সৌরভ ও শ্রীনি: নতুন বোর্ড যুদ্ধের মুখ।
ভারতীয় বোর্ডের ক্ষমতা দখলের লড়াই নিয়ে জানুয়ারির ঠান্ডার মধ্যেও তীব্র উত্তাপ। আর পাঁচটা দিন হলে ভারতীয় ক্রিকেটের অলিন্দে সবচেয়ে বড় খবর হত যুবরাজ সিংহের ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টি দু’টো টিমেই প্রত্যাবর্তন। নির্বাচনী সভায় এ দিন বিরাট কোহালি বলেন, যুবরাজকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে অন্তত সাতটা ম্যাচে শেষ সুযোগ দেওয়া উচিত। তাঁর কথা মেনে নেন নির্বাচকেরা।
আর পাঁচটা দিন হলে এটাই হেডিং হত। কোহালি চেয়ে পেলেন যুবরাজকে।
সমস্যা হল শুক্রবার নির্বাচনী মিটিং শুরু হওয়ার আগে আরও বিতর্কিত কিছু ঘটে যায়। বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরিকে দিয়ে সভা পরিচালনা করা অসাংবিধানিক এ রকম অভিযোগ তুলতে থাকেন বোর্ডের অপসারিত কিছু সদস্য।
এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, নির্বাচনী বৈঠক আদৌ আজ করা যাবে কি না তা নিয়ে জোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। রাঁচি থেকে বোর্ডের যুগ্ম সচিব অমিতাভ চৌধুরী ই-মেল করে পাঠান, আজকের সভা তিনি চেয়ার করবেন। সন্ধেবেলা তিনি মুম্বই এসে পৌঁছনোর আগে অবধি বৈঠক করা যাবে না।
তখন বোর্ডের পক্ষ থেকে লোঢা কমিটির সচিব গোপাল শঙ্কর নারায়ণনকে মেল করা হয়। বলা হয়, বোর্ডের পদে অমিতাভ চৌধুরীর ন’বছর পূর্ণ হয়নি। রাজ্য সংস্থার পদে হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় তিনি কি সভা পরিচালনা করতে পারেন?
শঙ্কর পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, অমিতাভ চৌধুরীর বৈঠকে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা নেই। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ অর্ডার অনুযায়ী, রাজ্য সংস্থায় ন’বছর পূর্ণ হলেও শেষ। অতএব বোর্ডের সিইও-ই যেন সভা পরিচালনা করে নেন।
বিদায়ী বয়স্ক বোর্ড কর্তাদের কাছে এটা লোঢার পক্ষ থেকে সপাটে নতুন আপারকাট হয়ে আসে। তাঁরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। শনিবার বেঙ্গালুরুতে তাঁরা বিশেষ বেসরকারি বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন এই রকম আদালত কবলিত অবস্থা থেকে ভারতীয় বোর্ডকে উদ্ধারের জন্য। যার হোতা নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।
প্রথমে এঁরা কেউ কেউ বলছিলেন, সমান্তরাল বোর্ড করতে হবে। লক্ষ্য হবে, আমরা বোর্ড গঠন করে পুরনোটাকে ক্ষমতাহীন করে দেব। সমস্যা হল, আইসিসি হাতে না থাকলে সমান্তরাল বোর্ড করে কিছুই করা যাবে না। আইসিসি-র আবার শীর্ষে বসে রয়েছেন তাঁদের এক নম্বর শত্রু শশাঙ্ক মনোহর। এই জাতীয় কোনও উদ্যোগ যে শশাঙ্কের অনুমোদন পাবে না, তা জানার জন্য ক্রিকেট সার্কিটে থাকার দরকার নেই।
শনিবারের আলোচনা তাই মূলত হবে, কী করে নতুন ভারতীয় বোর্ডে ক্ষমতা দখল করা যায়। এই গোষ্ঠীর পেটোয়া লোক ব্রিজেশ পটেল। কিন্তু তিনি আদালতের নয়া রায়ে ছিটকে গিয়েছেন। এর ফলে সৌরভ যে সুবিধে পেয়ে যাচ্ছেন, তাতে শ্রীনি একেবারেই প্রসন্ন নন। শরদ পওয়ারও না।
তাঁরা মনে করেন, সৌরভ উঁচু পদে যাওয়া মানে তাঁকে প্রভাবিত করা যাবে না। তিনি যা করবেন, নিজের ইচ্ছেয় করবেন। শ্রীনি-পওয়ারের মতো অপসারিত, অশীতিপর কর্তাদের তাই বোর্ডে নিজের লোক দরকার। এ দিন কেউ কেউ প্রাক্তন বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেলের কথা তুলেছেন। সম্ভবত তাঁকে অন্যতম প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার জোর আলোচনা শনিবার হবে। পটেল ইদানীং স্মৃতির বাইরে চলে গিয়েছিলেন। এই তালেগোলে তাঁর প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অথচ শোনা যাচ্ছে, পটেলও যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাঁরও বোর্ড আর রাজ্য সংস্থা মিলিয়ে নাকি ন’বছর হয়ে গিয়েছে। যদি তাই হয় শ্রীনিরা নতুন মুখ খুঁজবেন। তাঁরা যে হাল ছাড়ছেন না খুব পরিষ্কার।
নির্বাচনের মাসখানেক আগে এটাও পরিষ্কার যে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাস্তা মোটে কুসুমাস্তীর্ণ হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy