চলছে প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি। মঙ্গলবার কোচবিহার রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।
আজ, বুধবার কোচবিহারে শুরু হচ্ছে ৬০তম রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। জেলা সদরের রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে তিন দিন ব্যাপী ওই প্রতিযোগিতা চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। থাকছে মোট ১১০ টি ইভেন্ট। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পঞ্চম-দশম শ্রেণির পড়ুয়া, ৭৩৫ জন প্রতিযোগী অংশ নেবেন কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের ব্যবস্থাপনায়। ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন ওই প্রতিযোগিতার আমন্ত্রণ পত্রে বিরোধী দলের বিধায়কদের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই আমন্ত্রণ পত্রে প্রতিযোগিতার উদ্বোধক হিসাবে রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম ছাপানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদদের পাশাপাশি তুফানগঞ্জ ও শীতলখুচি তৃণমূল বিধায়কের নাম অতিথি তালিকায় রয়েছে। কোচবিহার পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যানের নামও রয়েছে। অথচ জেলার বিরোধী দলের কোনও বিধায়কের নাম আমন্ত্রণ পত্রে নেই। অথচ জেলার ৯ জন বিধায়কের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের ৪ জন ও কংগ্রেসের ১ জন বিধায়ক রয়েছেন। এছাড়াও কোচবিহার সদরে ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলেও কোচবিহার দক্ষিণ কিংবা উত্তর কোন বিধায়কের নামই ওই আমন্ত্রণ পত্রে ঠাঁই পায়নি। প্রতিযোগিতায় শাসক দলের বিরুদ্ধে দলতন্ত্রের অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা।
কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের কার্যনিবাহী সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের জেলা আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। জেলার সমস্ত বিধায়ককে আয়োজক কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাখা হয়েছে। সকলের কাছেই ডাক যোগে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। স্থানাভাবে সব নাম ছাপানো যায়নি।”
কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর বলেন, “ওঁরা বোধহয়, মনে মনে উপদেষ্টামণ্ডলীতে রেখেছেন। তাই মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ওই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে কোনও মহল থেকে একটা ফোন করে পর্যন্ত জানানো হয়নি। আমন্ত্রণ পত্রও পাইনি। অথচ আমার বিধানসভা কেন্দ্রে এতবড় আয়োজন হচ্ছে! এসব দলতন্ত্রের নমুনা!” ফরওয়ার্ড ব্লকের দিনহাটার বিধায়ক তথা জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহের প্রতিক্রিয়া, “কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই বিরোধী বিধায়কদের আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানান হয় না। ক্রীড় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এটাই এখন রাজ্যের পরম্পরা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” আরও এক ধাপ এগিয়ে সিতাইয়ের কংগ্রেস বিধায়ক কেশব রায় বলেন, “জেলায় রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তাই কোচবিহারের সমস্ত বিধায়কদের নাম আমন্ত্রণপত্রে রাখা উচিত ছিল। ক্রীড়ানুষ্ঠান ঘিরে শাসক দলের ওই দলতন্ত্র গণতন্ত্রের রীতি বিরোধী।”
উদ্যোক্তারা জানান, গত ৬০ বছরের মধ্যে এ বারই প্রথম কোচবিহারে রাজ্যস্তরের স্কুলক্রীড়ার আসর বসছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হবে। তার আগে এমজেএন স্টেডিয়াম চত্বর থেকে প্রাক্তন জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দিব্যেন্দু সাহা, শুভজিত্ চক্রবর্তী, প্রদীপ সরকার প্রমুখরা মশাল নিয়ে রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে পৌঁছবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৈরাতি, রাভা, সাঁওতালি নৃত্য ও ক্যারাটে প্রদর্শনী থেকে বণার্ঢ্য মিছিল হবে। প্রতিযোগিতার জন্য সব মিলিয়ে ২০ লক্ষ টাকার বাজেট করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে প্রায় পৌনে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বাকি টাকা স্কুল পড়ুয়া, শিক্ষিক-শিক্ষিকা থেকে চাঁদা তুলে ও বিভিন্ন সংগঠনের থেকে বিজ্ঞাপন, স্পনসরের মাধ্যমে সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। শহরের দু’টি স্কুলভবনে বাইরের জেলার প্রতিযোগীদের রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আমন্ত্রণ পত্র পাঠানোর কাজ চলছে।
তিরন্দাজিতে সাড়া। পুলিশের উদ্যোগে তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় ভাল সাড়া মিলল মালবাজারে। মঙ্গলবার মালবাজার থানার উদ্যোগে ডামডিম উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে পুলিশ জনতা মৈত্রী তিরন্দাজি প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। দুই বিভাগে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৮ মহিলা তিরন্দাজি বিভাগে প্রথম হয় ডামডিমের সুপ্রিয়া মাহালি। অন্য দিকে, ১৮ ঊর্ধ্ব বিভাগে প্রথম হন পিঙ্কি বিশ্বাস। একটি বিভাগেই আয়োজিত হয় ছেলেদের তিরন্দাজি প্রতিযোগিতা। সেখানে প্রভাত বর্মন প্রথম স্থান পান। পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বাড়াতেই এই ধরনের প্রতিযোগিতা ফি বছর আয়োজিত হয় বলে জানান মালবাজারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নিমা ভুটিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy