Advertisement
E-Paper

শ্রীলঙ্কা ম্যাচ জিতে ফাইনালে ভারতের সামনে বাংলাদেশ

প্রথম বলেই উদানাকে কভার দিয়ে একটা চার মারেন মাহমুদুল্লাহ। পরের বলেই লো ফুলটস মিড উইকেটে ঠেলে দুই রান নেন। দু’বলে ছ’রান দরকার ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৬
উল্লাস: টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে দু’উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ওঠার পরে মাঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সেই নাগিন নাচ। শুক্রবার কলম্বোয়। ছবি: এএফপি

উল্লাস: টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে দু’উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ওঠার পরে মাঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সেই নাগিন নাচ। শুক্রবার কলম্বোয়। ছবি: এএফপি

ঠিক দু’বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাথা ঠান্ডা রাখতে না পেরে ভারতের বিরুদ্ধে প্রায় জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করে খলনায়ক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সে দিনের সেই ভিলেন শুক্রবার কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে হয়ে উঠলেন জয়ের নায়ক। সেই মাহমুদুল্লাহ-ই এ বার চাপের মুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেন। শুক্রবার প্রেমদাসায় তুমুল অশান্তির মধ্যে, গ্যালারির গর্জনকে তোয়াক্কা না করে শেষ তিন বলে ১২ রান করলেন ময়মনসিংহের ৩২ বছর বয়সি এই ব্যাটসম্যান। তাঁর মারা একটা চার ও একটা ছয়েই ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। দু-উইকেটে এই নাটকীয় জয়ের পরে মাঠে শুরু হল মুশফিকুরদের সমবেত নাগিন-নৃত্য।

শুক্রবার রাতে শেষ ওভার শুরু হতেই প্রেমদাসায় উত্তেজনার পারদ ওঠে চরমে। দু’দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে জ্বলে ওঠে অষান্তির আগুন। ব্যাটসম্যানদের মাথার উচ্চতায় বল তোলা সত্ত্বেও ইসুরু উদানাকে আম্পায়াররা ‘নো’ না ডাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের ডাগ আউটে থাকা ক্রিকেটাররা। ক্ষিপ্ত অধিনায়ক শাকিব আল হাসান ব্যাটসম্যানদের মাঠ থেকে ফিরে আসতেও বলেন। এই উত্তপ্ত আবহাওয়ার মধ্যেই যখন ফের খেলা শুরু হয়, তখন শেষ তিন বলে জেতার জন্য আট রান দরকার বাংলাদেশের।

প্রথম বলেই উদানাকে কভার দিয়ে একটা চার মারেন মাহমুদুল্লাহ। পরের বলেই লো ফুলটস মিড উইকেটে ঠেলে দুই রান নেন। দু’বলে ছ’রান দরকার ছিল। এ বার উদানাকে ফ্লিক করে স্কোয়ার লেগের ওপর দিয়ে সোজা গ্যালারিতে আছড়ে ফেলে ফাইনালের দরজা খুলে ফেললেন সেই মাহমুদুল্লাহ, দু’বছর আগে যাঁর ব্যর্থতা বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেয়। সেদিন শেষ তিন বলে তিন উইকেট খুইয়ে হারের মুখে ঢলে পড়েছিলেন শাকিবরা। এ দিন তিন বলে ১২ রান তুলে শাপমুক্তি ঘটালেন মাহমুদুল্লাহ।

তার পরেই শুরু হল সমবেত নাগিন-নৃত্য, আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ২১৪ রান তাড়া করে দলকে জিতিয়ে যা দেখিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তাদের বাঁ হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম নাকি এ ভাবেই তাঁর সাফল্য উদযাপন করেন। তাঁর সেই ভঙ্গিই এ বার নকল করলেন মুশফিকুর ও গোটা বাংলাদেশ দল। এ দিনের ম্যাচে যখনই শাকিবরা চাপে পড়েছেন, তখনই মাঠে ও গ্যালারিতে সেই ভঙ্গিমা নকল করে কটাক্ষ করেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার ও সমর্থকরা। এ বার তাদের মাঠেই শ্রীলঙ্কাকে ছিটকে দিয়ে সেই নাগিন-নাচ ফিরিয়ে আনলেন বাংলাদেশীরা। রবিবার নিদাহাস ট্রফির ফাইনালেও তাঁরা এই সুযোগ পান কি না, সেটাই দেখার।

উৎসব: ম্যাচ জেতানোর পরে বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ। ছবি: টুইটার।

শুক্রবার সিরিজের শেষ লিগ ম্যাচে টস জেতার পরে মুস্তাফিজুর রহমানের পেসের দাপটে শ্রীলঙ্কা শুরুতেই চাপে পড়ে যায়। ৪১-৫ থেকে শ্রীলঙ্কাকে টেনে তোলেন এই পেরেরা-জুটি কুশল (৬১) ও থিসারা (৫৮)। ৯৭ রানের এই পার্টনারশিপই শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশের সামনে ১৬০ রানের লক্ষ্য স্থির করতে সাহায্য করে। কিন্তু দু’জনের এই চেষ্টা বিফলে যায়। বাংলাদেশ দশ ওভারে ৮০-২ তোলার পরে শাকিবরা পরের পাঁচ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যান। তখন থেকেই মাহমুদুল্লার লড়াই শুরু।

এর মধ্যে শাকিব সাত রান করে আউট হয়ে যাওয়ায় চাপ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ এক দিক থেকে টিকে থেকে লড়াই চালিয়ে যান। সেই যুদ্ধই শেষ হাসি ফোটাল দেশের মানুষের মুখে।

Cricket Bangaldesh-Sri Lanka Mahmudullah India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy