Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হ্যাটট্রিক না পেয়ে হতাশ আজহার

ম্যাচের পর উত্তেজিত আজহার বলছিলেন, ‘‘লিগের শুরুতে গোল পাচ্ছিলাম না বলে প্রচুর সমালোচনা হচ্ছিল। তাই মরিয়া ছিলাম ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। মহমেডানের বিরুদ্ধে আমার গোলে দল জেতায় দারুণ লাগছে।’’

মোহনবাগানের হয়ে জোড়া গোল আজহারউদ্দিনের। নিজস্ব চিত্র

মোহনবাগানের হয়ে জোড়া গোল আজহারউদ্দিনের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোলটা করেই গ্যালারির দিকে দৌড়লেন আজহারউদ্দিন মল্লিক। মুঠো করা ডান হাত বুকের বাঁ দিকে বারবার ঠুকছিলেন।

গত মরসুমে শিলিগুড়িতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আই লিগের ডার্বিতে বিশ্বমানের গোলের পর সবুজ-মেরুন সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু এ বছর মরসুম শুরু হওয়ার পরে হঠাৎ করেই বদলে যায় পরিস্থিতি। গোল নষ্ট করার জন্য মোহনবাগান সমর্থকদের কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে তাকে। রেনবো এসসি-র বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে তাঁকে বাদ দিয়েই দল নামিয়েছিলেন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। সোমবার মহমেডানের বিরুদ্ধে ম্যাচটাকেই যেন আজহার বেছে নিয়েছিলেন জবাব দেওয়ার জন্য।

আগের ম্যাচে আজহার কেন ছিলেন না প্রথম দলে? শঙ্করলালের ব্যাখ্যা, ‘‘ফিজিওথেরাপিস্ট জানিয়েছিলেন, আজহারের হাল্কা চোট আছে। কিন্তু ওকে সেটা জানাইনি। রেনবোর বিরুদ্ধে না খেলানোর আরও একটা কারণ ছিল। যাতে বড় ম্যাচের আগে ওর জেদ ও গোলের খিদে বাড়ে। আমার পরিকল্পনা সফল।’’ মহমেডানের বিরুদ্ধে ২২ মিনিটে শেখ ফৈয়জের গোলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সবুজ-মেরুন শিবিরে। ষোলো মিনিটের মধ্যেই মোহনবাগানকে ম্যাচে ফেরান আজহার। আর শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে জয়সূচক গোল করে বাঁচিয়ে রাখলেন সাত বছর পর কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ জয়ের স্বপ্ন।

ম্যাচের পর উত্তেজিত আজহার বলছিলেন, ‘‘লিগের শুরুতে গোল পাচ্ছিলাম না বলে প্রচুর সমালোচনা হচ্ছিল। তাই মরিয়া ছিলাম ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। মহমেডানের বিরুদ্ধে আমার গোলে দল জেতায় দারুণ লাগছে।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘একজন ফুটবলারের পক্ষে সব ম্যাচ ভাল খেলা সম্ভব নয়। কখনওসখনও পারফরম্যান্স খারাপ হতে পারে। জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই।’’ কোন গোলটা সেরা? আজহার প্রথমে বললেন, ‘‘অবশ্যই জয়ের গোল।’’ তার পরেই বললেন, ‘‘না না, প্রথম গোলটা। আমরা তখন হারছিলাম।’’

মোহনবাগানের জয়ের কাণ্ডারীর অবশ্য হতাশ হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হওয়ায়। আজহার বললেন, ‘‘এই ধরনের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার স্বপ্ন সকলেরই থাকে। ৩২ মিনিটে আমার হেড পোস্টে ধাক্কা না খেলে কিন্তু হ্যাটট্রিক হয়ে যেত।’’ সেই সঙ্গে আফসোস রেনবো এসসি-র বিরুদ্ধে আগের ম্যাচ ড্র করার। বললেন, ‘‘আগের ম্যাচটা জিতলে আমরা আর একটু ভাল জায়গায় থাকতাম।’’ তার পরেই হুঙ্কার, ‘‘পরের দু’টো ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে।’’

১৮ সেপ্টেম্বর পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ পিয়ারলেস। তার পর ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ডার্বি ২৪ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে। কল্যাণী থেকেই কি ডার্বির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল সবুজ-মেরুন শিবিরে? সতর্ক আজহার বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে পিয়ারলেসেকে হারানোই একমাত্র লক্ষ্য। তার পর ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে ভাবব।’’

উৎসবের বিকেলেও আজহারের মন খারাপ প্রিয় কোচ সঞ্জয় সেন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায়। সবুজ-মেরুন তারকার উত্থানের নেপথ্যে যে সবুজ-মেরুন কোচই। বছর দু’য়েক আগে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই) থেকে সঞ্জয়ই মোহনবাগানে এনেছিলেন প্রতিশ্রুতিমান স্ট্রাইকারকে।

মোহনবাগান: শিল্টন পাল, অরিজিৎ বাগুই (দেবব্রত রায়), কিংশুক দেবনাথ, কিংগসলে বুমনেমে, রিকি লাল্লানমওমা, নিখিল কদম (চেস্টারপল লিংডো), রেনিয়ার ফার্নান্ডেজ, শিল্টন ডি’সিলভা, আজহারউদ্দিন মল্লিক, কামো স্টিফেন বায়ি, আনসুমানা ক্রোমা (সুরচন্দ্র সিংহ)।

মহমেডান: শঙ্কর রায়, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, রানা ঘরামি, সোমতোচুকু রিচার্ড, অমিত চক্রবর্তী, কালু ওগবা, শেখ ফৈয়জ, তীর্থঙ্কর সরকার (প্রহ্লাদ রায়), দীপেন্দু দোয়ারি, জিতেন মুর্মু (মনবীর সিংহ), দিপান্দা ডিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE