অম্বরীশ মিত্রের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার জবাব জমা পড়ল সিএবি-তে। তবে অম্বরীশ নিজে কোনও উত্তর দেননি। বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার দফতরে চিঠি দিয়েছেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। অম্বরীশের সঙ্গে যে বিতর্কিত চ্যাট প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে এই আজহারউদ্দিনের নাম রয়েছে।
অম্বরীশ সিএবি-র স্টেডিয়াম কমিটি এবং বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগ কমিটির সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে এ রাজ্যের উঠতি ক্রিকেটারদের থেকে টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবী সুমন কীর্তনিয়া। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) দেখা যাচ্ছে, আজহারউদ্দিনকে টাকা তোলার কথা বলছেন অম্বরীশ। আজহারউদ্দিন সিএবি-কে দেওয়া জবাবে এই টাকা তোলার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, উঠতি ক্রিকেটারদের যাতে জার্সি, খাবার এবং অনুশীলনের যথাযথ সুযোগ পেতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই জন্যই তাঁরা টাকা তুলেছেন।
সিএবি-র ওমবুড্সম্যান, সভাপতি এবং সচিবকে লেখা দু’পাতার জবাবে (যা হাতে রয়েছে আনন্দবাজার ডট কমের) আজহারউদ্দিন নিজেকে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বলেছেন, এখন তিনি সিএবি-র সঙ্গে যুক্ত থেকে ক্রিকেটের উন্নতিতে কাজ করছেন। অম্বরীশের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
মোট ১০ পয়েন্টের জবাবের তৃতীয় পয়েন্টে আজহারউদ্দিন লিখেছেন, গত কয়েক বছর ধরে তিনি এবং অম্বরীশ যত রকম ভাবে সম্ভব, ক্রিকেটের সেবা করার চেষ্টা করেছেন। সেটা করতে গিয়ে আরও নানা কাজের সঙ্গে টাকাও তুলেছেন। সেখানেই তিনি লিখেছেন, উঠতি দরিদ্র ক্রিকেটারেরা যাতে জার্সি, খাবার এবং অনুশীলনের যথাযথ সুযোগ পায়, সেই জন্যই তাঁরা টাকা তুলেছেন।
অম্বরীশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগে কলকাতা ময়দানের হাই কোর্ট ক্লাবের নাম উঠেছে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আজহারউদ্দিন জানিয়েছেন, গত ক্রিকেট মরসুমে এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অম্বরীশ। হাই কোর্ট ক্লাবের ক্রিকেট সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে উন্নতি হয়, সেই কারণেই তাঁরা দু’জন টাকা তুলেছেন এবং ক্লাবকে তা দিয়েছেন। এই টাকা অম্বরীশের জন্য নয়, দেবনিক দাসের (এঁর নামও চ্যাটে রয়েছে) জন্যও নয়।
আজহারউদ্দিনের ব্যাখ্যা, তিনি যে টাকা তুলেছেন, তা অনলাইনে অম্বরীশের অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এই সংক্রান্ত সাতটি আর্থিক লেনদেনের উল্লেখ রয়েছে। সেগুলি হল, ৫০,০০০ টাকা (৩০ অগস্ট, ২০২৪), ৫০,০০০ টাকা (৩১ অগস্ট, ২০২৪), ৪০,০০০ টাকা (৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪), ৫০,০০০ টাকা (১৬ অক্টোবর, ২০২৪), ৪৯,০০০ টাকা (৭ নভেম্বর, ২০২৪), ১ টাকা (৭ নভেম্বর, ২০২৪) এবং ৪০,০০০ টাকা (তারিখ উল্লেখ নেই)।
চিঠির শেষে আজহারউদ্দিন লিখেছেন, তাঁর এবং অম্বরীশের ব্যাক্তিগত কথোপকথন প্রকাশ্যে আসায় তিনি অবাক। তাঁর বক্তব্য, ময়দানের অধিকাংশ ক্লাব এ ভাবেই অনুদানের উপর নির্ভর করে চলে। এটা দুর্নীতি হিসেবে দেখানোয় তিনি বিস্মিত।
সিএবি-র আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভার কথা উল্লেখ করে আজহারউদ্দিন বলেছেন, ‘‘সেপ্টেম্বরে যে সিএবি-র এজিএম আছে সেটা আমি জানি। তার আগে আমার এবং অম্বরীশ মিত্রের ভাবমূর্তিতে কালি লাগানোর জন্য এই অভিযোগ করা হয়েছে। অম্বরীশের সততা এবং সদিচ্ছা নিয়ে আমার কোনও সংশয় নেই। সিএবি-র কাছে আমার অনুরোধ, ওঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করা হোক।’’