পার্থে টেম্বা বাভুমা হয়ে উঠলেন ট্রেভিস হেড! বোলারদের মৃগয়া ক্ষেত্রে ব্যাট হাতে শাসন করলেন হেড। ইডেনের ২২ গজের মান বাঁচিয়েছিল বাভুমার অপরাজিত অর্ধশতরানের ইনিংস। পার্থের মান বাঁচল অজি ওপেনারের আগ্রাসী ১২৩ রানের ইনিংসে। ইডেন টেস্ট শেষ হয়েছিল আড়াই দিনে। পার্থে খেল খতম দু’দিনে! দ্বিতীয় দিনের চা বিরতির মধ্যে ৩০ উইকেট পড়া ২২ গজকেই অন্য রকম দেখাল হেডের দাপটে। তাতেই শেষ হয়ে গেল স্টোকসদের ১১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বপ্ন। অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অ্যাশেজ় সিরিজ়ে।
২০৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। যে ২২ গজে দু’দলের ব্যাটারেরাই সমস্যায় পড়েছেন ম্যাচের প্রথম ১১৩ ওভারে, সেই ২২ গজেই সাদা বলের ক্রিকেটের ওপেনারকে নামিয়ে দেন স্টিভ স্মিথেরা। পরিকল্পনা ছিল খুব পরিষ্কার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেওয়া। স্টোকসের দলের বোলারদের লাইন-লেংথ ঘেঁটে দেওয়া। ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম যে ‘বাজ়বল’ দর্শনে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে ফেলতে চান, ঠিক সেই কায়দাতেই তাঁর দলকে ‘ব্যাকফুট’-এ ঠেলে দিল অস্ট্রেলিয়া। ২৮.২ ওভারে ২ উইকেটে ২০৫ রান তুলে দু’দিনেই জয় ছিনিয়ে নিলেন স্মিথেরা।
যে ২২ গজকে ব্যাটারদের জন্য কঠিন মনে হচ্ছিল, সেই পিচেই রানের উৎসব শুরু হয়ে গেল ম্যাচের শেষ ইনিংসে। জ্যাক ওয়েদারল্ড, মার্নাস লাবুশেনদের মূল দায়িত্ব ছিল পিচের এক প্রান্ত আগলে রাখা। অন্য প্রান্তে ইংরেজ বোলারদের মারতে শুরু করলেন হেড। অজি ব্যাটার শুধু মারলেন না, মারতে মারতে ম্যাচ ছাড়া করে দিলেন ইংরেজদের। দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজের সময়ও ভাল জায়গায় থাকা স্টোকসেরা শনিবারই হেরে গেলেন।
৬৯ বলে শতরান পূর্ণ করলেন হেড। ১২টি চার এবং ৪টি ছক্কা মারলেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজে খেললেন। তাঁর দাপটে ওভার প্রতি ৭ রানের বেশি তুলল অস্ট্রেলিয়া। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারলেও জয় নিশ্চিত করে দেন। শেষ পর্যন্ত ১২৩ রান করলেন ৮৩ বলে। ১৬টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন লাবুশেন। খেললেন ৪৯ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস। স্মিথ (২) অপরাজিত থাকলেন তাঁর সঙ্গে। ৪৪ রানে ২ উইকেট ব্রাইডন কার্সের।
এর আগে পর্যন্ত দাপট ছিল বোলারদেরই। ম্যাচের প্রথম দিন ১৯ উইকেট পড়া পার্থে দ্বিতীয় দিন চা পানের বিরতির আগে পড়ে ১১ উইকেট। শনিবার সকালে নাথান লায়নকে (৪) আউট করে দলকে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে দেন কার্স। সেই সুবিধা খুব একটা কাজে লাগাতে পারেননি ইংরেজ ব্যাটারেরা।
দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় রান পাননি ইংল্যান্ডের কোনও ব্যাটার। সর্বোচ্চ গাস অ্যাটকিনসনের ৩৭। ওপেনার জ্যাক ক্রলি দ্বিতীয় ইনিংসেও শূন্য। বেন ডাকেট (২৮) এবং অলি পোপ (৩৩) কিছুটা লড়াই করেন দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে। ওঠে ৬৫ রান। ব্যর্থ জো রুট (৮), হ্যারি ব্রুক (০), স্টোকস (২)। চেষ্টা করেন জেমি স্মিথ (১৫)। ১ উইকেটে ৬৫ থেকে ইংল্যান্ড ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। সেখান থেকে ইংল্যান্ডকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় অ্যাটকিনসন এবং কার্সের লড়াই। কার্স করেন ২০ রান। অষ্টম উইকেটের জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৫০ রান।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় ইনিংসে স্টার্কের ৫৫ রানে ৩ উইকেট। ম্যাচে ১০ উইকেট তাঁর। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার অবশ্য স্কট বোল্যান্ড। তিনি ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেন। ৫১ রানে ৩ উইকেট ব্রেনডন ডগেটের।