বিশ্বকাপ জয়ের পর দু’সপ্তাহও কাটেনি। তার মধ্যেই হরমনপ্রীত কৌরের মনে হচ্ছে, এ বার বোর্ডের সঙ্গে তাঁদের বার্ষিক চুক্তির অঙ্ক ছেলেদের সমান হবে। যদি পুরোপুরি সমান না-ও হয়, তা হলে টাকার অঙ্ক অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়েছেন, ফাইনালের ওই ক্যাচ তিনি ১০০০ বার দেখেছেন।
বোর্ডের সঙ্গে বার্ষিক চুক্তিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা পুরুষ ক্রিকেটারেরা পান বছরে সাত কোটি টাকা। মহিলাদের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্ক ৫০ লক্ষ। হরমনের মতে, এই পরিমাণ এ বার বাড়বে। সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “এ বার অর্থ বদলাবে। ২০১৭-র (ভারতের ফাইনালে ওঠা) পর অনেক কিছু বদলে গিয়েছিল। তার আগে আমাদের বার্ষিক চুক্তি ছিল ১৫ লক্ষ টাকার।”
হরমনপ্রীতের মতে, পুরুষদের ক্রিকেট থেকেই আসল লাভটা আসে। তবে যে হেতু তারা আইসিসি ট্রফি জিতেছেন, তাই পরিস্থিতি মহিলাদের ক্রিকেটেও বদলাবে। কারণ বিশ্বকাপ জিতে মহিলা ক্রিকেটারদের বাণিজ্যিক মূল্য বেড়েছে।
হরমনের কথায়, “২০১৭ থেকে আমরা ৫০ লক্ষ টাকা পাই। তার পর নিজেদের প্রমাণ করতে পারিনি। বিশেষ করে আইসিসি প্রতিযোগিতায়। দিনের শেষে আইসিসি প্রতিযোগিতাই আসল। এই ট্রফিটা জেতার পর আমি নিশ্চিত অনেক উন্নতি হবে। আর্থিক ভাবেও আমরা লাভবান হব। এর আগে সব লাভ আসত ছেলেদের ক্রিকেট থেকেই। বোর্ডের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে সবচেয়ে দরকারের সময়ই ওরা মহিলাদের ক্রিকেটের পাশে দাঁড়িয়েছে।”
আরও পড়ুন:
হরমনপ্রীত জানতেন যে ভাল পারফরম্যান্স করতে পারলে তবেই তাঁরা ছেলেদের সমান অর্থের দাবি করতে পারবেন। সেই চেষ্টাই করেছেন তাঁরা। হরমনের কথায়, “একটা জিনিস আমরা আগে থেকেই জানতাম। দেশের হয়ে অবদান রাখতে হবে। তা হলেই নিজেদের বলার জায়গাটা থাকবে। এখন আমরা সমান বেতন এবং সমান স্বীকৃতির কথাটা বলতে পারি। বছরের পর বছর ধরে ছেলেদের ক্রিকেটে অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশের হয়ে পর পর ট্রফি জিতেছে। ওদের বাণিজ্যিক মূল্য আমাদের চেয়ে বেশি হয়ে থাকলে তার নিশ্চয়ই কোনও কারণ রয়েছে।”
ফাইনালে লাফিয়ে ক্যাচ ধরে নাদিন ডি’ক্লার্ককে আউট করে দলকে ট্রফি জিতিয়েছিলেন হরমন। সেই ক্যাচের প্রসঙ্গ উঠতেই উচ্ছ্বসিত তিনি। বলেছেন, “আমার জীবন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। হাজার বারের বেশি ওই শেষ বলের ভিডিয়ো দেখেছি। শুধু আমি নয়, গোটা দল এই মুহূর্ত অনেক দিন মনে রাখবে। বার বার ওই মুহূর্তটা দেখতে ইচ্ছা করে।”
হরমনের সংযোজন, “আমি জানি না ক্যাচ নেওয়ার সময় কী ভাবছিলাম। ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। বরাবর বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছি। ওই ক্যাচ আমাদের কাছে সব কিছু। শেষ পর্যন্ত সেটা করেছি। খুব বিশেষ অনুভূতি।”