চোটে জেরবার ভারতীয় ক্রিকেট দল। ছবি: রয়টার্স।
একের পর এক চোটে বিধ্বস্ত ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন যসপ্রীত বুমরা। আনন্দবাজার ডিজিটাল এর কারণ খুঁজে বার করতে কথা বলল শহরের বিশিষ্ট স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। তাঁদের বক্তব্য লকডাউনের জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকার জন্য চোটের প্রবনতা বাড়ছে। তাছাড়া ক্রীড়াবিজ্ঞান মেনে সূচী তৈরী হচ্ছে না, সেটাও চোটের একটা বড় কারণ।
ডাক্তার শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বললেন, ‘‘লকডাউনের কারণে অনেকটা সময় খেলাধুলা থেকে দূরে ছিলেন খেলোয়াড়রা। খেলা শুরু হতেই পরপর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে তাঁদের। বায়ো বাবলে থাকার কারণে মানসিক ভাবেও কিছুটা বিধ্বস্ত হচ্ছেন তাঁরা। এটা চোটের একটা বড় কারণ।’’ এরপর ক্রীড়া সূচী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বললেন, ‘‘ একটা ম্যাচ খেলার পর নুন্যতম তিন দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হয় খেলোয়াড়দের। কিন্তু তা হচ্ছে না। ফলে, রিকভারির সুযোগ পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই বারবার চোটের কবলে পড়ছেন।’’
কলকাতার আরও এক বিশিষ্ট ডাক্তার সৌম্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লকডাউনের ফলে আমাদের রোজকার রুটিন অনেকটা বদলে গেছে। ফলে, আবার পুরনো রুটিনে ফিরে আসতে আমাদের মতোই সমস্যায় পড়ছেন ক্রিকেটাররাও। লকডাউনে অনুশীলনের সুযোগও তেমন ছিল না। তাই বারবার চোট পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।’’ ক্রীড়াসূচীর দিকে আঙ্গুল তুলেছেন সৌম্য বাবুও। তিনি বলেন, ‘‘পরপর ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের চোট পাওয়ার আরও একটা বড় কারণ। ছোট ছোট চোট কাটিয়ে ওঠার সময় পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা। ফলে, চোট বেড়ে যাচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষমা চাওয়ার সিরিজ চলছে, এবার ডেভিড ওয়ার্নার
অস্থি শল্য চিকিৎসক ও স্পোর্টস ইনজুরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ঋত্বিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রত্যেক ক্রিকেটারকে বিশেষজ্ঞের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কিছু ফিজিক্যাল ট্রেনিং করতে হয়। লকডাউনের ফলে, সেসব কিছুই সম্ভব হয়নি। ফলে, চোট পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। এর পাশাপাশি রিকভারির সময় কম পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে তাঁদের। ছোট চোট বড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে, সমস্যায় পড়ছেন ক্রিকেটাররা।’’
আরও পড়ুন: ঋষভ পন্থের ব্যাটিং গার্ড মুছে দিয়ে বিতর্কে স্মিথ
আইপিএল শেষ হওয়ার পরই টি২০, ওয়ান ডে, টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া উড়ে যায় ভারত। এর পরই একের পর এক চোটের কবলে পড়তে থাকেন ক্রিকেটাররা। আইপিএল চলাকালীনই চোট পান ভারতের সহ অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে হ্যামস্ট্র্রিংয়ে চোট লাগে তাঁর। তারপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি২০ ও ওয়ান ডে সিরিজ থেকে বাদ পড়েন তিনি। আইপিএল চলাকালীন চোট পেয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমারও। টি২০ সিরিজ চলাকালীন কাঁধে চোট পান বরুন চক্রবর্তী। চোটের জন্য দলে নেই ইশান্ত শর্মা। এখনও পুরো ফিট নন তিনি। প্রথম টেস্টে ব্যাট করার সময় প্যাট কমিন্সের বাউন্সারে হাতে চোট পান মহম্মদ শামি। টেস্ট চলাকালীনই পায়ের পেশিতে চোট লাগে আরেক ফাস্ট বোলার উমেশ যাদবের। অনুশীলনে কব্জিতে চোট পান কেএল রাহুল। তৃতীয় টেস্টে ব্যাট করার সময় গ্লাভসে বল লেগে বুড়ো আঙ্গুলের হাড় ভেঙ্গে যায় রবীন্দ্র জাদেজার। ওই ম্যাচেই ব্যাটিং করার সময় হ্যামস্ট্র্রিংয়ে চোট পান হনুমা বিহারি। পিঠের ব্যাথা নিয়েও টেস্ট বাঁচাতে দাঁতে দাঁত চিপে লড়ে যান আশ্বিন। মঙ্গলবার অনুশিলনে চোট পান বুমরা। একের পর এক চোটের কারণে এবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে ভারতীয় বোর্ড এবং বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy