Advertisement
E-Paper

মা খুঁজছেন পাত্রী, বোল্ট ছুটছেন নতুন বিশ্বরেকর্ডের দিকে

১০০ মিটারে টানা তিন বার সোনা। বুক চাপড়ে ফিনিশ লাইনে পৌঁছনো। বিদ্যুৎ সেলিব্রেশনে গ্যালারি মাতানো। ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তোলা। অলিম্পিক্স এখন বোল্ট-জ্বরে আক্রান্ত। তিনি তো শুধু ট্র্যাকের অবিসংবাদিত নায়ক নন। বরং অ্যাথলেটিক্সের পোস্টার বয়। যিনি কোনও ইভেন্টে নামা মানেই আগেভাগে গ্যালারি ভরে যাবে। ভক্তরা পিছনে ধাওয়া করবে অটোগ্রাফের জন্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৫৫
দুশো মিটারের হিটে সবার আগে। ছবি: রয়টার্স

দুশো মিটারের হিটে সবার আগে। ছবি: রয়টার্স

১০০ মিটারে টানা তিন বার সোনা। বুক চাপড়ে ফিনিশ লাইনে পৌঁছনো। বিদ্যুৎ সেলিব্রেশনে গ্যালারি মাতানো। ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তোলা। অলিম্পিক্স এখন বোল্ট-জ্বরে আক্রান্ত।

তিনি তো শুধু ট্র্যাকের অবিসংবাদিত নায়ক নন। বরং অ্যাথলেটিক্সের পোস্টার বয়। যিনি কোনও ইভেন্টে নামা মানেই আগেভাগে গ্যালারি ভরে যাবে। ভক্তরা পিছনে ধাওয়া করবে অটোগ্রাফের জন্য।

কিন্তু রিওর মধ্যমণি একটু হলেও যেন হতাশ। সোনা জিতেছেন। ‘ট্রিপল ট্রিপল’ করার স্বপ্নও টিকে রয়েছে। তা হলে মনমরা হওয়ার কারণটা কী? উসেইন বোল্টের মতে, একশো মিটারে তাঁর সেরাটা তিনি রিওকে দেখাতে পারেননি। ১০০ মিটারের যে বোল্টকে রিও দেখেছে তাঁর যে ক্ষমতা আছে আরও অবিশ্বাস্য সময়ে রেস শেষ করার। ক্ষমতা আছে এখনও বিশ্বরেকর্ড করার। জীবনের শেষ অলিম্পিক্সেও নিজের গড়া রেকর্ডই চুরমার করার ক্ষমতা আছে দুটো পায়ের। ১০০ মিটারে পারেননি। তাই এখন ২০০ মিটারকেই পাখির চোখ করছেন জামাইকান মহাতারকা।

যে রেসে শুধু সোনা জিতেই তৃপ্তি হবে না তাঁর। বরং সঙ্গে নিজের ১৯.১৯ সেকেন্ডের বিশ্বরেকর্ডও ভাঙতে চান বোল্ট। ‘‘আমি ২০০ মিটার আঠারো সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করতে চাই। এখনও অনেক কিছু দেখা বাকি আছে সবার,’’ বলছেন বিশ্বের দ্রুততম মানব।

১০০ মিটার জিতলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, বোল্টের সেরা পারফরম্যান্সের মধ্যে রাখা যাবে না সেই দৌড়কে। কারণ বোল্ট মানে শুধু সোনা জেতা না। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙা। বোল্টও মনে করছেন, ২০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ড তৈরি করা তাঁর কাছে সমস্যার কিছু নয়। শুধু প্রথম রাউন্ডের পর পর্যাপ্ত ঘুম লাগবে। বোল্ট বলছেন, ‘‘প্রথম রাউন্ডের পর যদি ভাল ঘুমোতে পারি তা হলে ২০০ মিটারে রেকর্ড ভাঙতে পারব। কিন্তু মুখে বলার থেকেও ট্র্যাকে নেমে দেখাতে চাই।’’

ট্র্যাকের বাইরেও অবশ্য উসেইন বোল্টের একটা জীবন আছে। সেই জীবনে তিনি নিছকই একজন ফ্যান। ফুটবল দেখতে ভালবাসেন যিনি। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কট্টর ভক্ত হিসেবে যিনি পরিচিত ক্রীড়ামহলে। ১০০ মিটার সোনা জিতেও তো বোল্টের মন পড়ে ছিল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। যিনি জানতে চেয়েছিলেন, বোর্নেমাউথের বিরুদ্ধে প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ক্লাবের স্কোর? বোল্ট বলছেন, ‘‘শুনে ভাল লাগল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড জিতেছে। আশা করছি এই মরসুম ভাল কাটবে।’’ তবে তাঁর প্রিয় ক্লাবের তালিকায় এখন ইউনাইটেডের সঙ্গেও যোগ হয়েছে আর একটা ক্লাবও। স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদ। কারণ, দলের সেই সাত নম্বর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ‘‘অবশ্যই রিয়াল মাদ্রিদকেও আমি ভালবাসি। সেই দলে রোনাল্ডো আছে বলে,’’ বলছেন বোল্ট।

ধরা হচ্ছে এটাই বোল্টের শেষ অলিম্পিক্স। ট্র্যাকের সম্রাট অনেকটা সে রকমই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। তাই তো বোল্টের মা এখন থেকেই প্ল্যান করছেন ছেলের অবসর পরবর্তী জীবন নিয়ে। যিনি চান তাঁর আদরের উসেইন বিয়ে করে সংসার করুক। দরকার পড়লে তিনি নিজেও পাত্রী খুঁজতে নেমে পড়বেন। ‘‘আমি আশা করব উসেইন বিয়ে করবে। সংসারী হবে। এটাই আমার ইচ্ছা,’’ বলছেন বোল্টের মা জেনিফার।

বিশ্বের দ্রুততম মানবের মা বলেছেন, ‘‘দারুণ লাগে ভাবতে যে বিশ্বের দ্রুততম মানুষ আমার ছেলে। ওর সৌজন্যে সাক্ষাৎকার দিতে পারি। অনেক জায়গায় ঘুরি। জীবনটাই যেন পাল্টে গিয়েছে,’’ বলছেন জেনিফার। ছেলেকে যখন ট্র্যাকে দৌড়তে দেখেন তখন যেন বিশ্বাসই করতে পারেন না, এ সেই ছোট্ট ছেলেটা— যে জুনিয়র বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের আগে ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। কিন্তু আজ সেই উসেইনই ঐতিহাসিক ট্রিপল ট্রিপল করতে আর দুটো সোনার পদক দূরে। বিশ্বাস হয় তাঁর? জেনিফার বলছেন, ‘‘সত্যি বলতে বোল্টকে ট্র্যাকে দেখলেই আমি কেঁদে ফেলি। কিন্তু সেটা খুশির কান্না।’’

স্বয়ং কিংবদন্তিও যে উচ্চাকাঙ্খী। যিনি পেলে, মহম্মদ আলির সঙ্গে এক আসনে বসতে চান। অমরত্ব চান। তাই তো বোল্ট বলছেন, ‘‘আর দুটো পদক জিতলেই আমি অমর। আর আমি সেটা করেও দেখাব।’’

Usain Bolt Rio Olympics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy