ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ় শুরুর আগে মিচেল মার্শ বলেছিলেন, অভিষেক শর্মাই তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জ। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক যে ভুল বলেননি, প্রমাণ হয়ে গেল মেলবোর্নের ২২ গজে। অভিষেকের ৬৮ রানের ইনিংসই মান বাঁচাল সূর্যকুমার যাদবদের।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত করল ১২৫ রান। তার ৫৪ শতাংশই এল অভিষেকের ব্যাট থেকে। সুর্যকুমার যাদবের দলের বাকি ছয় স্বীকৃত ব্যাটারের সম্মিলিত অবদান ১৯। ২২ গজের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে অভিষেক শুধু সতীর্থদের ২২ গজে আসা এবং সাজঘরে ফিরে যাওয়া দেখলেন। জস হেজ়লউড, নাথান এলিস, জ়েভিয়ার বার্টলেটদের বল সামলাতেই পারলেন না শুভমন গিল, সঞ্জু স্যামসন, তিলক বর্মা, শিবম দুবেরা। কেউ সুইংয়ে, কেউ বাউন্সে পরাস্ত হলেন। অধিনায়ক সূর্য এক বার বেঁচে গিয়েও (জশ ইংলিস তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন) করলেন ১ রান। ব্যতিক্রম অভিষেক।
পঞ্জাবের ২৫ বছরের ব্যাটার কেন আলাদা, তা নিজেই বুঝিয়ে দিলেন। যে ২২ গজে দলের সব ব্যাটার দাঁড়াতেই পারলেন না, সেখানে সাবলীল ব্যাটিং করলেন অভিষেক। সুইং, বাউন্স কিছুই সমস্যায় ফেলতে পারল না তাঁকে। দেখে মনে হচ্ছিল, অভিষেক বোধহয় অন্য কোনও পিচে খেলছেন। যে পিচ ব্যাটারদের কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। অভিষেক আউট হলেন ভারতীয় ইনিংসের ১৮.৩ ওভারে। অর্থাৎ ভারতীয় ইনিংসের ১১১তম বলে। খেলার সুযোগ পেলেন ৩৭ বল। তার মধ্যে ১০ বার (৮টি চার, ২টি ছয়) বল পাঠালেন মাঠের বাইরে। দলের ১২টি চারের ৮টিই এল তাঁর ব্যাট থেকে। ৩টি ছক্কার ২টি তাঁর। আরও কিছু বল খেলার সুযোগ পেলে হয়তো ভারতের রান ১৫০ পেরিয়ে যেতে পারত। লড়াই করার মতো রসদ পেয়ে যেতেন জসপ্রীত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তীরা।
আরও পড়ুন:
ক্রিকেট বল অভিষেকের ব্যাটে ঠিক মতো লাগলে, সাধারণত মাঠের বাইরে গিয়েই থামে। মাঠের চার দিকে সমান দক্ষতায় শট নিতে পারেন। তরুণ ব্যাটারকে এ ভাবেই তৈরি করেছেন যুবরাজ সিংহ। বাকি ব্যাটারদের সামনে যে বোলারদের বিপজ্জনক মনে হয়, তাঁদেরই অভিষেকের সামনে সাধারণ দেখায়। গোটা ব্যাটিং লাইনআপ কেঁপে যাওয়ার দিনেও ১৮৩.৭৮ স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেন অভিষেক। ২০ ওভারের ক্রিকেটের ব্যাটিংয়ের ধারণাই বদলে দিচ্ছেন পঞ্জাবের ক্রিকেটার। শুক্রবার তিনি একাই লড়লেন অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে। হর্ষিত রানা সাত নম্বরে নেমে ৩৩ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটা খেলতে না পারলে, অভিষেক গোটা ইনিংসেই একাকিত্বে ভুগতে পারতেন!