আন্তোনিও লোপেজ হাবাস বদলাননি। ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মেজাজ, জেদ একই রকম রয়ে গিয়েছে। সেটা মনে হয় আরও বেড়ে যাচ্ছে আটলেটিকো দে কলকাতার বিরুদ্ধে খেলতে নামলেই।
পুণেতে যখন খেলতে গিয়েছিলেন হোসে মলিনারা, তখন ম্যাচের আগে হিউম-পস্টিগাদের মুখোমুখি হবেন না বলে নিজেদের স্টেডিয়ামে অনুশীলনই করেননি হাবাস। ম্যাচের আগের দিন টিম নিয়ে চলে গিয়েছিলেন দূরের একটি মাঠে। সাংবাদিক সম্মেলনেও এসেছিলেন নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে। কলকাতাকে এড়াবেন বলে।
কলকাতায় খেলতে এসেও সেই মনোভাবের বদল ঘটল না। নিজেরা রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে, কলকাতাকে হাবাস বাধ্য করলেন বিধাননগরের মাঠে সরে যেতে।
এটিকে ছেড়ে যাওয়ার পর শহরে প্রথম পা দিলেন বুধবার রাতে। বিমানে ওঠার আগেই অবশ্য অনুশীলনের এমন একটা সময় বাছলেন আরাতাদের কোচ যে, যাতে মলিনারা আজ বৃহস্পতিবার অনুশীলন করতে না পারেন নিজেদের স্টেডিয়ামে। শেষ পর্যন্ত নিজেদের মাঠ থেকে উৎখাত হয়ে অন্য মাঠে যেতে হচ্ছে দ্যুতি-দেবজিৎদের। চাপে নয়, সৌজন্যের খাতিরে এটিকে টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের অনুশীলন মরসুমে প্রথম বার ম্যাচের আগের দিন সল্টলেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেও, হাবাসের এই মনোভাবে বিরক্ত সবাই। শোনা যাচ্ছে এতে না কি তেতে গিয়েছেন কলকাতার ফুটবলার এবং কোচও। মলিনা গুরুত্বহীন ম্যাচে কিছু ফুটবলারকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। সেই ভাবনার বদল ঘটলেও ঘটতে পারে।
হাবাসের টিম এফসি পুণে সিটি এ বারের আই এস এলের শেষ চারে উঠতে পারেনি। বিদায় নিয়েছে। তা সত্ত্বেও জেদ করে দুপুর তিনটে পঁয়তাল্লিশ থেকে এক ঘণ্টার জন্য মাঠ চেয়ে এ দিন সকাল থেকেই চাপ দিতে থাকে পুণে। আগের প্রায় সব কটি ঘরের ম্যাচে তিনটে থেকে চারটে পর্যন্ত অর্ণব-বোরহারা অনুশীলন করে এসেছেন স্টেডিয়ামে। ফলে সকাল থেকেই মেল চালাচালি শুরু হয়ে যায় আই লিগ সংগঠক এবং পুণের। এটিকে কর্তারা এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও মুম্বইতে ফোন করে জানা গেল, হাবাস এতটাই জেদ ধরে ছিলেন যে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এটিকে-কেই সরে যেতে হয় অন্য মাঠে। কারণ, দু’দলের অনুশীলনের সময় অনেকটাই মিলে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। সংগঠকদের পক্ষ থেকে কলকাতাকে না কি বলা হয়েছিল দুপুর একটা থেকে রবীন্দ্র সরোবরে অনুশীলন করতে। মলিনা রাজি হননি।
মাঠ পেয়ে গেলেও হাবাসদের অবশ্য দুর্ভোগ পোয়াতে হয় বিমানে কলকাতায় আসার সময়। প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে এ দিন রাতে শহরে নামে পুণে। অন্য দলগুলি বাইপাসের পাঁচ তারা হোটেলে উঠলেও পুণে উঠেছে ধর্মতলার কাছের একটি হোটেলে। মাঠ এবং হোটেলের অঞ্চল বদল থেকে স্পষ্ট তাঁর দল টুনার্মেন্ট থেকে বিদায় নিলেও পুণের স্প্যানিশ কোচ ম্যাচটাকে ‘দেখিয়ে দেওয়ার ম্যাচ’ হিসাবে দেখছেন। পুণেতে ঘরের মাঠে হারিয়েছিলেন কলকাতাকে, মলিনাদের মাঠে এসেও সেই ধারাই বজায় রাখতে চান তিনি।
হাবাসের সঙ্গে এমনিতে মাদ্রিদে থাকার সময় থেকেই সখ্য রয়েছে মলিনার। সেখানে দু’জনে একসময় একই বাড়িতে থাকতেন দু’জনেই। কিন্তু পেশাদার জগতে ইগো যে কতটা প্রভাব ফেলে হাবাসের মনোভাবেই সেটা প্রমাণিত। এ দিন মাঠ নিয়ে যা হল তাতে নরম মলিনাও মত বদলাতে চলেছেন বলে খবর। এটিকের কয়েকজন ফুটবলারের তিনটে করে হলুদ কার্ড আছে। সে কথা মাথায় রেখেই টিমে রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের অনেককে খেলাবেন ঠিক করে রেখেছেন মলিনা। কিন্তু বিকেলে বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে পস্টিগাদের অনুশীলনের পর মলিনা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ম্যাচটা জিততে চান। সে কথা ভেবেই নামাবেন টিম। শেষ চারে গেলেও এক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
এ দিকে মলিনা প্রথম বছর এসেই টিমকে শেষ চারে তোলায় খুশি এটিকের টিম ম্যানেজমেন্ট। সব ঠিকঠাক চললে তাঁকে পরের মরসুমেও রেখে দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন তাঁরা।
আজ আসছেন বুকেনিয়া: উগান্ডার ডিফেন্ডার ইভান বুকেনিয়া আজ বৃহস্পতিবার সকালেই শহরে চলে আসছেন। ছ’ ফুট সাড়ে তিন ইঞ্চির এই ডিফেন্ডারকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আশাবাদী। তবে বুকেনিয়ার সঙ্গে চুক্তি করার আগে তাঁর ফিটনেস টেস্ট নেবে ক্লাব। সেই টেস্টে পাস করলেই লাল-হলুদের জার্সি পরতে পারবেন বুকেনিয়া। এ দিকে বুধবার আইএফএ-তে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকেও দুই প্রধানের চার কর্তার (ইস্টবেঙ্গলের দেবব্রত সরকার ও কল্যাণ মজুমদার এবং মোহনবাগানে দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসু) বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারল না আইএফএ। বিভিন্ন সময়ে এই কর্তারা আইএফএ-র বিরুদ্ধে নানা বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। শো-কজও করা হয়েছিল। সবাই উত্তর পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু চার কর্তার বক্তব্যের ফুটেজ দেখা যায়নি বলে এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy