Advertisement
E-Paper

গুরুকে সেরা সম্মান উৎসর্গ করলেন বরুণ

‘‘যাঁর হাতে আমার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা, তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান পেয়ে আজ আমি আপ্লুত। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আমার কাছে আর কিছুই নেই। জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এটাই আমার কাছে সব চেয়ে বড় স্বীকৃতি, সেরা সম্মান। তাঁকে দেওয়া আমার শ্রেষ্ঠ গুরুদক্ষিণা এটাই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৫
স্বীকৃতি: প্রাক্তন ক্রিকেটার বরুণ বর্মণকে পুরস্কৃত করছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শুক্রবার। ছবি: শৌভিক দে

স্বীকৃতি: প্রাক্তন ক্রিকেটার বরুণ বর্মণকে পুরস্কৃত করছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শুক্রবার। ছবি: শৌভিক দে

গুরুপূর্ণিমার দিনে এর চেয়ে বড় গুরুদক্ষিণা আর কী হতে পারে?

বাংলার প্রাক্তন তারকা পেসার বরুণ বর্মণকে যে জীবনকৃতি সম্মান দিল বাংলার ক্রিকেট সংস্থা সিএবি, তা তাঁর গুরু কার্তিক বসুর নামাঙ্কিত। যাঁর হাতেই তৈরি তিনি। শুক্রবার সিএবি-র বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে যখন তাঁর গুরুর নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান হাতে তুলে নিচ্ছিলেন, তখন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ’৭০ ও ’৮০-র দশকের এই পেস বোলার। এবং তা বাংলার ক্রিকেটে তাঁর সারা জীবনের অবদান স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যতটা, তার চেয়েও বেশি তাঁর কোচের নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান পাওয়ার জন্য।

কিন্তু রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর হাত থেকে সেই স্মারক পাওয়ার আবেগঘন মুহূর্তে যে তা মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ করবেন, সেই সুযোগই পেলেন না ষাটোর্ধ্ব মানুষটি। ৫৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৪৬ উইকেট পাওয়া প্রাক্তন পেসারকে যে ভাবে একাধিকবার বিদেশি দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলিয়েও কোনও দিন আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হয়নি, সে ভাবেই এ দিন মঞ্চে মাইক্রোফোনের পঞ্চাশ মিটার দূরত্বে এসেও উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে তাঁর মনের কথা বলার সুযোগই দেওয়া হল না। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক এক টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধি তাঁকে কিছু বলার জন্য ডাকলেনই না। অথচ গত বছর পর্যন্ত সিএবি-র অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে জীবনকৃতি সম্মান প্রাপকের সংক্ষিপ্ত ভাষণ ছিল পরম্পরা। এ বার বরুণবাবু সেই সুযোগ না পেয়ে যখন সাংবাদিকদের কাছে এলেন, তখন তাঁর সেই আবেগের বাঁধ ভাঙল। বলে ফেললেন, ‘‘যাঁর হাতে আমার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা, তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান পেয়ে আজ আমি আপ্লুত। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আমার কাছে আর কিছুই নেই। জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এটাই আমার কাছে সব চেয়ে বড় স্বীকৃতি, সেরা সম্মান। তাঁকে দেওয়া আমার শ্রেষ্ঠ গুরুদক্ষিণা এটাই।’’ এ কথা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললে কত যে সাধুবাদ, কত যে হাততালি
পেতেন তিনি!

হাততালিতে নেতাজি ইন্ডোর ফেটে পড়ার মতো লোক অবশ্য এ দিন দেখা যায়নি সিএবি-র অনুষ্ঠানে। আগে ইডেনের একাংশে যে অনুষ্ঠান হত, তাতে তিল ধারণের জায়গা থাকত না, সেই অনুষ্ঠানের দর্শকাসনের এই চেহারা অবাক করার মতোই। অর্ধেকের বেশি দর্শকাসন ফাঁকা দেখে বোধহয় দায়িত্বে থাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে বারবার নকল হাততালি ও উল্লাসের অডিয়ো চালাতে হল। এটাও নজিরবিহীন। জোড়াবাগান ক্লাবের মতো অনামী ক্লাবের ছেলেরা পুরস্কার নিতে ওঠায় তা ক্ষীণ হতে হতে হারিয়েই গেল।

শুধু দর্শকাসন কেন, দেখা গেল পুরস্কার প্রাপকদেরও অনেকে আসেননি। বর্ষসেরা বোলার অশোক ডিন্ডা দেশের বাইরে। বর্ষসেরা ক্রিকেটার অভিমন্যু ঈশ্বরন ও ‘জেন্টলম্যান ক্রিকেটার’ অভিষেক রামনদের খেলা থাকায় তাঁরাও রাজ্যের বাইরে। এ রকমই নানা কারণে গরহাজির অনেকে। ঈশান পোড়েল ছাড়া বাংলার রঞ্জি দলের কোনও ক্রিকেটারকে দেখা গেল না এই অনুষ্ঠানে। শহরে থেকেও এলেন না কেউ কেউ। যেমন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। সন্ধেয় নেতাজি ইন্ডোরের পাশে সিএবি ক্লাব হাউসে দল বাছাই বৈঠকে তিনি হাজির থাকলেও পুরস্কার অনুষ্ঠানে মনোজকে দেখা যায়নি। তাঁর ক্লাব মোহনবাগান প্রথম ডিভিশন ও সুপার লিগ চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার পেলেও তিনি হাজির ছিলেন না। প্রথম পুরস্কারটি নিতে ওঠেন মোহনবাগানের মাত্র চারজন ক্রিকেটার। যা নিয়ে সিএবি-র অনেকেই ক্ষুব্ধ।

প্রাক্তন সিএবি কর্তা বিশ্বরূপ দে যেমন বলেই দিলেন, ‘‘যে কেউ মঞ্চে উঠে পুরস্কার দিচ্ছে, এটা মানা যায় না। বাইরের কোনও সংস্থাকে দিয়ে অনুষ্ঠান করালে এমনই হয়।’’ প্রতি বছর কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের প্রধান অতিথি হিসেবে আনা হত সিএবি-র বার্ষিক পুরস্কার অনুষ্ঠানে। এ বার যে তা করার চেষ্টাই হয়নি, তা প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কার্যত স্বীকার করেই নিলেন। বললেন, ‘‘প্রতি বছর তো আর তা করা যায় না।’’ অথচ আগে প্রতি বছরই তা করা হত।

Cricket Barun Barman CAB Keshari Nath Tripathi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy