মাত্র কয়েক মাস আগেই চলে গিয়েছিলেন শেন ওয়ার্ন। এ বার চলে গেলেন তাঁর এক সময়ের প্রিয় সতীর্থ অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসও। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে হারাল দুই নক্ষত্রকে। সাইমন্ডসের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো ধামাচাপা পড়ল সেই কুখ্যাত ‘মাঙ্কিগেট’ বিতর্ক। ২০০৮ থেকে শুরু হয়ে যা নিয়ে আলোচনা এখনও টাটকা। সেই কেলেঙ্কারিতে এক দিকে ছিলেন ভারতের হরভজন সিংহ। আর এক দিকে ছিলেন সাইমন্ডস। ওই ঘটনার পর থেকে বহু বার বহু জায়গায় দু’জনেই মুখ খুলেছেন। বিতর্ক তখনকার মতো মীমাংসা হলেও, তার রেশ থেকে গিয়েছে আজও। অনেকেই বিশ্বাস করেন, মাঙ্কিগেট-বিতর্কই সাইমন্ডসের ক্রিকেটজীবন শেষ করে দেয়।
কী হয়েছিল সেই মাঙ্কিগেট বিতর্কে? ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। এই দুই দেশের খেলা মানে তা যে বিতর্কহীন ভাবে শেষ হবে, সেটা ভাবাও ভুল। সেই ম্যাচেও হয়নি। আম্পায়ার স্টিভ বাকনরের একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। এমন সময় হরভজনের একটি মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে অস্ট্রেলিয়া শিবির। তারা অভিযোগ জানায়, সাইমন্ডসের উদ্দেশে একটি বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন হরভজন।
ওই ম্যাচে সাইমন্ডসের বিরুদ্ধে দু’টি ভুল সিদ্ধান্ত দেন বাকনর। গোটা ম্যাচে এমন অনেক ভুল সিদ্ধান্ত দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে চারশোর বেশি রান তুলেছিল। তবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের দাবি, বাকনরের ভুল সিদ্ধান্ত না হলে তিনশোর কমে আটকে রাখা যেত অস্ট্রেলিয়াকে। ব্যাট করতে নেমে পাল্টা লড়াই দেয় ভারতও। সচিন তেন্ডুলকর এবং ভিভিএস লক্ষ্মণের শতরান এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অর্ধশতরানে তারা লিড নিয়েছিল। ভারতের স্কোর যখন ৪৫১-৭, তখনই এই ঘটনা ঘটে।
হরভজনকে একের পর এক বাউন্সার দিচ্ছিলেন ব্রেট লি। এমন সময় ক্রিজের অন্য প্রান্তে গিয়ে সাইমন্ডসকে একটি প্রচলিত উত্তর ভারতীয় গালি দেন হরভজন। সাইমন্ডস প্রথম বুঝতে পারেননি। পরে জানতে পারেন যে তাঁকে ‘বাঁদর’ বলা হয়েছে। দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেই ঝামেলা লেগে যায়। কথা-কাটাকাটি হতে থাকে। বিষয়টিতে ইন্ধন দেন আম্পায়ার মার্ক বেনসন। তিনি হরভজনকে কড়া কথা বলেন। হরভজন নিজে অবাক হয়ে যান। সেই দৃশ্য এখনও খুঁজলে ইউটিউবে পাওয়া যাবে। এর পর সাইমন্ডস সরকারি ভাবে অপর আম্পায়ারকে অভিযোগ জানান। আম্পায়ার বাকনরও সেই অভিযোগ মেনে নেন। সাইমন্ডসের সতীর্থ রিকি পন্টিং এবং ম্যাথু হেডেন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে বিষয়টি সম্পূর্ণ অন্য মাত্রা পেয়ে যায়।