আশা জাগিয়ে শুরু করার পরেই হোঁচট খেল বাংলা। জাতীয় টি-টোয়েন্টি মুস্তাক আলি ট্রফির সুপার লিগে। শুক্রবার দাপুটে জয়ের পরে শনিবার মহারাষ্ট্রের বোলারদের সামনে বাংলার ব্যাটসম্যানরা কার্যত আত্মসমর্পণ করলেন। যার জেরে সাত উইকেটে হারল বাংলা। দু’টি ম্যাচের মধ্যে একটি জয় ও একটি হারের পর যা পরিস্থিতি, তাতে শেষ দু’টি ম্যাচেই জিততে হবে মনোজ তিওয়ারিদের। না হলে ফাইনালে যাওয়ার আশা ক্ষীণ।
ইনদওরের যে মাঠে শুক্রবার রেলওয়েজকে অনায়াসে হারিয়েছিল বাংলা, সেই এমেরাল্ড স্কুল মাঠেই এ দিন ঋদ্ধিমান সাহারা নামলেও উইকেট ও ম্যাচের সময়ের ফারাকই বিপদে ফেলে দেয় তাঁদের। গত ম্যাচের মতো লাল মাটি নয়, কালো মাটির উইকেটে খেলতে হয় তাঁদের। যা পেস সহায়ক। তার উপর পিচের স্যাঁতসেঁতে ভাবও ছিল ব্যাটসম্যানদের দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো। এই অবস্থায় টস হেরে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলা।
এই উইকেট ও পরিবেশে ব্যাট করতে নেমে বাংলার প্রথম পাঁচের মধ্যে চার ব্যাটসম্যান ফিরে যান ১২ রানের মধ্যে। শ্রীবৎস গোস্বামী (১), ঋদ্ধিমান সাহা (০), অভিমন্যু ঈশ্বরন (০) ও বিবেক সিংহের (১) পরে যখন ঋত্বিক রায়চৌধুরীও (৪) ফিরে যান, তখন বাংলার স্কোরবোর্ডে ২৫-৫। ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে ছিলেন মনোজ। এই অবস্থা থেকে সাত নম্বর ব্যাটসম্যান শাহবাজ আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ে ফেরার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন অধিনায়ক।
বিকেলে ইনদওর থেকে ফোনে মনোজ বলেন, ‘‘সকাল ন’টায় এই পরিবেশে এমন উইকেটে ব্যাট করতে নামলে যে কোনও দলেরই এমন হাল হতে পারে। তবে অজুহাত দেব না। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভাল ব্যাটিং করাটাই তো আসল কাজ। শুরুর ব্যাটসম্যানরা সেটা না পারাতেই এমন হল।’’
তিনটি চার ও দু’টি ছয় মেরে ৪৪ বলে ৪১ রান করে যখন ফিরে যান মনোজ, তখনও বাংলা একশোর গণ্ডি থেকে কুড়ি রান দূরে। মনোজের সঙ্গে ৫৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে যতটুকু সাহস ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করেন শাহবাজ, সেটুকু দিয়েই বাকি লড়াইটা করেন তিনি। সামাদ ফালা (১-৩৫), ডমিনিক মুথুস্বামী (৩-১৫), সত্যজিৎ বাচাভদের (২-৩৪) পাল্টা আক্রমণ করে ৪৪ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত থেকে যান। পাঁচটি চার ও দু’টি ছয় মারেন ২৪ বছর বয়সি অলরাউন্ডার।
বিপদ কাটিয়ে ১৩৮ তুললেও বাংলাকে লড়াইয়ে রাখতে পারেননি বোলাররা। গত ম্যাচে ভাল বল করা অশোক ডিন্ডা (২ ওভারে ০-২৬), ঈশান পোড়েল (৪ ওভারে ০-৩৩) এ দিন ছিলেন নির্বিষ। বরং ভাল বল করেন নবাগত মিডিয়াম পেসার আকাশ দীপ, যাঁকে এ দিন উইকেটের অবস্থা দেখে প্রথম এগারোয় রাখা হয়েছিল। ব্যাট হাতেও ১১ বলে ১৩ রান করে শাহবাজকে এ দিন সঙ্গত দেন ২২ বছরের আকাশ। চার ওভারে ২১ রান দিয়ে দু’উইকেট নেন তিনি। অধিনায়ক রাহুল ত্রিপাঠি (৪৬ বলে ৬০) ও রোহিত মোতওয়ানির (২৪ বলে ৩৬) দাপটে মহারাষ্ট্র ১৭.১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
আজ, রবিবারই বাংলাকে নামতে হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে। তবে দুপুরে, হোলকার স্টেডিয়ামে। শেষ ম্যাচও ওখানেই, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। তাই সকালের স্যাঁতসেঁতে উইকেটে খেলার বিপদ আর নেই। তাই ওই দুই ম্যাচ জেতার ব্যাপারে আশাবাদী মনোজ। বলেন, ‘‘এই সমস্যা না থাকলে আশা করি দল ভালই খেলবে। এখন তো জিততেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy