Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দ্রাবিড়কে পাশে পেয়েই এতটা উন্নতি করেছে হুডা

আইপিএলের ভাল-মন্দ নিয়ে কম বিতর্ক নেই। সত্যিই এই লিগের ফলে ভারতীয় ক্রিকেটের ভাল হচ্ছে কি না, তা নিয়ে যুক্তি, পাল্টা যুক্তির সংখ্যা কম নয়। কিন্তু একটা কারণেই কখনও আইপিএলের বিরুদ্ধে আমি যাব না। আমাদের তরুণ, প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা যে এই মঞ্চে নিজেদের তুলে ধরার সুযোগ পায়।

দীপক হুডা: ২৫ বলে ৫৪। হরভজন সিংহ: ২৪ বলে ৬৪। প্রথম জন পারলেন। দ্বিতীয় জন পারলেন না। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

দীপক হুডা: ২৫ বলে ৫৪। হরভজন সিংহ: ২৪ বলে ৬৪। প্রথম জন পারলেন। দ্বিতীয় জন পারলেন না। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৬
Share: Save:

আইপিএলের ভাল-মন্দ নিয়ে কম বিতর্ক নেই। সত্যিই এই লিগের ফলে ভারতীয় ক্রিকেটের ভাল হচ্ছে কি না, তা নিয়ে যুক্তি, পাল্টা যুক্তির সংখ্যা কম নয়। কিন্তু একটা কারণেই কখনও আইপিএলের বিরুদ্ধে আমি যাব না। আমাদের তরুণ, প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা যে এই মঞ্চে নিজেদের তুলে ধরার সুযোগ পায়।

আমাদের ছেলেগুলো তো এই আইপিএলের জন্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিবেশে খেলতে পারছে। শীর্ষ স্তরের ক্রিকেটে সাফল্য পাওয়া ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে খেলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ জন্য আইপিএল-কে ধন্যবাদ দিতেই হবে। রবিবার যে ভাবে দীপক হুডা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল দুই স্পিনারকে সামলে প্রায় একাই রাজস্থান রয়্যালসকে জেতাল, তা দেখতে দেখতে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের একজন কোচ হিসেবে গর্বে বুক ফুলে উঠছিল।

যে ছেলেটা এই সে দিন বাংলার বিরুদ্ধে বডোদরার হয়ে জীবনের প্রথম রঞ্জি ট্রফি ম্যাচে সেঞ্চুরি করল, এ যে সেই ছেলেটাই, ভেবে সত্যিই ভাল লাগছিল। রঞ্জিতে আমাদের প্রথম ম্যাচটা হয়েছিল ডিসেম্বরে। মাত্র চার মাসে ব্যাটিংয়ে কত উন্নতি করেছে বছর কুড়ির দীপক হুডা! এদের দেখেই ভাল লাগে। মনে হয়, সত্যিই এদের জন্যই আইপিএলের গুরুত্ব অপরিসীম।

ইমরান তাহির যে এ বারের বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা স্পিনার, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রবিবার ফিরোজ শাহ কোটলায় ও প্রায় একাই দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে ম্যাচটা জিতিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু হুডার ২৫ বলে ৫৪-ই রাজস্থান রয়্যালসকে সেই ম্যাচ বের করে আনার জায়গায় নিয়ে চলে এল। না হলে দিল্লির দেওয়া ১৮৫-র টার্গেটটা কিন্তু মোটেই সোজা ছিল না।

যে রকম দাপট দেখাতে শুরু করেছিল ওদের দুই স্পিনার তাহির ও অমিত মিশ্র, তাতে স্টিভন স্মিথ, জেমস ফকনারদের মতো ব্যাটসম্যানদেরও নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। সেই স্পিনারদের বিরুদ্ধে ক্রিজে দাঁড়িয়ে কি অসাধারণ ব্যাট করে গেল ছেলেটা, সেটাই দেখলাম। ওদের ফিল্ড প্লেসিং-এর ফাঁক-ফোকর কাজে লাগিয়ে বড় রান তুলে দিল।

আমার বিশ্বাস, ব্যাটিংয়ের এই কনসেপ্টটা ওর মজ্জায় ঢুকিয়েছে রাহুল দ্রাবিড়। ওর মতো বিশ্বমানের একজন ব্যাটসম্যান দলের সঙ্গে আছে যখন, তখন এরা তো এগুলো শিখবেই। ব্যাটিং যে শুধু শক্তিতে ঠাসা শট আর কব্জির মোচড়ে হয় না, মাথাটা কাজে লাগানোও ব্যাটিংয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, তা রাহুল ছাড়া আর কে নিখুঁত ভাবে বোঝাবে? আর ২০ বছরের ছেলেটাকেও দেখুন, কী সুন্দর ভাবে নিজের ব্যাটিংয়ে সেটা ফুটিয়ে তুলল! রাতে এক ওয়েবসাইটে দেখলাম হুডা প্রেস মিটে রাহুলকে ধন্যবাদও দিয়েছে। তাতেই বুঝলাম আমার ধারণাটা ভুল নয়। ভুলে যাবেন না, আগের ম্যাচে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে এই ছেলেটা ১৫ বলে ৩০ করে গিয়েছিল। বাকিটা ওর আত্মবিশ্বাস, সাহস, এবং শট বাছাইয়ের দক্ষতা। রঞ্জির ম্যাচেও খেয়াল করেছিলাম, অন সাইডে ও বেশি সাবলীল। আউট সুইঙ্গারে সামান্য দুর্বলতা রয়েছে বটে। তবে রাহুল থাকায় এই আইপিএলেই ও সমস্যাটা শুধরে নিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। বড় ম্যাচের টেম্পারামেন্ট রয়েছে ওর মধ্যে, যেটা হুডাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

ভাজ্জি ঝড়েও জয় এল না মুম্বইয়ের
সংবাদ সংস্থা • মুম্বই

হরভজন ঝড়েও ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে জয় পেল না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। রবিবার মুম্বইকে ১৮ রানে হারাল কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব। প্রথমে বল হাতে মারমুখী মুরলী বিজয় ও বীরেন্দ্র সহবাগের উইকেট তার পর ব্যাট করতে নেমে ২৪ বলে ঝোড়ো ৬৪ রান। তা সত্ত্বেও জয় আসেনি ভাজ্জির দলের। অক্ষর পটেল, অনুরীত সিংহদের সংহার করে ‘টার্বানেটর’ মারলেন ছয় ছক্কা ও পাঁচটি চার। যা দেখে টুইটারে ক্রিকেট সমর্থকের রসিকতা, পরের বছর থেকে ভাজ্জিকে ব্যাটসম্যান হিসেবেই নিলামে তোলা যায়। হরভজন বিক্রমে এক সময় হারিয়ে যাওয়া ম্যাচও যখন বের করে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন রোহিত শর্মারা ঠিক তখনই ছন্দ পতন। শেষ ওভারে জিততে গেলে মুম্বইয়ের দরকার ছিল ৩০ রান। অন্তিম ওভারে অনুরীত সিংহকে মাঠের বাইরে ফেলতে গিয়ে সন্দীপ শর্মার হাতে হরভজন ধরা পড়তেই জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় মুম্বইয়ের। হরভজনের সঙ্গে জুটি বেধে ২১ বলে দুটি ছয় ও চারটি বাউন্ডারির সহযোগে ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে যান মুম্বই স্পিনার জগদীশা সুচিথ। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।

এ দিন টসে জিতে পঞ্জাবকে ব্যাট করতে পাঠান মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু পঞ্জাবের দুই ওপেনার মুরলী বিজয় ও বীরেন্দ্র সহবাগ শুরু থেকেই আক্রমণে গিয়ে চাপে ফেলে দেন মুম্বই বোলারদের। তবে দুই ওপেনার ফিরতেই ছন্দ হারায় কিঙ্গসরা। অল্প রানেই ফিরে যান ম্যাক্সওয়েল ও ডেভিড মিলার। মিডল অর্ডারে শেষমেশ জর্জ বেইলির ৩২ বলে ঝটিকা ৬১ রানের দৌলতে পঞ্জাবের ইনিংস শেষ হয় পাঁচ উইকেটে ১৭৭ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শূন্য রানে মুম্বই অধিনায়ক রোহিত ফিরতেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাওয়া শুরু রিকি পন্টিংয়ের টিমের। রান পাননি অ্যারন ফিঞ্চ (৮) ও কায়রন পোলার্ডও (২০)। সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানেই শেষ হয়ে যায় মুম্বই ইনিংস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE