Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিপন্ন ভারতকে উদ্ধার করে জাত চেনালেন চেতেশ্বর

মইন যদি ইংল্যান্ড শিবিরের নায়ক হন, তা হলে ভারতকে অবশ্যই কঠিন জায়গা থেকে টেনে তুলে নায়ক হয়ে ওঠেন চেতেশ্বর পূজারা। যিনি চিরকাল নেপথ্য নায়ক হিসেবেই থেকে যান।

শুশ্রূষা: মাথায় লাগার পরে পূজারাকে পরীক্ষা ফিজিয়োর। এএফপি

শুশ্রূষা: মাথায় লাগার পরে পূজারাকে পরীক্ষা ফিজিয়োর। এএফপি

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৭
Share: Save:

একেই বলে টেস্ট ম্যাচ। কখনও এক দল এগিয়ে তো কখনও অন্য দল। যাঁরা বলেন টেস্ট ম্যাচ কবরে চলে গিয়েছে, তাঁদের ভুল প্রমাণ করে দিতে পারে এই টেস্ট। যেখানে মইন আলি একাই চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের ছবিটাকেই পাল্টে দিল। চায়ের বিরতি পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, ভারত ভাল রান তুলতে পারে। কিন্তু মইন সেই ধারণাটাকেই পাল্টে দিলেন।

মইন যদি ইংল্যান্ড শিবিরের নায়ক হন, তা হলে ভারতকে অবশ্যই কঠিন জায়গা থেকে টেনে তুলে নায়ক হয়ে ওঠেন চেতেশ্বর পূজারা। যিনি চিরকাল নেপথ্য নায়ক হিসেবেই থেকে যান। অসাধারণ টাচ প্লেয়ার পূজারা। কিন্তু ওঁর দুর্ভাগ্য যে, মাঝে মাঝে ভারতীয় দলে ওর ঠিকমতো জায়গা হয় না। কিন্তু ওঁর সবচেয়ে বড় গুণ হল খুবই ধীরেসুস্থে ব্যাটিং করেন। হঠকারি শট মারেন না। অসীম ধৈর্য এই ব্যাটসম্যানের।

টেস্ট ক্রিকেটে যাঁর ৫০-এর ওপর গড়, ১৫টি সেঞ্চুরি, তাঁকে আবার বসানো যায় নাকি? শ্রীলঙ্কায় তো ওঁকে দিয়ে একবার ওপেনও করানো হয়েছিল। অনেক ঝড় গিয়েছে পূজারার উপর দিয়ে। তবু টেস্ট ক্রিকেটের আদর্শ ব্যাটসম্যান তিনি। পূজারার স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন ঠিকই। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে এর কোনও গুরুত্ব নেই। যে ভাবে শুক্রবার সাউদাম্পটনে ভারতকে বিপদ থেকে টেনে উদ্ধার করে এগিয়ে দিলেন পূজারা, তার পরে ওঁর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না।

আগের দিনের মতো প্রাণ ছিল না উইকেটে। তাই মইনের এই দাপুটে রূপ দেখা গেল ফের। যা চার বছর আগেও দেখা গিয়েছিল। যখন মইন একাই দুই ইনিংস মিলিয়ে আট উইকেট নিয়েছিল। তবে মইনের এই বোলিং দেখে মনে হচ্ছে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন ভোগাতে পারে জো রুটদের। ওদের ছ’জন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রয়েছে। তাই অশ্বিন ওদের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়ে উঠতেই পারে। যা নিয়ে ভারত আশাবাদী হয়ে উঠতেই পারে।

আসলে মইনের স্পিন অফ স্টাম্পের বাইরে ছিটকে যায় প্রায়ই। যা সামলানো ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে ওঠে শুক্রবার। চার বছর আগে এই মাঠেই দ্বিতীয় ইনিংসে মইনের দাপটে যখন ভারত ১৭৮ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল, তখন তাঁকে নিয়ে আলাদা করে হোমওয়ার্ক অবশ্যই দরকার ছিল।

বিরাট কোহালি বরাবরের মতোই ভাল এগোচ্ছিলেন। কিন্ত স্যাম কারেনের ধূর্ত বলটা খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। গুড লেংথ বলটা অনেকটা ছিটকে যায়। বিরাট যখন তা ব্যাটে লাগাতে যান তখন ওটা প্রায় পঞ্চম স্টাম্পে যাচ্ছিল। বিরাট কিন্তু চেষ্টা না করলেই ভাল করতেন। কিন্তু বোধহয় আকস্মিকতায় বুঝতে পারেননি। এর মধ্যেই অবশ্য টেস্টে ছ’হাজার রান পূর্ণ করে ফেলেন ভারত অধিনায়ক।

ভারতকে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে বলেই এখন ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রাখতে হচ্ছে। তবে আশা করি, অশ্বিন এই উইকেটকে কাজে লাগাতে পারবেন। তবে ওঁর বেশি ফ্লোটার দিলে চলবে না। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানদের ফ্লাইট দেওয়া যাবে না। একটু ধীরেও বল করতে হবে। ওর বল মাঝে মাঝে ৯০-এর কাঁটাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গতিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে ওঁকে। ৮৫ কিমি-র মধ্যে রাখতে হবে। না হলে রুটদের জব্দ করা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE