চর্চায়: ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়ে মন জয় করলেন মেসি। ফাইল চিত্র
ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে বার্সেলোনা। এমন কঠিন এক সময়ে, কিংবদন্তি লিয়োনেল মেসি ক্লাবের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের বেতন ৭০ শতাংশ কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এবং এই মহানুভবতায় আর্জেন্টিনীয় মহাতারকা পাশে পেলেন তাঁর সতীর্থদের।
মেসি স্বয়ং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত জানাতেই, ইউরোপের প্রথম সারির সব দৈনিকে দারুণ ভাবে প্রশংসিত হলেন। ফ্রান্সের এক বিখ্যাত পত্রিকা তাঁর সঙ্গে তুলনা করল মেসির দেশেরই বিপ্লবী নেতা চে গেভারার। ঘটনাচক্রে চে-র জন্ম এবং বেড়ে ওঠা বার্সা-অধিনায়কের শহর রোজারিয়োতেই। ওই দৈনিক তাদের প্রথম পাতায় চে-র জনপ্রিয় একটি ছবিতে ফোটোশপ করে মেসির মুখও বসিয়ে দিয়েছে। অতীতে বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে মেসি কিন্তু বারবার গেভারার প্রতি নিজের দুর্বলতা স্পষ্ট করেছেন।
পাশাপাশি বার্সার উল্টো ছবি জুভেন্টাসে। করোনা-আগ্রাসনে ইটালির সেরা ক্লাবের অর্থনৈতিক অবস্থা এই মুহূর্তে এতটাই খারাপ যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তারা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতে পারে।
ইন্সটাগ্রামে মেসি লিখেছেন, ‘‘ক্লাবের অনেকেই এ’কদিন আমাদের অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে রেখে চাপ সৃষ্টি করছিল। ওরা যেটা চেয়েছিল, আমরা কিন্তু সেটাই করতে যাচ্ছিলাম। ওদের ব্যবহারে আমরা অবাকই হয়েছি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এটা ঘটনা যে আমরা এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করেছি। তার কারণ একটাই। আমরা চেষ্টা করছিলাম ক্লাবকে সাহায্য করার সেরা রাস্তাটি বার করতে। শুধু ক্লাব নয়, এই রকম কঠিন একটা সময় ক্লাবের কর্মীদেরও পাশে থাকতে চেয়েছিলাম।’’
এখানেই থামেননি বার্সা অধিনায়ক। আরও বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের পক্ষ থেকে বেতনের ৭০ শতাংশ কম নিচ্ছি কর্মীরা যাতে ওদের পুরো ১০০ শতাংশ বেতনই হাতে পান তার জন্য।’’ সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেসিরা সপ্তাহে প্রায় ৪৬৮ কোটি টাকা বেতন পান। স্বভাবতই বার্সা ফুটবলারদের এত বড় ত্যাগস্বীকারে বিস্মিত ফুটবল মহল। একইসঙ্গে এটাও পরিষ্কার যে পুরো ব্যাপারটায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মেসি। এবং মোটেই তা শান্তির্পূণ ভাবে হয়নি। যে কারণে, বেতন কম নেওয়ার ঘোষণার সঙ্গে উগরে দিয়েছেন নিজের ক্ষোভ। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ক্লাবের ব্যবহারে তিনি একেবারেই খুশি নন। অবশ্য বার্সাও বিবৃতি দিয়ে ফুটবলারদের প্রশংসাই করেছে।
এ দিকে, পর্তুগিজ তারকা রোনাল্ডোকে যে জুভেন্টাস বিক্রি করে দিতে পারে সে সম্ভাবনার কথাই লেখা হচ্ছে ইটালির কাগজগুলোতে। করোনা সংক্রমণে ইউরোপের এই দেশটির অবস্থা খুব খারাপ বললেও কম বলা হবে। আর রোনাল্ডোকে যে অবিশ্বাস্য অঙ্কের বেতন দিতে হয় জুভেন্টাসের, তা চোখ কপালে তোলার মতোই।
অবশ্য র্পতুগিজ তারকা আগামী চার মাসের বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু রোনাল্ডো নন, একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লাবের ম্যানেজার মাউরিসিয়ো সাররি। তাতে ক্লাবের প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি টাকার মতো বেঁচে যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও জুভেন্টাস আর্থিক ক্ষতির ধাক্কা সামলে উঠতে পারবে কি না তা নিয়ে গভীর সংশয় রয়েছে। রোনাল্ডোকে এক সপ্তাহেই তারা বেতন দেয় প্রায় ৪ কোটি ৬৭ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯১২ টাকা। আগামী দিনে ক্লাবের আয় স্বাভাবিক হলেও তা দিয়ে যাওয়া অসম্ভব বলে মনে করছেন ইটালির অর্থনীতিবিদেরা। আর ইংল্যান্ডের কাগজগুলি এখন থেকেই লিখতে শুরু করেছে, সে ক্ষেত্রে রোনাল্ডোর তাঁর পুরনো ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy