিযানে নামে বন দফতর। অভিযানে সামিল হয়েছিলেন একবর্ণা গদাধর হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক মাধব সাহাও। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খেয়েও হনুমানটি কাবু হয়নি। সন্ধের পর উল্টে হনুমানটি আমাদের তাড়া করায় পালিয়ে আসতে হয়।’’ তিনি জানান, হনুমানটি একবর্ণা এলাকা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে স্কুলে পঠন-পাঠন হবে।