Advertisement
E-Paper

গোলে ফিরলেন এ বার বলবন্তও

সাদার্ন অ্যাভেনিউয়ের দিকে দাঁড়িয়ে ছিল ওরা। বলবন্ত সিংহ সে দিকে এগোতেই ভক্তদের স্লোগান— গোল করেছে, গোল করেছে বলবন্ত ভাই।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০৪
গোল করলেন বলবন্ত সিংহও।

গোল করলেন বলবন্ত সিংহও।

আবাহনী লিমিটেড ঢাকা : মোহনবাগান

সাদার্ন অ্যাভেনিউয়ের দিকে দাঁড়িয়ে ছিল ওরা। বলবন্ত সিংহ সে দিকে এগোতেই ভক্তদের স্লোগান— গোল করেছে, গোল করেছে বলবন্ত ভাই।

পঞ্জাবের ছেলের গায়ে ততক্ষণে সেঁটে গিয়েছেন এক পুলিশ কর্মী। তাঁর আকুতি, ‘‘আবাহনী ভুলে যান। ডার্বিটা জিতিয়ে দিন।’’ শুনে মুচকি হেসে বলবন্ত ছুড়ে দেন পাল্টা প্রস্তাব, ‘‘জিতলে কিন্তু জোরে গাড়ি চালালে আর আটকাবেন না।’’ হেসে ফেলেন দু’জনেই। সবুজ-মেরুনের পঞ্জাব-ব্রিগেডের সঙ্গে বাড়ির পথ ধরেন বলবন্ত।

রবিবারের বড় ম্যাচের আগে এত ফুরফুরে মেজাজ দেখাতে চান না সনি নর্দে। নিজে গোল করলেন। করালেনও। স্টেডিয়াম ছাড়ার মুখে ডার্বিতে আপনারাই এগিয়ে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘‘না, না। ডার্বি অন্য খেলা।’’ জেজে বরং বলিউডের নায়কদের ঢঙে তর্জনিতে চাবির রিং ঘোরাতে ঘোরাতে সনির হয়ে বলে যান, ‘‘ডার্বির জন্য আমাদের মনোবল বেড়েই থাকল।’’

মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন আবার এএফসি কাপের গ্রুপের ম্যাচ ৩-১ জিতে উঠে স্বীকার করলেন আসল কথাটা। ‘‘এই ম্যাচটায় আমরা পুরো শক্তি প্রয়োগ করিনি।’’ সবুজ-মেরুন কোচ আবাহনীকে ‘পাঞ্চিং ব্যাগ’ বানিয়ে ডার্বির জন্য সারলেন এক দফা প্রস্তুতি। ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে ওপার বাংলার আবাহনীকে হারিয়ে যা পেলেন তিনি—

চনমনে সনি নর্দে: বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর আবাহনীর বিরুদ্ধেও ঝলমল করলেন সনি। ফের দেখা গেল বাঁদিক দিয়ে তিনিই সবুজ-মেরুনের স্কোরার কাম স্কিমার। একক প্রচেষ্টায় বক্সের মধ্যে জেজের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে দুরন্ত প্লেসিংয়ে গোল করলেন। ডান দিক থেকে আবাহনী বক্সে বলবন্তের ভাসিয়ে দেওয়া বল চেস্ট-ট্র্যাপ করে নামিয়ে দিলেন জেজেকে। সেই পাস থেকেই সমতায় ফেরালেন জেজে। শেষ দুই ম্যাচে মোহনবাগানের ছয় গোল হয়ে গেল সনির সহায়তার জোরেই।

নায়ক: সনি জ্বলে উঠতেই দাপট মোহনবাগানের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে কাতসুমি: আবাহনীর ৪-১-৩-২ ছকের বিরুদ্ধে শুরুতে মোহনবাগান ৪-৪-২ ছকে কাতসুমিকে উইংয়ে রেখেছিল। কিন্তু সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে বিক্রমজিতের প্রচুর মিসপাসের সুযোগ নিয়েই আবাহনীর গোলটা করে যান গ্যারেথ বেলের একদা সতীর্থ জোনাথন। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে দুই ধ্বংসাত্মক মিডিওকে পরখ করার পর দ্বিতীয়ার্ধে বিক্রমজিতকে তুলে প্রবীরকে নামান সঞ্জয়। কাতসুমিকে নিয়ে এলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে। এতে আক্রমণ ভাগে বলের জোগান বাড়ায় চাপ বাড়ে আবাহনী রক্ষণে। কাতসুমির পাস থেকেই বলবন্তের ২-১ করা। ডার্বিতে এই দুই স্ট্র্যাটেজি মিলিয়েই রণকৌশল তৈরি হতে পারে মোহনবাগানে।

লেফ্‌ট ব্যাক রাজু গায়কোয়াড়: ডান পায়ের ফুটবলার রাজু লেফ্‌ট ব্যাকে নড়বড়ে। কিন্তু শুভাশিস ফিট না হওয়ায় ডার্বির আগে এ দিন রাজুকে পুরো সময় দেখলেন সঞ্জয়। রাজুর লম্বা থ্রো বিপক্ষকে চাপে রাখবে। কিন্তু তাঁর ট্যাকল ঠিকঠাক হচ্ছে না। আবাহনীর জোনাথন এবং জীবন তাঁকেই শুরুতে নিশানা বানিয়েছিলেন। যা চিন্তার বিষয়।

বলবন্ত গোলের মধ্যে: দু’ বছর আগে ডার্বিতে সঞ্জয় সেনের একমাত্র জয় বলবন্তের গোলে। বলবন্তের ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ডাফির গোলের জন্য ছটফটানি বড় সম্পদ।

মনোবল বৃদ্ধি: বেঙ্গালুরু এবং আবাহনীর মতো প্রতিপক্ষকে হারিয়ে মনোবল অনেকটাই বাড়বে সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের। যা মানছেন সঞ্জয় সেনও। ম্যাচের মধ্যে থাকা মোহনবাগানের সুবিধে। ইস্টবেঙ্গল সেখানে ম্যাচের মধ্যে নেই চার সপ্তাহ।

সঞ্জয় অবশ্য এএফসি কাপ জিতে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে অত চিন্তাভাবনায় নারাজ। বলছেন, ‘‘ওরা আমাদের কথা ভেবে ঘুমোবে না জাগবে সেটা ওদের ব্যাপার। আমাদের মাথাব্যথা নেই।’’

মোহনবাগান: দেবজিৎ মজুমদার, সার্থক গলুই, কিংশুক দেবনাথ, এদুয়ার্দো ফেরিরা (বিক্রমজিৎ সিংহ জুনিয়র), রাজু গায়কোয়াড়, কাতসুমি ইউসা, বিক্রমজিৎ সিংহ (প্রবীর দাস), শেহনাজ সিংহ, সনি নর্দে, জেজে লালপেখলুয়া (রবিনসন সিংহ), বলবন্ত সিংহ।

Sony Norde Balwant Singh Mohun Bagan Dhaka Abahani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy