স্ত্রী তানিয়ার সঙ্গে ফারাহ। ছবি: টুইটার।
মো ফারাহর নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্ত করবে না ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দফতর। তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া হবে না কোনও আইনি ব্যবস্থাও। প্রশাসনের এই আশ্বাসে স্বস্তিতে ব্রিটেনের অন্যতম সেরা অ্যাথলিট।
ফারাহ সম্প্রতি জানিয়েছেন তাঁর জীবন-কথা। কী ভাবে ইংল্যান্ডে এসেছেন, কী ভাবে নাগরিকত্ব পেয়েছেন, কী তাঁর আসল নাম— এই সব কিছুই প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, বেআইনি ভাবে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়েই নিজের জীবনের সব সত্য সামনে এনেছিলেন অলিম্পিক্সে চারটি সোনার পদক জয়ী অ্যাথলিট। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স থেকেও ছয়টি সোনা–সহ আটটি পদক রয়েছে তাঁর। অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাকে ব্রিটেনকে গর্বিত করার জন্য নাইট হুড উপাধিও পেয়েছেন তিনি।
ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী বেআইনি ভাবে নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ফারাহর নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারত সরকার। কিন্তু, দেশের অন্যতম সফল ক্রীড়াবিদের বিরুদ্ধে কোনও রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও রকম তদন্তও করা হবে না।
ব্রিটিশ সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে না জানার পর ফারাহ বলেছেন, ‘‘এই খবরটা আমাকে স্বস্তি দিয়েছে। এটাই আমার দেশ। স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক অ্যালান ওয়াটকিনসন এবং ছোটবেলায় যাঁরা আমাকে সাহায্য করেছেন, তাঁরা না থাকলে এই জায়গায় পৌঁছতেই পারতাম না। আমার এই জীবনের জন্য অনেকের কাছেই কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে আমার স্ত্রী তানিয়ার কথা বলব। সব সময় পাশে থেকেছে। সবকিছু জেনেও সাহস দিয়েছে। অ্যাথলেটিক্সজীবনে সবথেকে বেশি উৎসাহ দিয়েছে। ওর কথাতেই জীবনের সত্য সকলের সামনে এনেছি।’’
সব কিছু প্রকাশ্যে আনার পরেও বিশ্বের বহু মানুষের সমর্থন পেয়েছেন ফারাহ। বহু মানুষ তাঁর জীবনের এই সংগ্রামকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। অভিভূত ফারাহ বলেছেন, ‘‘আমার জীবনের সত্যটা সব সময়ই আমার থাকবে। একটা সময় নিজের পরিবারের সঙ্গেও এ সব কথা বলতে অস্বস্তি হত। প্রকাশ্যে আনার কথা ভাবতেই পারতাম না। কিন্তু তথ্যচিত্রে সব কিছু বলতে পেরে আমি খুশি। মানুষের জানা উচিত, ছোট বয়সে আমার সঙ্গে সঙ্গে কী কী ঘটেছে।’’
৩৯ বছরের অ্যাথলিট জানিয়েছেন, জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল হুসেইন আব্দি কাহিন। সোমালিয়াতে জন্ম হয় তাঁর। চার বছর বয়সে গৃহযুদ্ধে মারা যান তাঁর বাবা। সেখান থেকে বেআইনি ভাবে মাত্র ন’বছর বয়সে তাঁকে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল ব্রিটেনে। এক মহিলা তাঁকে কিনেছিলেন বাড়ির কাজ করানোর জন্য। ভুয়ো পরিচয়ে ব্রিটেনে কাজ করতেন ফারাহ। পরে স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক ফারাহর প্রতিভা দেখে বেআইনি ভাবে তাঁর জন্য ইংল্যান্ডের নাগরিকত্বের ব্যবস্থা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy