বরুসিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে কোচ মোরিনহোর নির্দেশ হুয়ান মাতাকে।-রয়টার্স
প্রশ্ন: ইউনাইটেডের দায়িত্ব নেওয়ার পর দলটাকে প্রথম দেখে আপনার কেমন লেগেছে?
মোরিনহো: এর উত্তরে বলাই যেতে পারত চিনের আবহাওয়া, শুকনো, লো বাউন্সের মাঠ, আমাদের সবার জেট ল্যাগ, ভাল করে ঘুম না হওয়ায় দলটাকে দেখে তেমন কিছু বুঝিনি। ভাল ট্রেনিং হয়নি। কিন্তু আসল উত্তরটা হল, টিমের প্রথম ট্রেনিং সেশনই দুর্দান্ত হয়েছে।
দলের অ্যাটিটিউড খুব ভাল। সবার ভাল করার খিদে রয়েছে। সবাই খাটতে আগ্রহী। নিজেদের উন্নত করতে চায়। সবচেয়ে বড় কথা, ফুটবলে আমার যেটা সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে যে, আপনি যখন কোনও নতুন দলে যোগ দিলেন আপনার নিজস্ব ভাবনার সঙ্গে টিমের ভাবনার একতা আনা। প্রথম দিনের ট্রেনিংয়েই দেখলাম কিন্তু আমার ভীষণ অন্য রকম সব ভাবনাচিন্তার সঙ্গে তাল রাখতে এই টিমের ফুটবলাররা সক্ষম আর তৈরিও। গত কয়েক দিনেই রুনি, স্মলিং আর র্যাশফোর্ড দলের মধ্যে বাড়তি কোয়ালিটি আমদানি করেছে।
প্র: কিন্তু ইব্রা কি চৌত্রিশে ইউনাইটেডে এসে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবেন প্রিমিয়ার লিগে?
মোরিনহো: হ্যাঁ, পারবে। কারণ প্রথমত ওকে আমি খুব ভাল জানি। বয়স হল আপনার আই়ডি-তে যেটা লেখা সেটাই কেবল নয়। আসল বয়স হল আপনার ফিটনেসে, আপনার মানসিকতায়, আপনার স্কিলে। ইব্রা সেই জায়গায় এখনও তরুণ। তবে সত্যি বলতে ইব্রা পেশাদার কেরিয়ারে প্রচুর রোজগার করে ফেলেছে। অনেক ট্রফি জিতেছে। কিন্তু ওকে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম, তুমি যদি মনে করো বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন ফুটবল লিগেও কিছু করে দেখাতে পারো, তা হলে প্রিমিয়ার লিগে এসো। নইলে আমেরিকায় খেলো, চিনে খেলো, আরও এক বছর প্যারিসেও থাকতে পারো। কিন্তু তাতে আমার মতো বলতে পারবে না যে, আমি ইংল্যান্ড, স্পেন, ইতালিতে ট্রফি জিতেছি। যা শুনে ইব্রা আমাকে বলেছিল, ও-ও আমার মতো জিততে চায় সর্বত্র। সে জন্য ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে আসছে। আমার বিশ্বাস ইব্রা কথাটা ওর নিজের বিশ্বাস থেকেই বলেছে। চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে।
প্র: ইব্রাকে জোগানোর মতো গুণাবলী কি আপনার ইউনাইটেড দলে আছে? যে গুণাবলী ওর আছে!
মোরিনহো: অনেক লোকে বলে থাকে, ইউনাইটেডে নাকি নেতা নেই। কিন্তু নেতার দরকারটাই বা কী? যদি আপনার দলের ড্রেসিংরুমে প্রত্যেকে একই মানসিকতা সম্পন্ন হয়? আমার দলে সেটাই দরকার। যখন আমি দেখি ইব্রা, র্যাশফোর্ড, রুনি, মাতার মতো অ্যাটাকাররা আমার দলে, তখন নেতা নেই ভাবতেই অবাক লাগে! মজাও।
প্র: কী মনে হয়, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড কোচ হওয়া আপনার কপালে লেখাই ছিল?
মোরিনহো: সেই পোর্তো থেকে ইন্টার, রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি— যখন যে ক্লাবের কোচ ছিলাম, সব সময় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে খেলেছি। অসংখ্য বার। কিন্তু একটা ব্যাপার লক্ষ্য করার মতো জিতি-হারি, কখনও এই ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে কোনও নেতিবাচক ঘটনা ঘটেনি আমার জীবনে। কোনও লাল কার্ড, হলুদ কার্ড নয়, কোনও গালিগালাজ নয়। তাই ভেবেছি ইউনাইটেডের দায়িত্বটা কি খুব সহজ একটা ব্যাপার। এই কৌতূহলটা আমার বরাবরের। এখন দেখা যাক, বাস্তব কী বলে!
প্র: ইউনাইটেডের সঙ্গে আপনার কোচিং করা অন্য ক্লাবগুলোর তফাত কী?
মোরিনহো: আমি তুলনায় যাব না। কারণ আমি সব ক্লাবকে শ্রদ্ধা করি। সবার নিজস্ব ধারা আছে। ইউনাইটেডেরও আছে।
প্র: ইউনাইটেডকে সেই ধারায় কি সত্যি করে ফিরিয়ে আনতে পারবেন প্রিমিয়ার লিগ আর ইউরোপিয়ান লিগে?
মোরিনহো: আমি জানি না। তবে আমি সেটাই চাই আর সেই চেষ্টাই শুরু করে দিয়েছি।
প্র: চেলসিতে আপনার দ্বিতীয় পর্যায়ে বলেছিলেন, ওখানে আপনার সাম্রাজ্য কায়েম করতে চান? ইউনাইটেডে কি তিন বছরের বেশি থাকতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন?
মোরিনহো: চেলসিতে আমি এখন নেই, কারণ তার মালিক আমাকে চাননি। নইলে এখনও আমাকে ওই ক্লাবের ড্রেসিংরুমেই পেতেন। ইউনাইটেড সম্পর্কেও একই কথা বলব। ক্লাব যত দিন চাইবে আমি তত দিনই এখানে। তবে আমার দিক দিয়ে দেখানোর থাকবে, ওহে ইউনাইটেড ম্যানেজমেন্ট, আপনারা যোগ্য লোককেই ম্যানেজারশিপ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy