Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
‘আমার এই ঘটনা থেকে যেন সাবধান হয় অন্যেরাও’

ডোপিং করায় নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাসিত পৃথ্বী

বোর্ডের ডোপবিরোধী কর্মসূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার সময় তাঁর মূত্র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনায় ধরা পড়ে টার্বুটালিনের উপস্থিতি।

বিপর্যস্ত: চোট সারিয়ে বাইশ গজে ফিরে আসার আগেই আবার বড় ধাক্কা খেলেন তরুণ প্রতিভা পৃথ্বী শ। ফাইল চিত্র

বিপর্যস্ত: চোট সারিয়ে বাইশ গজে ফিরে আসার আগেই আবার বড় ধাক্কা খেলেন তরুণ প্রতিভা পৃথ্বী শ। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৪:২১
Share: Save:

ডোপিংয়ে ধরা পড়ে সমস্ত ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে আট মাসের জন্য নির্বাসিত হলেন ভারতীয় দলের ওপেনার পৃথ্বী শ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তা জানায় ভারতীয় বোর্ড। তিনি ছাড়াও আরও দুই ক্রিকেটার অক্ষয় দুলারওয়ার (বিদর্ভ) এবং দিব্য গজরাজ (রাজস্থান) একই অভিযোগে নির্বাসিত হয়েছেন।

মুম্বইয়ের প্রতিশ্রুতিমান নতুন তারকা, ১৯ বছরের পৃথ্বী গত বছরেই দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট খেলেন। অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরিও করেছিলেন। তার আগে পৃথ্বীর নেতৃত্বেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। যাঁর খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ সচিন তেন্ডুলকরও। এমনই এক ক্রিকেটারের নির্বাসনের খবরে বিস্মিত ক্রিকেটমহলও।

মঙ্গলবার বোর্ড যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, বোর্ডের ডোপবিরোধী কর্মসূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার সময় তাঁর মূত্র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনায় ধরা পড়ে টার্বুটালিনের উপস্থিতি। যা সাধারণত সর্দি-কাশির জন্য ব্যবহৃত সিরাপে থাকে। বিশ্ব ডোপবিরোধী সংস্থার (ওয়াডা) নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে টার্বুটালিন। ঘটনা হল, এই ধরনের নিষিদ্ধ যৌগ উপাদান যে ওষুধে থাকে, তা একান্তই যদি কোনও খেলায়াড়কে গ্রহণ করতে হয়, তবে তাঁর সঙ্গে ‘থেরাপিউটিক ইউজ এক্সেমপসন সার্টিফিকেট’ থাকা বাধ্যতামূলক। তাঁর কাছে তেমন কোনও সার্টিফিকেট ছিল না।

বোর্ড এ দিন যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘‘মূত্র নমুনায় নিষিদ্ধ ওষুধের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পরেই গত ১৬ জুলাই বোর্ডের ডোপবিরোধী আইনের ২.১ ধারা লঙ্ঘন করার অভিযোগ করা হয় পৃথ্বীর বিরুদ্ধে। যে ধারায় বলা হয়েছে, ডোপিংয়ে ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে সাময়িক ভাবে নির্বাসিত করা যেতে পারে। পৃথ্বী জানান, না জেনেই শ্বাসকষ্টের কারণে তিনি ওই ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন। এর সঙ্গে পারফরম্যান্স বাড়ানোর কোনও সম্পর্ক নেই।’’ বোর্ডও সমস্ত ধরনের প্রমাণ খতিয়ে দেখে এবং পরে বাইরের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হয় যে, পৃথ্বী অজান্তেই এই ওষুধ খেয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও ডোপবিরোধী আইনের ১০.১০.৩ ধারা মেনে তাঁকে আট মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে। এব‌ং তাঁর শাস্তির দিন গোনা হবে ১৬ মার্চ থেকে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে। অর্থাৎ হিসেব মতো সাড়ে সাত মাসের জন্য নির্বাসিত থাকতে হবে তাঁকে। বোর্ডের ডোপবিরোধী আইনের ১০.১১.২ ধারা অনুযায়ী, তার পরেই পৃথ্বী রাজ্য দলের অথবা কোন ক্লাবে গিয়ে অনুশীলন করতে পারেন। এই মুহূর্তে কোমরের নীচের অংশের চোট সারাতে রিহ্যাব করছেন বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে।

পৃথ্বীর মতো ডোপিংয়ে ধরা পড়ে আট মাস নির্বাসিত বিদর্ভ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্রিকেটার অক্ষয় দুলারওয়ার। তাঁর মূত্র নমুনায় ডেসাসেটিল ডেফ্লাজ়াকর্ট পাওয়া যায়। তাঁর মূত্র নমুনা সংগ্রহ করা হয় হায়দরাবাদে গত ১০ মার্চ ওয়ান ডে ম্যাচের সময়ে। ২৬ জুন তাঁর বিরুদ্ধে ডোপবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। অক্ষয় জানিয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই মনোঃসংযোগ বাড়াতে ওই ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন। অন্য কোনও অসৎ উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। বোর্ডের ডোপবিরোধী ধারা অনুযায়ী তাঁর শাস্তি শুরু হয়েছে ১০ মার্চ থেকে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৯ নভেম্বর মধ্যরাতে।

রাজস্থানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার দিব্য গজরাজের মূত্র নমুনা সংগ্রহ করা হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি জয়পুরে কোচবিহার ট্রফির ম্যাচের সময়ে। সেখানেও নিষিদ্ধ ওষুধের উপস্থিতি ধরা পড়ে। গজরাজ জানান, চোখের উপরে চোট লাগার কারণে তিনি চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ মেনে ওষুধ খেয়েছিলেন। জানতেন না, সেই ওষুধে নিষিদ্ধ যৌগ বস্তু রয়েছে। তাঁকে ছয় মাসের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket India Prithvi Shaw NADA WADA Doping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE