দুরন্ত: আগ্রাসী মেজাজে পুজারা। শুক্রবার হেডিংলেতে। রয়টার্স
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কী ভাবে ফিরে আসতে হয়, তা জানে এই ভারতীয় দল। হেডিংলেতে প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে অলআউট হওয়ার বিষয়টি যে নিছক একটা দুর্ঘটনা, তা দ্বিতীয় ইনিংসে প্রমাণ করল ভারত।
এই দলই অস্ট্রেলিয়ায় দিন রাতের টেস্টে ৩৬ রানে অলআউট হয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে এসে টেস্ট সিরিজ় জেতে। ২০০৩ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১২৫ রানে শেষ হয়ে যায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল। ৯ উইকেটে সেই ম্যাচ হেরেও ফাইনাল খেলেছিল ভারত। লড়াই করে ফেরার রীতি ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কৃতিতে নতুন নয়। সেই ধারায় বিরাট কোহালির দল যেন
অন্যতম পথপ্রদর্শক।
শুক্রবার হেডিংলেতে প্রথম আধ ঘণ্টার মধ্যেই ইংল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট ফেলে দেওয়ার পরে আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছিল কোহালিকে। সমান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইনিংস শুরু করে রোহিত শর্মা এবং কে এল রাহুল।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগের বল পর্যন্ত ওপেনিং জুটি টিকে যাওয়ায় নতুন বলের আতঙ্ক কাটিয়ে ফেলে ভারত। মাত্র আট রান করে রাহুল ফিরে গেলেও যে ৫৪টি বল খেলে দিয়েছে, পরিস্থিতির বিচারে তা ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রোহিত ও রাহুলের ওপেনিং জুটির লড়াই ছড়িয়ে পড়ে দলের বাকিদের মধ্যেও। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে চেতেশ্বর পুজারা ক্রিজে এসে প্রায় একশো স্ট্রাইক রেট রেখে ইনিংস সাজাতে শুরু করে। শেষ পাঁচ ইনিংসের সঙ্গে ওর এই ইনিংসের যে কতটা তফাত, তার প্রভাব দেখা গেল ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ে।
চা-বিরতির আগে দু’ঘণ্টায় ৮৬ রান যোগ করে রোহিত-পুজারা জুটি। ক্রেগ ওভার্টনকে পুল করে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে পুজারা। এমনকি অলি রবিনসনকে আপার কাট করে বিস্মিত করে ভারতীয় সমর্থকদের। পুজারা দেখিয়ে দিল, প্রয়োজনে সে কতটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে। দিনের শেষে দুই উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ২১৫। পুজারা অপরাজিত ৯১ রানে। কোহালি ব্যাট করছে ৪৫ রানে। এখনও ১৩৯ রানে পিছিয়ে ভারত। তবুও বলা যেতেই পারে, ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়নি বিরাটরা। চতুর্থ দিন প্রথম এক ঘণ্টায় দ্বিতীয় নতুন বলে সামলে দিতে পারলে লর্ডস টেস্টের মতোই ঘাবড়ে যাবে ইংল্যান্ড।
জো রুটদের দেশে এই টেস্ট সিরিজ় তুলে ধরল ‘হিটম্যান’-এর আরও একটি রূপ। টেস্টে ওকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত কেন রবি শাস্ত্রী নিয়েছিল, তা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। রোহিতের ব্যাটিং মন দিয়ে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, শরীরের কাছে বল না এলে ও ব্যাট বাড়াচ্ছে না। জেমস অ্যান্ডারসন ও ক্রেগ ওভার্টন বেশ কয়েক বার চেষ্টা করেছে ওর শরীরের কাছ থেকে বল বাইরের দিকে বার করার। সেই প্রলোভনে পা দেয়নি রোহিত। হুক ও পুল শটও খেলেছে নীচের দিকে। অলি রবিনসনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে না গেলে এ দিনই হয়তো বিদেশের মাঠে প্রথম সেঞ্চুরি আসত ওর ব্যাটে।
স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিরাট কোহালিও। জেমস অ্যান্ডারসনের আতঙ্ক কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠেছে ও। হেডিংলে দেখতে শুরু করেছে বিরাট-দাপট। চতুর্থ দিন সকালে হাফসেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করতে পারলে পুরনো মেজাজেই কোহালিকে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy