Advertisement
E-Paper

জোকারের হারের দিনে রেকর্ড ফেডেরারের

১২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের মালিক তিরিশ বছর বয়সি জকোভিচের যখন এই অবস্থা, তখন ছত্রিশের ফেডেরার ফের স্ট্রেট সেটে ১৪ নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কোয়ার্টার ফাইনালে ওটা নিশ্চিত করলেন টুর্নামেন্টে নিজের মসৃণ গতিটা বজায় রেখেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৩
এ ভাবেই কোর্টে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন জকোভিচ। ছবি: এএফপি

এ ভাবেই কোর্টে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন জকোভিচ। ছবি: এএফপি

চোটগুলোই কাল হল নোভাক জকোভিচের।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে জমজমাট জোকার-রজার মানে তাঁর সঙ্গে রজার ফেডেরারের লড়াইয়ের সম্ভাবনা তাই তৈরিই করতে পারলেন না সার্বিয়ার প্রাক্তন এক নম্বর। প্রি-কোয়ার্টার থেকেই বিদায় নিলেন তিনি স্ট্রেট সেটে হেরে।

ছ’মাস পরে চোট থেকে ফিরেই প্রথম টুর্নামেন্টে নেমে টানা চারটে রাউন্ড খেলার ধকলটা জকোভিচের খেলাতেই স্পষ্ট ফুটে উঠছিল। বলের নাগাল পেতে শরীর স্ট্রেচ করলেই ব্যথা হচ্ছিল তাঁর। দ্বিতীয় সেটের গোড়ার দিকে তাঁকে কোর্টে চিকিৎসককে শুশ্রূষার জন্য ডাকতেও হয়। ম্যাচের পরে সেটা স্বীকার করে নেন জকোভিচ। ‘‘প্রথম সেটের শেষের দিক থেকেই ব্যথা হচ্ছিল। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়তে হয়েছে এটার সঙ্গে।’’ অবশ্য নিজের চোট নিয়েই শুধু নয়, প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রশংসাও করেন তিনি। ‘‘চোট নিয়ে বেশি কথা বলে ওর জয়ের কৃতিত্বকে অন্য ভাবে দেখাতে চাই না। ও আজ দারুণ খেলেছে, কৃতিত্বটা ওর পুরোপুরি প্রাপ্য।’’

জকোভিচের ঘাতক কোরিয়ার চং হেয়ান। যিনি টেনিস খেলা শুরু করেছিলেন ছোটবেলায় দৃষ্টিশক্তির সমস্যা মোকাবিলার জন্য। খেলেনও চশমা পড়েই। ২১ বছর বয়সে কোরিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার রেকর্ডটাও সেরে ফেলে অভিভূত কোরিয়ার এক নম্বর তারকা। দু’বছর আগে তাঁকেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে প্রথম রাউন্ডে জকোভিচ স্ট্রেট সেটে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বদলাটা এ ভাবে আসবে স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তিনি। ‘‘ছোটবেলা থেকেই নোভাকের অনুকরণ করার চেষ্টা করে এসেছি। নোভাক আমার আদর্শ। বিশ্বাসই করতে পারছি না। এত দিনে স্বপ্ন সত্যি হল,’’ বিস্ময়ের ঘোরটা যেন ম্যাচের পরে কথা বলার সময়ও কাটছিল না চং হেয়ানের।

১২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের মালিক তিরিশ বছর বয়সি জকোভিচের যখন এই অবস্থা, তখন ছত্রিশের ফেডেরার ফের স্ট্রেট সেটে ১৪ নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কোয়ার্টার ফাইনালে ওটা নিশ্চিত করলেন টুর্নামেন্টে নিজের মসৃণ গতিটা বজায় রেখেই। জিতলেন হাঙ্গেরির মার্টন ফুচোভিচের বিরুদ্ধে ৬-৪, ৭-৬, ৬-২। ২৫ বছর বয়সি প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে একই সঙ্গে ৫২ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ আটে ওঠার রেকর্ড করলেন সুইস মহাতারকা। ওপেন যুগে যা আর কারও নেই।

২০ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার দৌড়ে থাকা ফেডেরার একই সঙ্গে প্রায় তিন দশকে বয়স্কতম গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ার্টার ফাইনালিস্টের নজিরও গড়ে ফেললেন। ১৯৯১ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে শেষ বার যে নজির গড়েছিলেন জিমি কোনর্স (৩৯ বছর বয়সে)।

কোয়ার্টার ফাইনালে ফেডেরারের মুখোমুখি টমাস বের্ডিচ। টুর্নামেন্টের ১৯তম বাছাইয়ের বিরুদ্ধে ফে়ডেরারের মুখোমুখি লড়াইয়ের রেকর্ড ১৯-৬। অঘটন ঘটাতে পারবেন তিনি ফেডেরারের বিরুদ্ধে? বের্ডিচকে প্রশ্ন করতে তিনি উল্টে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘রজারের বিরুদ্ধে সফল হওয়ার কোনও টোটকা যদি জানা থাকে আমায় বলুন না।’’

প্রতিদ্বন্দ্বীর ঘুম উড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলেও ফেডেরার রয়েছেন তুরীয় মেজাজে। হাসছেন, মজা করছেন আর কোর্টে দ্রুত নিখুঁত ভাবে একের পরে এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। মেলবোর্ন পার্কে এ দিন প্রায় ছ’টা নাগাদ ম্যাচটা শেষ হওয়ার পরে ধারাভাষ্যকার জিম কুরিয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিতে দিতে রজারকে কিংবদন্তি এর পরে জমিয়ে ডিনারের পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইছিলেন। রজারের স্ত্রী মিরকা ততক্ষণে স্টেডিয়াম ছেড়ে উঠে পড়েছেন। মজা করে ফেডেরার বললেন, ‘‘রাত ন’টা পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হবে। এর পরে মিরকার মুড ভাল থাকলে হয়তো ডিনারে যেতে পারি। কিন্তু ও তো এর মধ্যেই চলে গেল। হয়তো ওর অন্য কোনও পরিকল্পনা রয়েছে।’’

অপর কোয়ার্টার ফাইনালে জকোভিচের ঘাতক চং-এর মুখোমুখি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস স্যান্ডগ্রিন। অবাছাই স্যান্ডগ্রিন পঞ্চম বাছাই অস্ট্রিয়ার ডমিনিক থিয়েমকে পাঁচ সেটের তুমুল লড়াইয়ে হারিয়ে অঘটন ঘটান। মানেটা পরিষ্কার। বের্ডিচের চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারলে ফেডেরারের সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও এক অবাছাই। রজার-জোকার না হোক রজার-নাদাল দ্বৈরথের সম্ভাবনাটা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে বলাই যায়।

Australian Open tennis Novak Djokovic Chung Hyeon Injury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy