গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হয়েছে। তাতে অন্তত ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার দায় পাকিস্তানের উপর চাপিয়েছে ভারত। সীমান্ত উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটেও। এ বার ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মধ্যে লেগে গিয়েছে। হামলার পর এশিয়া কাপে পাকিস্তানের খেলা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন সুনীল গাওস্কর। তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটারেরা।
চলতি বছর ভারত ও শ্রীলঙ্কায় রয়েছে এশিয়া কাপ। এই পরিস্থিতিতে সেই প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানকে তিনি দেখছেন না বলে জানিয়েছেন গাওস্কর। তাঁর এই কথা মানতে পারেননি পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক জাভেদ মিঁয়াদাদ। তিনি বলেন, “আমি ভাবতেই পারছি না সানিভাই এই কথা বলেছেন। ওঁকে সকলে সম্মান করে। উনি মাটিতে পা দিয়ে চলেন। রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকেন। ওঁর এই মন্তব্য করা উচিত হয়নি। এতে ওঁরই সম্মানহানি হয়েছে।”
পাকিস্তানের প্রাক্তন স্পিনার ইকবাল কাসিমের মতে, পাকিস্তানেও গাওস্করের অনেক ভক্ত রয়েছেন। তাঁরা এই মন্তব্যে দুঃখ পেয়েছেন। তিনি বলেন, “সীমান্তের দু’পারে গাওস্করের ভক্ত রয়েছে। তাদের অনেকেই দুঃখ পেয়েছে। রাজনীতিকে কখনওই খেলার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া উচিত নয়। সানিভাইয়ের উচিত হয়নি এই ধরনের মন্তব্য করা।”
গলার সুর অনেকটা চড়িয়েছেন পাকিস্তানের আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার বাসিত আলি। তিনি বলেন, “গাওস্কর নির্বোধের মতো কথা বলেছেন। আগে তদন্ত হোক। তা হলেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ ভাবে আগে থেকে কিছু বলা উচিত নয়। ক্রিকেটে রাজনীতি ঢোকানো উচিত নয়।” পাকিস্তানের সব প্রাক্তন ক্রিকেটারই খেলা ও ক্রিকেটকে আলাদা রাখার কথা বলেছেন। কিন্তু গাওস্করের মতে, দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে পদক্ষেপ করা উচিত ক্রিকেট বোর্ডের।
আরও পড়ুন:
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর এক সাক্ষাৎকারে গাওস্কর বলেন, ‘‘বিসিসিআই সব সময় ভারত সরকারের কথামতো অবস্থান নেয়। আমার মনে হয় না এশিয়া কাপের ক্ষেত্রে আলাদা কিছু হবে। ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যৌথ ভাবে আগামী এশিয়া কাপ আয়োজন করবে। তাই সবটাই নির্ভর করবে, পরিস্থিতি কেমন থাকবে তার উপর। এখনকার পরিস্থিতির যদি পরিবর্তন না হয়, তা হলে আমি অন্তত এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে দেখছি না।’’
আরও এক ধাপ এগিয়ে গাওস্কর এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এর পর কী হবে জানি না। হয়তো এসিসি ভেঙে দেওয়া হবে। তিনটি দেশকে নিয়েই হয়তো খেলা হবে। এর সঙ্গে হয়তো হংকং এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আগামী কয়েক মাসের পরিস্থিতির উপর সব কিছু নির্ভর করবে। এসিসি ভেঙে গেলে আমি অন্তত অবাক হব না। দু’টি দেশ পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করলে একসঙ্গে খেলা একটু সমস্যার হয়।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এমনও হতে পারে ভারতই এসিসি থেকে বেরিয়ে এল। চারটি বা পাঁচটি দেশকে নিয়ে প্রতিযোগিতা হল। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অন্য একটি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হল। বাংলাদেশ বা শ্রীলঙ্কা আয়োজক হলে হয়তো অন্য রকম হতে পারত। কিন্তু এ বারের প্রতিযোগিতার আয়োজক ভারত। ভারতই আয়োজন করবে।’’