রিওর বাসে টিমের সঙ্গে সৃজেশের সেলফি। ছবি টুইটার
প্রশ্ন: ‘চক দে ইন্ডিয়া’-র মতো লাগছে টিমটাকে...
সৃজেশ: ঠিকই বলেছেন। আমরাও সেটাই চাই। কেউ আমাদের টিমকে বেশি গুরুত্ব দিক, আমরা চাই না। আন্ডারডগ থেকেই শুরু করতে চাই। চক দে ইন্ডিয়া সিনেমাতেও মেয়েদের হকি টিমকে প্রথমে সেই ভাবে কেউ গুরুত্ব দেয়নি।
প্র: আপনার টিমে বিন্দিয়া নায়েক সর্দার সিংহ আর বিদ্যা শর্মা আপনি?
সৃজেশ: কেন? কোথায় মিল খুঁজে পেলেন (হাসতে হাসতে)...
প্র: এখানেও তো গোলকিপার-অধিনায়ক আপনি। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ প্লেয়ারের জায়গায়?
সৃজেশ: সিনেমা মনোরঞ্জনের জন্য হয়। বাস্তবের সঙ্গে কোনও মিল থাকে না।
প্র: বাস্তব থেকেই তো সিনেমা তৈরি হয়!
সৃজেশ: এই টিমে এ রকম ব্যাপার নেই। উল্টে আমাদের একতাই টিমের প্রধান শক্তি। জুনিয়র-সিনিয়রে বিন্দু মাত্র ফারাক নেই। সবচেয়ে অভিজ্ঞ সর্দার সিংহ থেকে সবচেয়ে ছোট হরমনপ্রীত সিংহ— সবাই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। একটা বড় পরিবারের মতো আমরা।
প্র: অলিম্পিক্সে ভারতীয় দলের পদক জয়ের সম্ভাবনা কতটা?
সৃজেশ: অলিম্পিক্স শুরুর আগেই আমরা আমাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি। এশিয়ান গেমসে সোনা। বিশ্ব হকি লিগে ব্রোঞ্জ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রুপো। কমনওয়েলথে রুপো। এই রেজাল্টগুলো আমাদের টিমের মনোবল আর আত্মবিশ্বাস— দু’টোই বাড়িয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে এ বার আমাদের নিয়ে প্রত্যাশাও অনেক। অলিম্পিক্সের শুরু থেকে তাই আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে। ধারাবাহিকতা।
প্র: এ বারের টিমের সঙ্গে আগের অলিম্পিক্স টিমের পার্থক্য কোথায়?
সৃজেশ: এ বারের টিমটা সবচেয়ে ফিট। আরও একটা ব্যাপার হল, সতীর্থদের মধ্যে অন্তরঙ্গতা ও পরস্পরের প্রতি আস্থা। শেষ তিন বছর ধরে আমাদের একই টিম খেলছে। সাপোর্ট স্টাফ থেকে শুরু করে টিমের মেরুদণ্ড— কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাই আমরা সবাই নিজেদের শক্তি যেমন জানি, দুর্বলতা কোথায়, সেটাও জানি।
প্র: গোলকিপারের পাশাপাশি অধিনায়ক হওয়ায় চাপ কি একটু হলেও বেশি?
সৃজেশ: আমার এটা একেবারেই কঠিন কাজ মনে হয় না। উল্টে আমি মনে করি এটা একটা বড় সম্মান। পার্থক্য হল, অন্য অধিনায়কদের মতো আমি টিমকে সামনে থেকে লিড করব না। গোলপোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে টিমকে পিছন থেকে নেতৃত্ব দেব (হাসতে হাসতে)।
প্র: তবু আপনাকে তো ভারতীয় হকি টিমের ম্যানুয়েল ন্যয়ার বলা হয়। এটা কি আপনার কাছে বাড়তি চাপের, না স্বস্তির?
সৃজেশ: একেবারেই নয়। আর এর সবচেয়ে কারণ হল, সবাই নিজেদের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে। এখানে আমার একটাই কাজ— অলিম্পিক্সে এই টিমটার মনোবল বাড়িয়ে যাওয়া। যাতে সেরার সেরা হকিটা খেলতে পারি। বাকি সব পরিকল্পনা ও স্ট্র্যাটেজি তৈরির কাজ কোচের।
প্র: গ্রুপ লিগে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ কে হতে পারে?
সৃজেশ: প্রত্যেকটা টিমই কঠিন প্রতিপক্ষ। কেননা সবাই জেতার জন্য খেলবে। কোনও একটা টিমকে আলাদা করে বাছা শক্ত। তা ছাড়া আমরা একটা একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই। এখন তাই আমাদের মাথায় আয়ারল্যান্ড। আমাদের কাছে এখন ওরাই সবচেয়ে শক্তিশালী টিম।
প্র: কী ভাবে টপকাবেন ওদের?
সৃজেশ: প্রত্যেকটা টিমের জন্য আমাদের আলাদা আলাদা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা আছে। এটা আপনাকে আমি বলতে পারব না।
প্র: এ বার থেকে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড হচ্ছে অলিম্পিক্সে...
সৃজেশ: এটা আমাদের জন্য দারুণ সুখবর। কেননা সবার ধারণা, আমরা নকআউটেই সবচেয়ে ভাল পারফর্ম করি। কিন্তু যেটা আমি আগে বললাম, আমরা আগাম ভাবতে চাই না। এক-একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই।
প্র: অলিম্পিক্স ফাইনালে উঠলে কোন টিমকে দেখতে চান না?
সৃজেশ: (মুচকি হাসি) আমরা গ্রুপ লিগেই মনোযোগ দিতে চাই।
প্র: রিওতে কোনও বিশেষ সংকল্প আছে?
সৃজেশ: লন্ডন অলিম্পিক্সের লজ্জা রিওতে ভাল পারফর্ম করে মুছে দিতে চাই। যাতে আগের অলিম্পিক্সটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যায় সবাই (লন্ডনে ম্যাচ ৬, হার ৬। গ্রুপে লাস্টবয়)।
প্র: এমন কিছু আছে যেটা বদল করতে চান এ বারের অলিম্পিক্সে?
সৃজেশ: এ বারের অলিম্পিক্সে পাকিস্তান যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। ওরা থাকলে ভাল হত। কেননা ক্রিকেট হোক কিংবা হকি— ভারত-পাক ম্যাচ মানেই ধামাকা। এই উত্তেজনাটা মিস করব।
প্র: রিওতে পদক জিতলে কী ভাবে সেলিব্রেট করবেন?
সৃজেশ: পার্টি অল নাইট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy