ঘোষণা করা হল ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ়ের জন্য ভারতের টেস্ট দল। প্রত্যাশামতোই দলের অধিনায়ক শুভমন গিল। প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখা হল না বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণকে। নেই বাংলার আর এক ক্রিকেটার আকাশ দীপও। সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে রবীন্দ্র জাডেজাকে।
ঘোষিত ১৫ জনের দলে রয়েছেন: শুভমন (অধিনায়ক), জাডেজা (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদত্ত পাড়িক্কল, ধ্রুব জুরেল (উইকেটকিপার), ওয়াশিংটন সুন্দর, জসপ্রীত বুমরাহ, অক্ষর পটেল, নীতীশ কুমার রেড্ডি, নারায়ণ জগদীশন (উইকেটকিপার), মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ এবং কুলদীপ যাদব।
দলে দুই ক্রিকেটারের প্রত্যাবর্তন হয়েছে। তাঁরা হলেন দেবদত্ত পাড়িক্কল এবং নীতীশ কুমার রেড্ডি। অস্ট্রেলিয়া সফরে দলে ছিলেন পাড়িক্কল। ইংল্যান্ড সিরিজ়ে চোটের জন্য খেলতে পারেননি। এই মুহূর্তে মিডল অর্ডারে খেলার পক্ষে উপযুক্ত তিনি।
করুণ নায়ারকে নিয়ে মোহভঙ্গ হয়েছে নির্বাচকদের। ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করলেও ইংল্যান্ডে গিয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থ তিনি। একটি অর্ধশতরান ছাড়া কিছুই করতে পারেননি। একই ভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভাবে রান করা সরফরাজ় খানকেও বাদ দেওয়া হয়েছে। আপাতত পাড়িক্কলের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন নির্বাচকেরা।
নীতীশকে ফেরানো হয়েছে তাঁর অলরাউন্ড দক্ষতার কথা ভেবে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে খারাপ খেলেননি। ভারতে ঘূর্ণি পিচে তাঁর মাঝারি গতির বোলিং কাজে লাগতে পারে।
অভিমন্যুকে বাদ দেওয়া এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ়ের দল ঘোষণার আগে ইরানি কাপের দল জানানো হয়েছিল। সেখানে নাম ছিল অভিমন্যু ও আকাশ দীপের। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ়ে নেওয়া হবে না তাঁকে। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ় এবং ইরানি কাপ এক দিনের তফাতে শুরু হচ্ছে। এত দিন ভারতের রিজ়ার্ভ বেঞ্চে থেকেও মূল দলে সুযোগ পাননি। এ বার দলেই নেওয়া হল না অভিমন্যুকে।
আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় জাডেজার সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া। রোহিত চলে যাওয়ার পর বুমরাহকে টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। শেষমেশ দায়িত্ব পান শুভমন। ইংল্যান্ড সিরিজ়ে ঋষভ পন্থ সহ-অধিনায়ক ছিলেন। এ বার তিনি দলে নেই চোটের কারণে। তাই দায়িত্ব পেয়েছেন জাডেজা।
বুমরাহকে বিশ্রামও দেওয়া হল না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তাঁর ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ভাবনাচিন্তার কথা জানিয়েছিল বোর্ড। তবু ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের মতো অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিরুদ্ধে সিরিজ়ে নেওয়া হয়েছে বুমরাহকে। এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠেছে ভারত। ফলে ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ফাইনাল খেলেই চার দিনের মধ্যে অহমদাবাদে টেস্ট খেলতে নামবেন বুমরাহ। বিশ্রামের সুযোগ প্রায় নেই-ই।
তবে একাংশের ধারণা, বুমরাহকে প্রথম টেস্টে বিশ্রাম দেওয়া হবে। সিরাজের সঙ্গে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে খেলানো হতে পারে। ঘরের মাঠে যেহেতু স্পিনারেরাই কার্যকর ভূমিকা নেন, তাই হয়তো দুই পেসারের বেশি খেলাতে চাইবে না ভারত। জাডেজার সঙ্গে ওয়াশিংটন সুন্দর এবং কুলদীপ যাদব তিন স্পিনারের দায়িত্ব সামলাবেন।
আরও পড়ুন:
নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ় ২-২ ড্র করেছে ভারতীয় দল। তার পর দ্বিতীয় টেস্ট সিরিজ় খেলতে চলেছে তারা। ২ অক্টোবর থেকে অহমদাবাদে শুরু প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ১০-১৪ অক্টোবর, দিল্লিতে।
উল্লেখ্য, শেষ বার ১৯৮৩-তে ভারতে এসে টেস্ট সিরিজ় জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। সে বার অধিনায়ক ছিলেন ক্লাইভ লয়েড। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। ভারত চারটি টেস্ট সিরিজ় জিতেছে তার পর। ১৯৮৭ এবং ১৯৯৪ সিরিজ় ড্র হয়েছিল। ২০১৩-য় এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ় খেলে অবসর নিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ইতিমধ্যেই দল ঘোষণা করে দিয়েছে। নেতৃত্ব দেবেন রস্টন চেজ়। বাকি সদস্যেরা হলেন জোমেল ওয়ারিকান (সহ-অধিনায়ক), কেভলন অ্যান্ডারসন, অ্যালিক অ্যাথানেজ়, জন ক্যাম্পবেল, তেজনারাইন চন্দ্রপল, জাস্টিন গ্রিভস, শাই হোপ, টেভিন ইলমাচ, আলজারি জোসেফ, শামার জোসেফ, ব্র্যান্ডন কিং, অ্যান্ডারসন ফিলিপ, খারি পিয়ের এবং জেডেন সিলস।