Advertisement
E-Paper

ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার হুমকি ক্ষুব্ধ আর্মান্দোর, সুভাষকে শর্ত দেওয়া হল মোহনবাগানে

ডার্বি ম্যাচ হারলে সেই দলের কোচকে নিয়ে টানাপড়েন চলেই। মোহনবাগান টিডি সুভাষ ভৌমিক তাই রবিবারের হারের পর কাঠগড়ায়। কলকাতা লিগের বাকি ম্যাচ না জিতলে সমস্যায় পড়তে হবে, সভায় ডেকে মঙ্গলবার এই ইঙ্গিত তাঁকে দিয়ে দিয়েছেন কর্তারা। কিন্তু দুর্দান্ত ভাবে ডার্বি জেতার পর যে কোচের স্বস্তিতে থাকার কথা, সেই আর্মান্দো কোলাসোও সমস্যায়। সমর্থকদের আচরণে এত বিরক্ত তিনি যে মঙ্গলবার অনুশীলনের পর বলে দিয়েছেন, এ রকম চললে কলকাতা লিগ শেষ হওয়ার পর আর কোচিংই করবেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৩
প্র্যাকটিসে ফুটবলারদের কি নতুন টোটকা সুভাষ ভৌমিকের?

প্র্যাকটিসে ফুটবলারদের কি নতুন টোটকা সুভাষ ভৌমিকের?

ডার্বি ম্যাচ হারলে সেই দলের কোচকে নিয়ে টানাপড়েন চলেই। মোহনবাগান টিডি সুভাষ ভৌমিক তাই রবিবারের হারের পর কাঠগড়ায়। কলকাতা লিগের বাকি ম্যাচ না জিতলে সমস্যায় পড়তে হবে, সভায় ডেকে মঙ্গলবার এই ইঙ্গিত তাঁকে দিয়ে দিয়েছেন কর্তারা।

কিন্তু দুর্দান্ত ভাবে ডার্বি জেতার পর যে কোচের স্বস্তিতে থাকার কথা, সেই আর্মান্দো কোলাসোও সমস্যায়। সমর্থকদের আচরণে এত বিরক্ত তিনি যে মঙ্গলবার অনুশীলনের পর বলে দিয়েছেন, এ রকম চললে কলকাতা লিগ শেষ হওয়ার পর আর কোচিংই করবেন না। কোচের পদ ছেড়ে ফিরে যাবেন গোয়ায়!

“যদি একটা ম্যাচ ড্র করলে বা হারলেই সমর্থকরা মর্গ্যান, মর্গ্যান স্লোগান তোলে, তা হলে সমর্থকরাই কোচ বেছে আনুক। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ক্লাব। ওরাই কোচ ঠিক করুক। আমি কলকাতা লিগ শেষ হলে গোয়া চলে যাব। আর ফিরব না।” কাল বৃহস্পতিবার আর্মি একাদশের বিরুদ্ধে লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে হবে। তার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদ কোচ রীতিমতো বিস্ফোরক। ডার্বি জেতার রেশ দূরে সরিয়ে দিয়ে তাঁর মন্তব্য, “সমর্থকরা ফুটবলের কী বোঝে? কেউ একটা পাস ভুল করলেই যে ভাবে গালাগালি দেওয়া হয় সেটা মানতে পারি না। কর্তারা তো আমার সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করতে চাইছেন। ফুটবলারদের নিয়েও কোনও সমস্যা নেই। ”

আর্মান্দো রেগে গিয়ে এ-ও বলছেন, “পয়সা নিয়ে বেশ কিছু সমর্থক মর্গ্যানের নামে ব্যানার তৈরি করে আনছে। গালাগালি করছে। আরে, আমার নিজের কি আর নতুন করে প্রমাণ করার কিছু আছে? এ সব চলে বলেই কলকাতায় আই লিগ আসে না। আর কলকাতা লিগ কখনও আমার লক্ষ্যের তালিকায় ছিল না। ওটা নিয়ে মাথাও ঘামাচ্ছি না।” কিন্তু গোয়ার বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পর কেন হঠাৎ এমন বদলে গেলেন তৃপ্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ? জল্পনা শুরু হয়েছে ময়দানে। অনেকেই মনে করছেন, ইন্ডিয়ান সুপার লিগ খেলতে চলে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ১৬ ফুটবলার। ফলে র্যান্টি-ডুডু-বার্তোস এবং জুনিয়র ফুটবলার নিয়ে এ বার টিম তৈরি করতে হবে তাঁকে। লিগে কোনও অঘটন ঘটলে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্যই আগাম সতর্কতা হিসাবে এ সব আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলছেন আর্মান্দো। আবার কেউ কেউ বলছেন, আবেগ এবং ট্রেভর মর্গ্যান সম্পর্কে পুরনো রাগ থেকে এ সব মন্তব্যের উৎপত্তি। এবং সে জন্য এমন একটা সময় তিনি বেছে নিয়েছেন যখন তাঁর সাফল্য নিয়ে হইচই হচ্ছে লাল-হলুদে।

ডার্বি জেতার পর সবাইকে চমকে দিয়ে আর্মান্দো ‘ছেড়ে চলে যাওয়ার’ ‘হুমকি’ দিলেও সুভাষের অবশ্য সেই সুযোগ নেই। বরং তাঁর সঙ্গে সভা করে মোহন-কর্তারা বুঝিয়ে দিলেন, কলকাতা লিগের পরের পাঁচটি ম্যাচই লাইফ লাইন তাঁর। সর্বশক্তি দিয়ে ওই ম্যাচগুলো জেতার জন্য বলা হয়েছে তাঁকে। অর্থসচিব দেবাশিস দত্তের অফিসে এ দিন বিকেলে টেকনিক্যাল কমিটির তিন সদস্য শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, কম্পটন দত্ত এবং সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে সভায় বসেন কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং ফুটবল সচিব উত্তম সাহাও। কেন পরপর দুটো বড় ম্যাচে (মহমেডান এবং ইস্টবেঙ্গল) টিম হারল, তা জানতে চাওয়া হয় টিডি সুভাষের কাছে। ঠিক হয়, সব ম্যাচের আগে এবং পরে টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে সেই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করতেই হবে সুভাষকে। মোহন-টিডি তা মেনেও নেন।


কোলাসোর মুখে অসন্তোষের ছায়া। মঙ্গলবার।

আর্মান্দো এবং সুভাষের দুই বিপরীতধর্মী অবস্থান দেখে দুই প্রধানকে তিনটি আই লিগ দেওয়া দুই কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য এবং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বিস্মিত। দু’জনেই আর্মান্দোর মনোভাব দেখে আক্রমণাত্মক। আবার দু’জনেই সুভাষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। “এটা গোয়া নয়। কলকাতায় কোচিং করতে এলে এ সব শুনতেই হবে। এখানে জিতলে মালা, হারলে জুতো। এটাই কলকাতা ফুটবলের ট্র্যাডিশন। সব দেশেই এটা হয়। আমারও তো গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে অনেক বার। প্রচুর মালার সঙ্গে গালাগালি, স্লোগানও শুনতে হয়েছে। এ সব নিয়েই আই লিগ জিতেছি,” বলে দেন মোহনবাগানকে দু’বার আই লিগ দেওয়া সুব্রত। যাঁর টিম টালিগঞ্জ অগ্রগামী এখন লিগ শীর্ষে। সুব্রতর মতো কথা বললেন মনোরঞ্জনও। ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ দেওয়া কোচ বললেন, “সমর্থকদের কথায় কান দিলে কলকাতায় কোচিংই করা যাবে না। ওকে তো কর্তারা কিছু বলেননি। সমর্থকদের কথায় কেন উনি কান দিতে যাচ্ছেন? এখানে কোচিং করতে হলে এ সব শুনতেই হবে। এর মধ্যেই ট্রফি আনতে হবে।”

দুই ভট্টাচার্য সুব্রত এবং মনোরঞ্জন অবশ্য হেরে বেকায়দায় পড়ে যাওয়া সুভাষের পাশে। সুব্রত বললেন, “আমাকে যখন অন্যায় ভাবে বাদ দেওয়া হল, ভোম্বলদা কখনও কিছু বলেনি। কিন্তু আমি মনে করি ওকে আরও সুযোগ দেওয়া উচিত।” আর মনোরঞ্জন বললেন, “পাঁচটা ম্যাচ সবে হয়েছে। কর্তাদেরও সুভাষের উপর আরও আস্থা এবং ধৈর্য রাখা উচিত। এখনই সরানো ঠিক নয়।”

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

east bengal armando subhash mohanbagan durby match football sports news online sports news threatens leave condition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy