Advertisement
E-Paper

ছোটদের ভারত-পাক ম‍্যাচে ক‍্যাচ নিয়ে নাটক, বিতর্ক! আম্পায়ারের উপর অসন্তুষ্ট বৈভবরা, ৮ উইকেটে হার সূর্যবংশীদের

সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে পর পর তিন বার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছিল ভারত। রাইজ়িং স্টার এশিয়া কাপে সেই জিনিস দেখা গেল না। পাকিস্তানের হারের কাছে হেরে গেল ভারত। বিতর্ক হল একটি ক্যাচ নিয়ে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:০৩
cricket

ক্যাচ নিয়ে বিতর্কের সময় আম্পায়ারকে ঘিরে ধরেছে ভারতীয় দল। ছবি: সমাজমাধ্যম।

সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে পর পর তিন বার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছিল ভারত। তার পরে আরও বিভিন্ন খেলায় পড়শি দেশকে হারিয়েছে তারা। তবে রবিবার দোহায় রাইজ়িং স্টার এশিয়া কাপে সেই জিনিস দেখা গেল না। পাকিস্তানের হারের কাছে হেরে গেল ভারত। বৈভব সূর্যবংশীর ৪৫ রানের ইনিংস সত্ত্বেও ব্যাটার এবং বোলারদের ব্যর্থতার কারণে হারতে হয়েছে ভারতকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার বাকি থাকতেই ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। জবাব মাজ় সাদাকাতের অর্ধশতরানের জেরে পাকিস্তান জিতল ৮ উইকেট বাকি থাকতেই।

তবে ম্যাচে বিতর্ক তৈরি হল একটি ক্যাচ নিয়ে। দশম ওভারের প্রথম বলে সুযশ শর্মাকে লং অন এলাকা দিয়ে তুলে মেরেছিলেন সাদাকাত। সেই ক্যাচ ধরেন নমন ধীর। টাল সামলাতে না পেরে বাউন্ডারির ও পারে পা দেওয়ার আগেই বল ছুড়ে দেন মাঠের এ পারে। সেই বল ধরেন নেহাল ওয়াধেরা। আম্পায়ারেরা তখনই আউট না দিলেও সাদাকাত সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। প্রায় মিনিট পাঁচেক রিপ্লে দেখার পর নটআউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার।

ভারতীয় ক্রিকেটারেরা এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে যান। মাঠের আম্পায়ারকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদ করতে থাকেন। আম্পায়ার নিজের মতো করে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন। ভারতের ডাগআউটও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে ঘটনায়। সাপোর্ট স্টাফ এবং রিজ়ার্ভ ক্রিকেটারেরা প্রতিবাদ করেন। তাঁদের বোঝান চতুর্থ আম্পায়ার। শেষ পর্যন্ত নট আউটের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। অবাক করা ব্যাপার হল, আম্পায়ার আউট দেননি নমনের পা বাউন্ডারির ও পার ছুঁয়েছে বলে। কিন্তু পাকিস্তানকেও কোনও রান দেননি। এখন দেখার এই ঘটনা নিয়ে ভারত কোনও প্রতিবাদ করে কি না। কারণ যাঁর ক্যাচ নিয়ে বিতর্ক, সেই সাদাকাতই জিতিয়েছেন পাকিস্তানকে।

এই পাকিস্তানের কাছে ভারতের হার লজ্জায় ফেলার মতোই। এশিয়া কাপে খেলা সুফিয়ান মুকিম বাদে পাকিস্তানের আর কেউ এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেননি। সকলেই আনকোরা। তাঁদের কাছে হারতে হয়েছে ভারতের হয়ে খেলে ফেলা ক্রিকেটারদের। এই ভারতীয় দলে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের অনেকে শুধু দেশের হয়ে খেলেননি, আইপিএলেও যথেষ্ট পরিচিত নাম। অধিনায়ক জিতেশ শর্মা দেশের হয়ে খেলেছেন। এ বছর আইপিএল জিতেছেন। সুযশও তাই। এ ছাড়া রমনদীপ সিংহ, নেহাল ওয়াধেরা, আশুতোষ শর্মা, নমন, যশ ঠাকুর দীর্ঘ দিন আইপিএল খেলছেন। আগের ম্যাচে দুর্বল আমিরশাহিকে উড়িয়ে দিলেও পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী ভারতীয় দল।

কাতারের দোহায় টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত। উবেদ শাহের প্রথম বলেই চার মেরে শুরুটা ভাল করে বৈভব। পরের ওভারে শাহিদ আজিজকে একটি চার এবং একটি ছয় মারে। প্রথম তিন ওভারেই ভারতের ২৬ রান উঠে যায়। এর পরেই শুরু হয় উইকেট হারানোর পালা। চতুর্থ ওভারে শাহিদ তুলে নেন প্রিয়াংশ আর্যকে (১০)।

প্রথম ম্যাচে বৈভব যেমন খেলেছিল, তার ধারেকাছেও যায়নি এ দিনের খেলা। বরং কিছুটা ধীরগতিতেই খেলছিল। আসলে রবিবারের পিচ ছিল মন্থর গতির। বল পড়ে ব্যাটে ভাল ভাবে আসছিল না। ফলে বড় শট খেলা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তবু বৈভব চেষ্টা করছিল বড় শট খেলার। সাদ মাসুদ এবং সুফিয়ান মুকিমকে ছয় মারে। সেই মুকিমই দশম ওভারে তুলে নেন ভারতের ওপেনারকে। মুকিম খেলেছিলেন এশিয়া কাপেও। তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভারতকে বড় ধাক্কা দেয় পাকিস্তান। পাঁচটি চার এবং তিনটি ছয়ের সাহায্যে ২৮ বলে ৪৫ করে সাজঘরে ফেরে বৈভব।

বৈভবের আগেই আউট হয়ে যান নমন ধীরও। তিনি ছ’টি চার এবং একটি ছয়ের সাহায্যে ২০ বলে ৩৫ রান করেন। বৈভব ফিরতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ভারতের ইনিংস। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে তারা। পরের দিকে নেমে হর্ষ দুবে (১৯) কিছুটা চেষ্টা করলেও ভারত বড় রান করতে পারেনি। ১৯ ওভারের মধ্যে ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।

এই রান পাকিস্তানের কাছে কঠিন ছিল না। তা ছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা আরও সহজ হয়ে যায়। পাকিস্তানকে দেখে মনে হচ্ছিল তারা আলাদা পিচে ব্যাট করতে নেমেছে। দ্বিতীয় ওভারেই ১৪ রান দেন যশ ঠাকুর। পঞ্চম ওভারে গুরজপনীত সিংহ ১৮ রান দেন। পাকিস্তানের বোলারেরা যেখানে নিয়ন্ত্রিত বল করছিলেন, সেখানে ভারতের বোলারদের লাইন-লেংথের কোনও ঠিক ছিল না। দু’বার ওয়াইড থেকে চার হয়ে যায়।

পাকিস্তানের অর্ধশতরানকারী ব্যাটার মাজ় সাদাকাতের ক্যাচ দু’বার পড়েছে। এক বার ০ রানে, এক বার ৫৩ রানে। শেষ ক্যাচটি খুবই সহজ ছিল, যা ফেলে দেয় বৈভব। তবে দশম ওভারে যে বিতর্ক হয়েছে তা ছাপিয়ে গিয়েছে বাকি সব কিছুকেই। সেই সাদাকাতই ম্যাচ জিতিয়ে দেন। সাতটি চার এবং চারটি ছয়ের সাহায্যে ৪৭ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ভারতের হয়ে একটি করে উইকেট যশ এবং সুযশের।

ACC Mens Asia Cup Rising Stars 2025 Jitesh Sharma Vaibhav Suryavanshi Suyash Sharma
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy