রাতারাতি খবরের শিরোনামে মণীশ বিসি ও তাঁর বন্ধু খেমরাজ। রজত পাটীদারের সিম তাঁর নামে নথিভুক্ত হওয়ায় বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন ছত্তীশগঢ়ের মুদির দোকানি। কথা বলেছেন তাঁর বন্ধুও। সেই অভিজ্ঞতা ভুলতে পারছেন না তাঁরা। কোহলির সঙ্গে যে কথা হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা।
শুধু কোহলি নন, এবি ডিভিলিয়ার্স, যশ দয়াল ও পাটীদারের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁদের। সেই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থাকে মণীশ বলেন, “আমি কোনও দিন স্বপ্নেও ভাবিনি যে, বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলতে পারব। সেটাও আবার আমাদের গ্রামে বসে। ডিভিলিয়ার্স ফোন করে ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। আমরা কিছুই বুঝিনি। কিন্তু খুব আনন্দ হয়েছে।”
মণীশের পাশাপাশি খেমরাজেরও কথা হয়েছে কোহলি, ডিভিলিয়ার্সদের সঙ্গে। তিনি বলেন, “মণীশ যখন কিছু বলতে পারছিল না তখন আমাকে ফোন ধরিয়ে দিচ্ছিল। ওঁরা জিজ্ঞাসা করছিলেন, কেন আমরা রজত পাটীদারের সিম ব্যবহার করছি। আমরা বোঝাচ্ছিলাম যে, নতুন সিম কিনেছি। এটা আমাদেরই নম্বর।”
ছত্তীশগঢ়ের গারিয়াবন্দ জেলার দেবভোগ গ্রামের একটি দোকানের মালিক মণীশ বুঝতেও পারেননি তাঁর জীবনে এমন দিন আসবে। রাতারাতি তিনি খ্যাতনামী হয়ে গিয়েছিলেন। আবার বাস্তবের মাটিতে ফিরেছেন। ঘটনার সূত্রপাত ২৮ জুন। স্থানীয় দোকান থেকে একটা সিমকার্ড কিনেছিলেন মণীশ। মোবাইলে সিম ভরে হোয়াট্সঅ্যাপ ইনস্টল করতেই সেখানে দেখা যায় পাটীদারের ছবি। মণীশ এবং তাঁর বন্ধু খেমরাজ ভেবেছিলেন, বিষয়টা নেহাতই মজার। এর পরেই একের পর এক ফোন আসা শুরু হয়। কেউ নিজেকে বিরাট কোহলি, কেউ এবি ডিভিলিয়ার্স বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
মণীশ এবং খেমরাজও মজা পেয়ে যান। তাঁরা পাল্টা নিজেদের ‘মহেন্দ্র সিংহ ধোনি’ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। ১৫ জুলাই অপরিচিত একটা নম্বর থেকে ফোন পান মণীশ। উল্টো প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বলেন, “ভাই, আমি রজত পাটীদার। এই নম্বরটা আমার। দয়া করে ফেরত দিন।” তখনও মণীশ মজা করে বলেন, “আমি এমএস ধোনি।” ওই ব্যক্তি বার বার বোঝালেও লাভ হয়নি। শেষে তিনি জানান, পুলিশে অভিযোগ করবেন। দশ মিনিটের মধ্যেই মণীশের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। বোঝা যায়, উল্টো প্রান্তে থাকা ব্যক্তি সত্যি করেই পাটীদার ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সিম কার্ড ফিরিয়ে দেন মণীশ।
আসলে কোনও সিম কার্ড ৯০ দিন ধরে নিষ্ক্রিয় থাকলে তা অন্য কাউকে দিয়ে দেয় মোবাইল অপারেটর সংস্থাগুলো। পাটীদারের ক্ষেত্রেও তেমনটা হয়েছে। তবে এখন নিজের নম্বর ফেরত পেয়েছেন তিনি। মণীশের যে হেতু কোনও দোষ নেই তাই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে পুরো ঘটনায় রাতারাতি নিজের গ্রামে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন মণীশ ও খেমরাজ।