এ দিন বাড়ি থেকে একাই ক্রোমার খেলা দেখতে গিয়েছিলেন পূজা। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলে চলেন, ‘‘প্রথম গোলের সময় চুপ করে বসেছিলাম। কিন্তু ক্রোমার দ্বিতীয় গোলের সময় হাত মুঠো করে আকাশে ছুড়েছিলাম। তাতে এক জন মোহনবাগান সমর্থক রেগে গিয়েছিলেন। ওর দুঃখ বুঝতে পেরেই ‘সরি’ বলে দিই।’’
হবু স্বামীর করা দুই গোলের মধ্যে কোনটা সেরা তা জানতে চাইলে পূজা বলে দেন, ‘‘প্রথম গোলটা দুর্দান্ত।’’ যা শুনে আবার ক্রোমা হাসতে সুরু করে দেন। বলেন, ‘‘দেখেছেন আমাদের দু’জনের মনের মিল। আমিও প্রথম গোলটা করে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। আসলে আমি কাটিয়ে গোল করতে ভালবাসি। ওই গোলটাও শিল্টনকে কাটিয়ে করা।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আমার প্রিয় খেলোয়াড় মেসি। ওঁর মতো কাটিয়ে গোল করতে পারলে দারুণ লাগে।’’
দু’বছর আগে কলকাতা লিগ খেলে গিয়েছিলেন মোহনবাগানের হয়ে। কিন্তু সেই বছরেই আই লিগে আনসুমানা ক্রোমাকে ছেড়ে দিয়েছিল মোহনবাগান। লাইবেরিয়া থেকে কলকাতায় খেলতে আসা ফুটবলার মনের দুঃখে চলে গিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলে। কিন্তু সবুজ-মেরুন জার্সির প্রতি তাঁর ভালবাসা যায়নি। যা সোমবার দেখা গেল মোহনবাগান মাঠে।
খেলা শেষে ক্রোমার গলায় উচ্ছ্বাসের বদলে ছিল বেদনার সুর। সবুজ-মেরুন সমর্থকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, নমস্কার জানিয়ে মাঠ ছাড়লেন ‘জয় মোহনবাগান’ স্লোগান দিতে দিতে। গোল করেও উচ্ছ্বাস দেখাননি। করেননি উৎসবও। দু’বারই গ্যালারির দিকে ফিরে দুই হাত জোড় করে নমস্কারের ভঙ্গিতে চুপ করে তাকিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে তাঁকে পিয়ারলেস কোচ জহর দাস যখন তুলে নিচ্ছেন, তখন গোটা মাঠ উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেয় ক্রোমার জন্য। বাড়ি ফেরার সময়েও ক্রোমার জন্য করতালি বন্যা মোহনবাগানে। যা দেখে আবেগাপ্লুত ক্রোমা বলে দেন, ‘‘মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করলে কষ্ট হয়। আমার হৃদয় জুড়ে মোহনবাগান। এই ক্লাবকে ভালবাসি।’’