Advertisement
E-Paper

ডাম্পার চালকের রুপোজয়ী মেয়ের এ বার নতুন শপথ

মঙ্গলবার সকালে আর ডাম্পার নিয়ে কয়লা খাদানে যাননি বছর পঞ্চান্নর প্রৌঢ় জিতেন্দ্রনারায়ণ সিংহ। সকালে পুজো দিয়ে বেলা এগারোটা নাগাদ টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন এশিয়ান গেমসে মেয়ের তিরন্দাজি ফাইনাল দেখতে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৬:৩৩
সফল: এশিয়া়েড তিরন্দাজিতে রুপো জিতে মধুমিতা। এএফপি

সফল: এশিয়া়েড তিরন্দাজিতে রুপো জিতে মধুমিতা। এএফপি

মঙ্গলবার সকালে আর ডাম্পার নিয়ে কয়লা খাদানে যাননি বছর পঞ্চান্নর প্রৌঢ় জিতেন্দ্রনারায়ণ সিংহ। সকালে পুজো দিয়ে বেলা এগারোটা নাগাদ টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন এশিয়ান গেমসে মেয়ের তিরন্দাজি ফাইনাল দেখতে। রুপো পাওয়া যে নিশ্চিত, তা জেনেছিলেন সোমবারই। স্বপ্ন দেখছিলেন, সোনার পদক গলায় ঝুলিয়ে মেয়ে দাঁড়াবে বিজয়ী মঞ্চে।

শুধু জিতেন্দ্র নারায়ণই নন, প্রিয় শিষ্যাকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন কোচ প্রকাশও। সকাল এগারোটা নাগাদ টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন তিনিও। টিভিতে শিষ্যার তিরন্দাজি দেখতে দেখতে তাঁরও মনে হয়েছিল, সোনা পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু শেষ রাউন্ডে গিয়ে সব কেমন যেন ওলটপালট হয়ে গেল!

মহিলাদের কম্পাউন্ড আর্চারির ফাইনালে উঠে রুপো নিশ্চিত করেছিলেন ঝাড়খণ্ডের মেয়ে মধুমিতা কুমারী। সেই রুপোই জুটল তাঁদের দলের। দক্ষিণ কোরিয়ার মেয়েরা তাঁদের হারিয়ে নিয়ে গেলেন এশিয়াডের সোনা। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই হতাশা কাটিয়ে উঠে তিনি বাবা জিতেন্দ্রনারায়ণকে ফোন করে বলেন, ‘‘এ বার হল না সোনা। কিন্তু পরের বার পেতেই হবে।’’

জিতেন্দ্রনারায়ণের বড় ছেলে চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘এশিয়ান গেমস থেকে দেশের হয়ে পদক জিতে গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে জাকার্তায় গিয়েছিল বোন। আজ আমরা সবাই গ্রামে একে অপরকে মিষ্টি বিলাবো।’’

রামগড় জেলার পশ্চিম বোকারোর প্রত্যন্ত গ্রাম মুকুন্দবেড়া। সেখানেই ডাম্পার চালক জিতেন্দ্রনারায়ণের সংসার। কোনও রকমে পড়াশোনা শেষ করে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়াই যেখানে প্রথা, সেখানে বছর দশকের মেয়েটা তির-ধনুক হাতে পণ করেছিল, তাঁকে ভাল তিরন্দাজ হতে হবে। মধুমিতার দাদা চন্দ্র বলেন, ‘‘আমার চার বোন। পরিবারের কেউ কোনওদিন তির ধনুক ছোঁয়নি। ভাল তির ধনুকের তো অনেক দাম। কোথা থেকে কিনে দেবে বাবা?’’

কিন্তু মধুমিতা ঠিকই করে ফেলেন সে তিরন্দাজ হবেই। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই মধুমিতা স্কুলের ছুটির পরে চার কিলোমিটার হেঁটে যেতেন তিরন্দাজির প্রশিক্ষণ নিতে। চন্দ্র বলেন, ‘‘কোনও প্রশিক্ষক ছিল না। ছিল না তিরন্দাজির ভাল সামগ্রীও। রোজ আট কিলোমিটার যাতায়াতে ওকে ক্লান্ত হতে দেখিনি।’’ চন্দ্র জানান, স্কুলে তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় সিল্লির বিরসা মুণ্ডা তিরন্দাজি অ্যাকাডেমির কোচ প্রকাশবাবুর নজরে পড়ে যান মধুমিতা।

Asiad Archery Silver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy