তৃপ্তি: ভারতের বিরুদ্ধে টাইয়ের
এশিয়া কাপে তারা সাড়া ফেলে দিয়েছিল। সুপার ফোর থেকে বিদায় নিলেও অনেকেই মনে করছেন, তারা যে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে, তাতে আফগানিস্তানেরই ফাইনালে খেলা উচিত ছিল।
আফগানিস্তান এসেছিল নিঃশব্দে, কিন্তু যাচ্ছে আলোড়ন তুলে। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। হুঁশিয়ারি এবং সম্প্রীতির বার্তা রেখে। যাওয়ার আগে তাদের অধিনায়ক আসগর আফগান বলে গেলেন, ‘‘আমাদের দুর্ভাগ্য, দুবাইয়ে একটার বেশি ম্যাচ পড়ল না। এখানে যদি আরও বেশি খেলা পড়ত, তা হলে আমরা নিশ্চিত ভাবে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতাম।’’ আসগরের কথার গুরুত্ব দিতেই হবে। কারণ সুপার ফোরে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে হেরেছে আফগানিস্তান। ভারতের সঙ্গে ম্যাচ টাই হয়েছে। ভারতীয় শিবির থেকে শোনা গিয়েছে আফগানিস্তানের প্রশংসা। ম্যাচের পরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এসে বলে গিয়েছেন, ‘‘আফগানিস্তান দারুণ উন্নতি করেছে। এ বারের এশিয়া কাপের শুরু থেকেই সেটা বোঝা যাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে ম্যাচেও খুব ভাল খেলল। বিশেষ করে ব্যাটিং নজরে পড়ার মতো।’’ সেই ব্যাটিং যাঁকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল, সেই মহম্মদ শাহজাদ অবশ্য একটু হতাশ ছ’ঘন্টা ধরে মাঠে থেকেও দলকে জেতাতে না পারায়।
কিন্তু ‘টাই’ ম্যাচই আবার অনেক ভারতীয় সমর্থকের কাছে হারের সমান। মঙ্গলবার ম্যাচের শেষে মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখা যায়, ভারতের জার্সি পরা একটি বাচ্চা কেঁদেই চলেছে। যা দেখার পরে রশিদ খান এবং শাহজাদ গিয়ে সেই বাচ্চাটিকে সান্ত্বনা দিয়ে আসেন। থেমে যায় খুদে ভক্তের কান্না। সম্প্রীতির এই নজিরে মন জিতে নেন রশিদরা। কিন্তু আসগর কেন বলছেন, দুবাইয়ে খেললে আফগানিস্তান ফাইনালে চলে যেত? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আবু ধাবির পিচে পেসারেরা সুবিধে পেয়েছে। দুবাইয়ের উইকেটে স্পিনারেরা। আমাদের বোলিংটা অনেকটাই স্পিন নির্ভর। এই মাঠে খেলা হলে ঠিক ওই ম্যাচগুলো জিতে নিতাম।’’
এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের এই উত্থানের কারণ কী? কাবুলে আফগান বোর্ডে ফোন করে জানা গেল, দুটো বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। এক, প্রস্তুতি। অনেক দিন ধরে দুবাইয়ে প্রস্তুতি শিবির ছিল আফগান ক্রিকেটারদের। ফলে মরুশহরের এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি তাঁদের। দুই, কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের দায়িত্ব নেওয়া। আসগর বলছিলেন, ‘‘সিমন্স আসার আগে বুঝতাম না আমরা ঠিক কোন জায়গায় আছি। আমরা ভাবতাম, ক্রিকেট দুনিয়ায় আমাদের জায়গা বুঝি খুব নীচের দিকে। কিন্তু সিমন্স এসে বোঝায়, তোমাদের জায়গা এখানে (হাতটা উঁচুতে তুলে দেখান আফগান অধিনায়ক)। তার পর থেকেই আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে।’’
আফগানিস্তান বোর্ড এখন চেষ্টা চালাচ্ছে সার্বিক ভাবে তাদের ক্রিকেট কাঠামোর উন্নতি করতে। যে জন্য তারা চালু করতে চলেছে আফগান প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। খেলা হবে শারজায়। কিন্তু এই ধরনের টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় গড়াপেটার কালো ছায়া পড়বে না তো? ইতিমধ্যেই তো ওই লিগে গড়াপেটা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল শাহজাদকে। আফগান বোর্ডের অন্যতম কর্তা বশির স্টানিকজাই বলেছেন, ‘‘আমরা সব পদক্ষেপ নিচ্ছি, আফগান প্রিমিয়ার লিগকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে। এখানে গড়াপেটা হতে দেব না। বরং আমাদের ক্রিকেটারেরা এই ধরনের লিগে খেলে আরও উন্নতি করতে পারবে।’’
আমিরশাহি ছাড়ার আগে আসগরের হুঁশিয়ারি, ‘‘এখানে কী ভুল করেছি, তা বুঝতে পেরেছি। সেগুলো শুধরে নিয়েই আমরা বিশ্বকাপে আসব। তৈরি থাকবেন, সেখানে কিন্তু আমরা আরও চমক দেখাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy