Advertisement
E-Paper

নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল সব পেশি, তিন বছর আগে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিলক! এশিয়া কাপ ফাইনালের নায়ক পাশে পেয়েছিলেন কোন দু’জনকে?

ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত ট্রেনিং করতেন। জিমে পড়ে থাকতেন। প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতেন না। নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছিলেন এশিয়া কাপ ফাইনালের নায়ক তিলক বর্মা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ২১:৪১
picture of cricket

তিলক বর্মা। —ফাইল চিত্র।

প্রায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিলক বর্মা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল তাঁর শরীরের পেশি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অন্যতম কর্ণধার আকাশ অম্বানীকে সে সময় পাশে পেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। নিজের দোষেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ২২ বছরের ক্রিকেটার।

র‌্যাবডোমায়োলাইসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিলক। পেশিতে যন্ত্রণা হত তাঁর। ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিলেন। কঠিন সেই সময়ের কথা বলেছেন এশিয়া কাপ ফাইনালের নায়ক। ২০২২ সালে পেশির বিরল এবং কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিলক। সমস্যার শুরুতে বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। ভাবতেন ক্রিকেটীয় পরিশ্রম এবং ক্লান্তির জন্য পেশিতে ব্যথা হয়। তবে সঠিক সময় অসুখ ধরা পড়ায় চিকিৎসার পর এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তিলক।

গৌরব কপূরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রথম বার নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন তিলক। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথম বার আইপিএল খেলার পর আমার শরীরিক কিছু সমস্যা হয়েছিল। সব সময় ফিট থাকতে চাই। কিন্তু পারছিলাম না। তার পর র‌্যাবডোমায়োলাইসিস নামে একটি অসুখ ধরা পড়ে আমার। এই অসুখে শরীরের পেশিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। সেই সময় আমি টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখছি। নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি। ভারত ‘এ’ দলে সুযোগ পাচ্ছি। বিভিন্ন প্রস্ততি শিবিরে যোগ দিচ্ছি। সে সময়ই সমস্যাটা ধরা পড়ে।’’

তিলক জানিয়েছেন, জিমে প্রচুর সময় কাটিয়ে নিজেই সমস্যা ডেকে এনেছিলেন। তরুণ ব্যাটার বলেছেন, ‘‘সব সময় ফিটনেস বৃদ্ধির কথা ভাবতাম। বিশ্রামের দিনেও জিমে চলে যেতাম। লক্ষ্য ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ফিট প্লেয়ার এবং দুর্দান্ত ফিল্ডার হওয়া। তাই সমস্যা হলেও শুরুর দিকে সমাধানের কথা ভাবিনি। আইস বাথ নিতাম। কিন্তু শরীরকে বিশ্রামের যথেষ্ট সময় দিতাম না। শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন। সে সব মানতাম না। যত বেশি সম্ভব পরিশ্রম করার কথা ভাবতাম। ফলে আমার পেশিগুলোর উপর অত্যধিক চাপ পড়ত। ক্রমশ সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। পাশাপাশি শিরাগুলোও শক্ত হয়ে যাচ্ছিল।’’ তিলক আরও বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে ‘এ’ দলের হয়ে সিরিজ় খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। একটা ম্যাচে শতরানের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। সে সময় হঠাৎ আমার চোখ থেকে জল বেরোতে শুরু করল। হাতের আঙুলগুলো ঠিকমতো নাড়াতে পারছিলাম না। সব কিছু খুব কঠিন লাগছিল। নড়াচড়া করতে সমস্যা হচ্ছিল। নিজেকে পাথরের মতো লাগছিল। শতরান মাঠে ফেলে উঠে যেতে হয়েছিল। আঙুল শক্ত হয়ে যাওয়ায় গ্লাভসও খোলা যাচ্ছিল না। কেটে গ্লাভস খুলতে হয়েছিল। সেই কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছিলাম আকাশ অম্বানীকে।’’

কী ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অন্যতম কর্ণধার? তিলক বলেছেন, ‘‘অসুস্থ হয়ে পড়ার কিছু ক্ষণ পরেই আকাশের ফোন পেয়েছিলাম। উনি বিসিসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর সক্রিয়তায় উপকৃত হয়েছিলাম। জয় শাহ স্যরের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন, কয়েক ঘণ্টা দেরি হলেও পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে যেতে পারত। সে সময় আইভি লাইনের সুচও পেশির মধ্যে ঢুকছিল না। বার বার সুচ ভেঙে যাচ্ছিল। পরিস্থিতি সত্যিই খুব জটিল হয়ে গিয়েছিল। মা সারা ক্ষণ হাসপাতালে আমার সঙ্গে ছিলেন।’’

অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েক মাস খেলতে পারেননি। ২০২৩ সালের আইপিএলের কিছু দিন আগে অনুশীলন শুরু করতে পেরেছিলেন হায়দরাবাদের ক্রিকেটার। সে বার আইপিএল নিজের প্রথম ম্যাচেই মুম্বইয়ের হয়ে ৪৬ বলে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। এখন ট্রেনারদের নির্দেশ মেনে চলেন তিলক। ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত কিছু করার চেষ্টা করেন না আর।

BCCI Mumbai Indians Jay Shah Akash Ambani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy