শনিবার সেরি আ-তে সাম্পদোরিয়ার বিরুদ্ধে জুভেন্তাসের যে দলটা হেরে যায়, তাতে অবশ্য বুফন খেলেননি। তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, ‘‘বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি বুফন। তাই তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে।’’ কিংবদন্তি গোলকিপার মাঠে থেকে হার দেখেছেন দলের। বৃহস্পতিবার রাতে আরও এক বার ক্লাবের জার্সি গায়ে বুফনকে দেখতে মুখিয়ে থাকবেন দর্শকরা।
বুফন নিয়ে আবেগ তাঁর ভক্তদের মধ্যেই আটকে থাকেনি। প্রতিপক্ষ এক ফুটবলারের মুখেও শোনা গিয়েছে। মঙ্গলবার তুরিনে পৌঁছে বার্সার ইভান রাকিতিচ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সে দিন বুফনের কান্না দেখে আমারও কান্না পাচ্ছিল। বুফনের মতো একজন কিংবদন্তি এ ভাবে চলে যেতে পারে না। ও আমার ছেলেবেলার নায়ক। সম্ভব হলে আমি ওকে বলতাম, আমার জায়গায় বিশ্বকাপ খেলো তুমি।’’
শুধু বুফন নন, তাঁর সতীর্থ মেসি সম্পর্কেও শ্রদ্ধা ঝরে পড়েছে রাকিতিচের গলায়। তিনি বলেছেন, ‘‘মেসিকে আমি যখনই দেখি, মনে হয় ও একই রকম ফর্মে আছে। বার্সার সবাই মেসির মূল্যটা বোঝে। আমি নিশ্চিত, মেসি এখানেই থেকে যাবে।’’
বুফন বনাম মেসির লড়াইয়ের পাশাপাশি আরও একটা লড়াই কিন্তু ভেসে উঠছে। মেসি বনাম পাওলো দিবালা। আর্জেন্তিনার এই নতুন তারকার দিকেও আজ চোখ থাকবে অনেকের। তবে এই ম্যাচের আগে দিবালা-কে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে অন্য কারণে। ফর্মে থাকা জুভেন্তাসের এই ফরোয়ার্ড ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ক্লাব ছাড়তে পারেন। এমনকী এও শোনা যাচ্ছে, বার্সেলোনা এই তরুণ ফুটবলারের ব্যাপারে আগ্রহী।
এরই মধ্যে আবার একটা খবর সাড়া ফেলে দিয়েছে। যার কেন্দ্রে সেই বুফন। জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে বার্সেলোনার প্রতিনিধিরা এসেছিলেন বুফনের কাছে। তিনি তখন পারমায়। বুফনের কাছে তখন প্রস্তাব গিয়েছিল, স্পেনের ক্লাবে খেলার। কিন্তু তার আগেই জুভেন্তাসের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন বুফন। তাই বার্সেলোনার প্রস্তাব এলেও তিনি রাজি হননি। বুফন নাকি বলেছিলেন, ‘‘বাবার উপদেশ ছিল জুভেন্তাসের হয়েই খেলতে। সে জন্য আমি ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিই।’’ স্প্যানিশ প্রচার মাধ্যম এখন লিখছে, ওই সময় নাকি মজা করে বার্সা কর্তাদের একটা পোস্টকার্ডও দিয়েছিলেন বুফন। যাতে লেখা ছিল, ‘‘আমার আন্তরিক ভালবাসা-সহ বার্সেলোনা প্রেসিডেন্টকে।’’
তাঁর কেরিয়ারের শুরুর দিকে যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটা আবার ভেসে উঠেছে বুফনের ফুটবল কেরিয়ারের সায়াহ্নে। একই সঙ্গে এই মহাতারকা গোলকিপারকে নিয়ে আশা-আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে তাঁর ভক্তদের মধ্যে। পারবেন কি বুফন জীবনের শেষ কয়েকটা ম্যাচে দুর্ভেদ্য থাকতে? পারবেন কি একটা শেষ ট্রফি হাতে নিয়ে বিদায় জানাতে? দেখার সেটাই।