হুঙ্কার: পুজারাকে আউট করে তাঁর ঘাড়ের উপর এসেই উল্লাস প্রকাশ করে গেলেন অলিভিয়ের। ছবি রয়টার্স।
দুপুরে টস হওয়ার সময় টিভিতে চোখ পড়তেই চমকে উঠলাম। জোহানেসবার্গে কে এল রাহুল নামছে ডিন এলগারের সঙ্গে। বিরাট কোহলি তার মানে খেলছে না! বোর্ডের সঙ্গে নতুন কোনও ঝামেলা না অন্য কিছু? একটু পরেই অবশ্য উত্তরটা পেয়ে গেলাম। পিঠের সমস্যায় নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে বিরাট!
ওয়ান্ডারার্স এমনিতেই বিরাটের কাছে পয়া মাঠ। এই মাঠে সেঞ্চুরি আছে ওর। ভারতের টেস্ট অধিনায়কের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে না পারাটা কিন্তু বড় ধাক্কা হয়ে থাকল ভারতের কাছে। শুধু যে ব্যাটিং দুর্বল হয়ে গেল, তা তো নয়। অধিনায়ক বিরাটের সেই আগ্রাসী মেজাজটাও ভারত পেল না ফিল্ডিংয়ের সময়। যা দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে রাখতে পারত। এই টেস্টে অল্প রানের লড়াই হবে। সেখানে বিরাটের মতো আগ্রাসী অধিনায়ককে খুবই প্রয়োজন।
ভারতের মাঝের সারির ব্যাটিং নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে। বিরাটের জায়গায় নামা হনুমা বিহারী খারাপ খেলছিল না। কিন্তু কাগিসো রাবাডার একটা শর্ট বল ছিটকে উঠে বিহারীর ব্যাটের হাতলে লেগে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগের দিকে যায়। শরীর পিছনে ছুড়ে দিয়ে অসাধারণ একটা ক্যাচ নিল র্যাসি ফান ডার ডুসেন। কিন্তু দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের কী হাল হল? গত দু’বছর ধরে ব্যর্থ হয়ে চলেছে চেতেশ্বর পুজারা আর অজিঙ্ক রাহানে। নাম আর রেকর্ডের ভিত্তিতে একটা সময় পর্যন্ত কাউকে টানা চলে। কিন্তু পুজারা-রাহানে সেই সময়সীমাও পেরিয়ে এসেছে। ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চ কিন্তু খারাপ নয়। সেখানে ফর্মে থাকা শ্রেয়স আয়ার আছে। এদের এখন সুযোগ না দেওয়া হলে আর কবে হবে?
পুজারা ৩৩ বলে খেলে তিন রান করল। রাহানে প্রথম বলেই আউট। সবচেয়ে বড় কথা, ওরা কিন্তু দারুণ কিছু বলে আউট হচ্ছে না। পুজারার বলটা প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য একটু বাউন্স করল। ও ব্যাটটা ঠিক সময় উপরে তুলতে পারেনি। ব্যাটের উপরের দিকে লেগে গালিতে ক্যাচ চলে গেল। রাহানের ক্ষেত্রে বলটা সপ্তম স্টাম্পে পড়েছিল। সেই বলটা খেলার জন্য অফস্টাম্পের উপরে চলে এসে খোঁচা দিল। অনায়সে ছেড়ে দেওয়া যেত। একে আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে, তার উপরে অফস্টাম্প কোথায়, সেটা পুরোপুরি ভুলে গিয়েছে রাহানে। তিন-চার-পাঁচ নম্বর ব্যাট ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হলে রান উঠবে কোথা থেকে? তা-ও আর অশ্বিন চালিয়ে খেলে ৫০ বলে ৪৬ রান করায় ভারতের প্রথম ইনিংসের স্কোর ২০২ রানে পৌঁছয়।
সেঞ্চুরিয়নের ওপেনিং জুটির রানটা কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা ওয়ান্ডারার্সে বোঝা যাচ্ছে। এ দিন শুরুটা খারাপ করেনি মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং রাহুল। দু’জনে মিলে প্রথম ঘণ্টা খেলে ৩৬ রান তুলেও দেয়। কিন্তু তার পরেই অফস্টাম্পের বাইরে ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরে যায় মায়াঙ্ক। এর পরে তো শোভাযাত্রা। শুধু অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া রাহুলই দেখাল নতুন বলটা কী ভাবে খেলতে হয়। রাহুলকে দেখে মনে হচ্ছে, ওর প্রিয় বইয়ের নাম— ‘আর্ট অব লিভিং দ্য ক্রিকেট বল’! কী ভাবে অফস্টাম্পের উপরে বল ছাড়তে হয়, সেটা রাহুলের ব্যাটিং দেখে শিখতে হয়। নিখুঁত শট বাছাই, মনঃসংযোগে একশোয় একশো।
যখন আবার বড় রানের দিকে এগোচ্ছিল, তখনই অযথা পুল মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এল। তবে রাহুলকে (৫০) আউট করার কৃতিত্ব অনেকটাই ফিল্ডার রাবাডার। সামনে ঝাঁপিয়ে দারুণ একটা ক্যাচ নিল ডিপ স্কোয়ার লেগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy