কখনও ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। কখনও কোচিং করাচ্ছেন। আবার কখনও খেলতে চলে যাচ্ছেন। ৪০ বছর বয়সেও ব্যস্ত দীনেশ কার্তিক। এ বার ইন্টারন্যাশনাল টি২০ লিগের দল শারজা ওয়ারিয়র্সে যোগ দিয়েছেন তিনি। লিগ ক্রিকেটে এটি কার্তিকের অষ্টম দল।
আইপিএলে ছ’টি দলের হয়ে খেলেছেন কার্তিক। ২০০৮ সালে শুরু করেছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। পরের ১৬ বছরে খেলেছেন পঞ্জাব কিংস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, গুজরাত লায়ন্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে। কেকেআরের অধিনায়কত্ব করেছেন। মুম্বইয়ের হয়ে আইপিএলও জিতেছেন।
ভারতের লিগ ছাড়া আরও দুই দেশের লিগে নাম লিখিয়েছেন কার্তিক। চলতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকার টি২০ লিগে পার্ল রয়্যালসের হয়ে খেলেছেন তিন। এ বার নাম লেখালেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির লিগে।
নতুন দলে নাম লিখিয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কার্তিকের। তিনি বলেছেন, “ইন্টারন্যাশনাল টি২০ লিগে শারজা ওয়ারিয়র্সে যোগ দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। ওদের দলে বেশির ভাগই তরুণ ক্রিকেটার। সেখানে আমি যোগ দিয়েছি। আশা করছি, আমার অভিজ্ঞতা ওদের কাজে লাগবে। শারজার মাঠে আমি বরাবর খেলার স্বপ্ন দেখতাম। সেই স্বপ্ন এ বার সত্যি হতে চলেছে।”
২০২২ সালে শেষ ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন কার্তিক। তার পর দু’বছর সুযোগ না পেয়ে ২০২৪ সালে ভারতের হয়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। আইপিএল থেকেও। চলতি বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং কোচ ছিলেন কার্তিক। ক্রিকেটার হিসাবে না হলেও কোচ হিসাবে আরসিবি-কে আইপিএল জিতিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ক্রিকেটার ও কোচের পাশাপাশি আরও এক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে কার্তিককে। ২০১৯ সালে ভারত-ইংল্যান্ড এক দিনের ও টি২০ সিরিজ়ে প্রথম বার ধারাভাষ্যকার হিসাবে দেখা যায় তাঁকে। দ্য হান্ড্রেড লিগে ধারাভাষ্য দিয়েছেন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা সিরিজ়েও তাঁকে মাইক্রোফোন হাতে দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, এমন একটা সময়ে কার্তিক ধারাভাষ্য দিয়েছেন, যখন তিনি অবসর নেননি। ২০২১ সালে শেষ বার ধারাভাষ্যকার হিসাবে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরের বছর আবার ভারতের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। এ বারের এশিয়া কাপে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে কার্তিককে।
কার্তিক যে দলে যোগ দিয়েছেন, সেই দলের কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার জেপি ডুমিনি। ২০০৭ সালে দু’জনেই নিজের নিজের দেশের হয়ে টি২০ বিশ্বকাপে খেলেছেন। আবার গত মরসুমে আরসিবি-তে যে টিম ডেভিডের তিনি কোচ ছিলেন, সেই ডেভিডের সতীর্থ হিসাবে শারজার দলে খেলবেন তিনি। অর্থাৎ, কোচ-সতীর্থ সব ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে কার্তিককে।
কেরিয়ারে ৪১২ টি২০ ম্যাচ খেলেছেন কার্তিক। ৩৬৪ ইনিংসে ৭৪৩৭ রান করেছেন। ৩৫টি অর্ধশতরান করেছেন। ৬০টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচে ৬৮৬ রান করেছেন কার্তিক। সম্প্রতি হংকং সিক্সেস প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলের অধিনায়ক হয়েছেন তিনি। সেখানে সতীর্থ হিসাবে ভারতের আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পাবেন তিনি। কোচ ও ধারাভাষ্যকার হওয়ার পরেও খেলা ছাড়ছেন না কার্তিক। যেখানে সুযোগ পাচ্ছেন খেলতে চলে যাচ্ছেন। বোঝা যাচ্ছে, এখনও কতটা খিদে রয়েছে তাঁর মধ্যে। ৪০ বছরের কার্তিককে থামানো যাচ্ছে না।