আড়াই দিনেই খেল খতম! প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে ইনিংস এবং ১৪০ রানে হারাল ভারত। দুই ম্যাচের সিরিজ়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন শুভমন গিলরা।
ঘরের স্পিন সহায়ক পিচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের টেস্ট জিততে সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। শুভমনদের সমস্যা পড়তেও হয়নি। তবে অহমদাবাদের ২২ গজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারদের এতটা বেহাল দশা হয়তো প্রত্যাশিত ছিল না। টেস্টের কোনও ইনিংসেই জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদবদের সামনে দাঁড়াতে পারলেন না তেজনারাইন চন্দ্রপাল, ব্র্যান্ডন কিং, সাই হোপেরা।
ম্যাচের তৃতীয় দিন আর ব্যাট করতে নামেনি ভারত। শুক্রবারের ৫ উইকেটে ৪৪৮ রানেই ডিক্লেয়ার করে দেন শুভমন। ২৮৬ রানে এগিয়ে থেকে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামান ভারতীয় দলের অধিনায়ক। অহমদাবাদের ২২ গজে প্রথম দিন থেকেই বল ঘুরেছে। ম্যাচের প্রথম দিন গড়ে বল ঘুরেছে ২.৪ ডিগ্রি। দ্বিতীয় দিন তা বেড়ে হয় ৩.৪ ডিগ্রি। শনিবার সকাল থেকে গড়ে বল ঘুরেছে ৩.৯ ডিগ্রি। সঙ্গে অসমান বাউন্স। বল কখনও হাঁটুর নীচে নেমে গিয়েছে। আবার কখনও লাফিয়ে উঠে বাউন্সারের মতো গিয়েছে! যে ভাবে ইনিংসের৩৩তম ওভারে বুমরাহের বল অ্যালিক অ্যাথানাজ়ের মাথায় লাগে। সমস্যা না হওয়ায় কনকাশন সাব নামাতে হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। যদিও এই ঘটনা আগেই রোস্টন চেজের দলের অর্ধেক ইনিংস নামিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের বোলারেরা। প্রথম টেস্টে জয় নিশ্চিত করেই তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্নভোজ করতে যান রবীন্দ্র জাডেজারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রথম সারির কোনও ব্যাটারই দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। ব্যতিক্রম অ্যাথানাজ়ের ৩৮ রানের ইনিংস। দ্রুত আউট হয়ে যান দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল (১৪) এবং তেজনারাইন চন্দ্রপাল (৮)। চন্দ্রপালের আউটের কৃতিত্ব অবশ্য নীতীশ কুমার রেড্ডির। সিরাজের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে স্কোয়্যার লেগে ক্যাচ তুলে দেন তেজনারাইন। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন ২২ বছরের অলরাউন্ডার। তাঁর ফিল্ডিং এ দিন বার বার নজর কেড়েছে। আর ওই ক্যাচের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। কিং (৫), চেজ (১), হোপেরা (১) পর পর আউট হয়েছেন। জাডেজা, কুলদীপদের স্পিন বুঝতেই পারেননি তাঁরা।
৪৬ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অ্যাথানাজ়ের সঙ্গে জুটি তৈরি করেন জাস্টিন গ্রেভস। ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে তাঁরা তোলেন ৪৬ রান। ক্যারিবিয়ানদের প্রতিরোধ বলতে এটুকুই। অ্যাথানাজ়কে ওয়াশিংটন সুন্দর আউট করার পর ভারতের জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। পরের ওভারেই সিরাজ জোড়া ধাক্কা দেন গ্রেভস (২৫) এবং ওয়ারিকানকে (শূন্য) আউট করে। এর পর বাকিটা ছিল নিয়মরক্ষার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ইনিংসের শেষ দিকে জোহন লেইন (১৪), খারি পেরি (অপরাজিত ১৩), জেডন সিলসদের (২২) আগ্রাসী ব্যাটিং দর্শক মনোরঞ্জনের বেশি কিছু করতে পারেনি। ১৪৬ রানে শেষ হল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের দ্বিতীয় ইনিংস।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় দিনই লোকেশ রাহুল, ধ্রুব জুরেল এবং জাডেজার শতরান কোণঠাসা করে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। সফরকারীদের প্রথম ইনিংসে ১৬২ রানের জবাবে পর্যাপ্ত লিড নিয়ে নেয় ভারতীয় দল। শুক্রবারের পরই শুভমনদের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। শনিবার মাঠে নামার আগেই ভারত ডিক্লেয়ার করে দেওয়ার পর জয়ের অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। শুভমনেরা তাঁদের গোটা দিনও অপেক্ষা করালেন না। ভারতের সফলতম বোলার জাডেজা ৫৪ রানে ৪ উইকেট নিলেন। ৩১ রানে ৩ উইকেট সিরাজের। ২৩ রানে ২ উইকেট কুলদীপের। ১৮ রানে ১ উইকেট নিলেন ওয়াশিংটন।