টস জেতা-হারা নিয়ে আর ভাবছেন না শুভমন গিল। ম্যাচ জিততে পারলেই খুশি ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে আড়াই দিনে ইনিংস এবং ১৪০ রানে হারিয়ে উঠে নিজের লক্ষ্য পরিষ্কার করে দিলেন তিনি। ব্যাট হাতে দলকে আবার সাহায্য করতে পেরে খুশি রবীন্দ্র জাডেজা। তবে বোলার হিসাবে আরও উন্নতি চান ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার।
টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম ছ’টি টেস্টেই টস হারলেন শুভমন। ম্যাচের পর এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘টসের ফল যাই হোক, ম্যাচ জিততে চাই আমরা। ম্যাচের ফল পক্ষে এলে টস কিছু যায় আসে না। সত্যি বলতে আমরা শুধু ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
অহমদাবাদের প্রথম টেস্টে দলের পারফরম্যান্সে খুশি শুভমন। তৃপ্ত অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমরা একটা নিখুঁত ম্যাচ খেলতে পেরেছি। আমাদের তিন জন শতরান করেছে। ফিল্ডিংও ভাল হয়েছে। আমার কোনও অভিযোগ নেই। পিচ ব্যাট করার জন্য ভালই ছিল। আমরা কয়েক জন ভাল শুরু করেও বড় রান করতে পারিনি। তবু আমি লোকেশ রাহুল, ধ্রুব জুরেল এবং রবীন্দ্র জাডেজার জন্য খুশি।’’
দলে তিন জন স্পিনার। দু’জন জোরে বোলার। এই ধরনের পিচ বোলিং পরিবর্তন করা কতটা কঠিন? শুভমন বলেছেন, ‘‘একসঙ্গে এত জন ভাল স্পিনার দলে থাকলে বোলিং পরিবর্তন করা কঠিন হয়। আবার যথেষ্ট বিকল্প থাকা খারাপ নয়। সবাইকে ঠিক মতো সুযোগ দেওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। তবু ভারতের মাটিতে খেলার মজাই আলাদা। আমাদের দলে এমন কয়েক জন রয়েছে, যারা নিজেরাই পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে। কেউ না কেউ ঠিক দায়িত্ব নিয়ে নেয়।’’
দল নিয়ে শুভমন আরও বলেছেন, ‘‘গত দেড়-দু’বছরে আমাদের দলের একতা অনেক বেড়েছে। ফলে আমরা কঠিন পরিস্থিতিও সহজে সামলাতে পারছি। অধিনায়ক হিসাবে এই বিষয়টা আলাদা তৃপ্তি দিচ্ছে। তবে দল হিসাবে আমরা এখনও শিখছি। যত দিন আমরা শেখার মানসিকতা ধরে রাখতে পারব, তত দিন ব্যাপারটা ইতিবাচক থাকবে।’’
দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েও খুশি নন জাডেজা! ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংসের পাশাপাশি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচের পর তাঁর বক্তব্য, ‘‘উইকেট পেলেও যে ভাবে বল করতে চাইছি, সে ভাবে করতে পারছি না। গত দু’মাস তেমন একটা খেলিনি। ফলে বল করার সুযোগও হয়নি। বোলিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে আমাকে।’’ জাডেজা জানিয়ে দিলেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অভাব অনুভব করেছেন অহমদাবাদ টেস্টে। জাডেজা বলেছেন, ‘‘এই প্রথম দেশের মাটিতে অশ্বিনকে ছাড়া খেললাম আমরা। বল করার সময় মাঝেমাঝে মনে হচ্ছিল, অন্য প্রান্ত থেকে এই বুঝি অশ্বিন বল করবে। কিন্তু তার পরই মনে হচ্ছিল, ও তো অবসর নিয়ে নিয়েছে! তবে সমস্যা হয়নি। কুলদীপ, ওয়াশিংটনেরা খুব ভাল বল করেছে। কুলদীপ যথেষ্ট অভিজ্ঞও।’’ সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব কি নতুন করে উদ্বুদ্ধ করছে আপনাকে? জাডেজা বলেছেন, ‘‘বিষয়টা তেমন কিছু নয়। অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার আমি। বাড়তি দায়িত্ব নিতে সব সময় তৈরি থাকি। অধিনায়ক বা সহ-অধিনায়ক থাকলাম কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটা অধিনায়ক, কোচ এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। ওদের ধন্যবাদ। তবে মাঠে কেউ ভুল করছে মনে হলে সব সময় চেষ্টা করি শুধরে দেওয়ার। প্রয়োজন মনে হলে পরামর্শ দিই। কে কখন আমার কাছে এসে জানতে চাইবে, তার জন্য অপেক্ষা করি না। এই দলে সকলেই অভিজ্ঞ। খুব বেশি পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।’’
আরও পড়ুন:
নিজের বোলিং নিয়ে খুশি না হলেও ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্ট জাডেজা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উপরের দিকে ব্যাট করলে এক রকম ভাবনা থাকে। নীচের দিকে নামলে আর এক রকম ভাবনা থাকে। সঙ্গী যে-ই থাকুক, বড় জুটি তৈরির করার লক্ষ্য থাকে। এই ম্যাচেও জুটি তৈরির চেষ্টা করেছি। রান পেলে সব সময়ই ভাল লাগে।’’ জাডেজা জানিয়েছেন ইংল্যান্ড সফর থেকে ফেরার পর ক্রিকেটীয় ব্যস্ততা না থাকায় ফিটনেসের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সেও গিয়েছিলেন। সেখনে ব্যাটিং এবং ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন। জাডেজা বলেছেন, ‘‘আগে আমি আট বা নয় নম্বরে ব্যাট করতাম। এখন ছ’নম্বরে ব্যাট করি। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংও উপভোগ করছি এখন।